Kingdom:
Animalia |
কৈ
ইংরেজি
Climbing perch।
বাংলা ভিন্ন বানান : কই।
বৈজ্ঞানিক নাম Anabas testudineus
(Bloch, 1792)।
Anabantidae গোত্রের অন্তর্গত এক প্রকার সুস্বাদু মাছ। এটি মিঠা পানির মাছ। সাধারণত নদী, খাল এবং বিল, পুকুর এবং যে কোনো ক্ষুদ্র জলাশয়ে পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে পুকুরে এর চাষ করা হয়।
এর আকার ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। গায়ের চামড়া মোটা ও কালচে তামাটে বর্ণের আঁইশ দ্বারা আবৃত থাকে। পিঠের উপর পাখনা কাঁটাযুক্ত। এদের মাথা শক্ত ও ভোঁতা। এদের কানকে-তে কাঁটা থাকে। এই মাছ কখনো কখনো কানকে-তে ভর করে ডাঙায় বা গাছে উঠে পড়ে। এদের ফুলকা পানি এবং বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করতে পারে। এই কারণে এরা ডাঙ্গাতে দীর্ঘসময় জীবিত থাকতে পারে। কই মাছের এই বায়ু শোষক বিশেষ অঙ্গকে বলা হয় ল্যাবিরিন্থিন অঙ্গ (Labyrinthine organ)। এছাড়া এদের দেহ ঘন আইঁশে আবৃত থাকার কারণে ডাঙ্গাতে এদের শরীর সহজে আর্দ্রতা হারায় না।
কৈ চাষ পদ্ধতি :
বাংলাদেশে দুই ধরনের কৈ মাছ চাষ হয়। এই ধরন দুটি হলো- বাংলাদেশের স্থানীয় কই বা
দেশী কৈ ও থাই কৈ। চাষের ক্ষেত্রে চাষীরা থাই কৈ-কে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। কারণ
প্রতি চার মাসে থাই কৈ-এর বৃদ্ধি যেখানে ৮০ থেকে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত হয় সেখানে দেশী
কৈ-এর বৃদ্ধি হয় মাত্র ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম।
কৈ চাষের জন্য ২০-২৫ শতাংশ আয়তনএবং ১.০-১.৫
মিটার গভীর পুকুর সবচেয়ে উপযোগী। কৈ মাছ পাড় বেয়ে ডাঙায় উঠে আসে। এ্ জন্য একটু খাড়া
পাড়যুক্ত পুকুর হলে ভালো হয়। এছাড়া বাঁশের তৈরি বেড়া বা নাইলনের জাল দিয়ে পুকুরের
চার দিকে বেড়া দিয়ে কৈ চাষ করা হয়। যথাসম্ভব জলজ আগাছা মুক্ত পরিবেশ এই মাছের জন্য
বেশ উপযোগী। পুকুরে প্রতি শতাংশে ১ কেজি চুন প্রয়োগের ৪-৫ দিন পর শতাংশ প্রতি ৮-১০
কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে।
প্রাকৃতিক উৎস বা হ্যাচারী থেকে সুস্থ্য ও সবল পোনা সংগ্রহ করে প্রতি শতাংশে
২৫০-৩০০ টি পোনা মজুদ করা যায়। এরপর মাছের দেহ ওজনের শতকরা ৬-৮ শতাংশে হারে ৩৫-৪০
শতাংশ আমিষযুক্ত সম্পূরক খাবার দিনে ৩ বার দিতে হবে। এ জন্য সকাল, দুপুর ও বিকেলে
দিতে হবে। যথাযথ নিয়মে পরিচর্যা করলে ৬ মাসের মধ্যে কৈ মাছ গড়ে ৪০-৫০ গ্রাম হয়
এবং প্রতি শতাংশে ৮-১০ কেজি উৎপাদন পাওয়া যায়।
সূত্র :
বাংলা বিশ্বকোষ। দ্বিতীয় খণ্ড। নওরোজ কিতাবিস্তান। ডিসেম্বর ১৯৭৫।
বহিঃসংযোগ :
কৈ মাছের কৃত্রিম প্রজনন