অজগর
ছাগল গিলে খেতে পারে এই অর্থে অজগর। বৃহৎ বিষহীন সাপ পরিবারে সদস্য।
সমার্থক শব্দাবলি : অজাগর,
অহীন,
ময়াল,
মহাকাল,
মহোরগ,
শীর।
ইংরেজি : Python
।
kingdom (রাজ্য) |
Animalia | |
Phylum (পর্ব) |
Chordata | |
Subphylum (উপপর্ব) |
Vertebrata | |
Class (শ্রেণি) |
Reptilia | |
Order (বর্গ) |
Squamata | |
suborder (উপবর্গ) |
Serpentes | |
Family (গোত্র) |
Pythonide | |
Genus (গণ) |
Python |
Python গণের সকল প্রজাতির সাধারণ নাম অজগর নামে অভিহিত হয়ে থাকে। এই জাতীয় সাপ আকারে বেশ বড়। এদের মাথা বেশ বড় এবং সম্প্রসারণযোগ্য চোয়াল আছে। শিকারকে কুণ্ডলীর ভিতরে রেখে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করার মতো ক্ষমতা আছে। এরা ছোটো ছোটো স্তন্যপায়ী প্রাণী (ইঁদুর, খরগোশ, ছাগল, ভেড়া, শিয়াল, হরিণ ইত্যাদি) আহার করে। সুযোগ পেলে গাছের পাখি ধরে খায়।
প্রজাতিভেদে এদের আকার,
গায়ের রঙ, শক্তিমত্তা ইত্যাদির পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। এই গণের প্রজাতি গুলো হলো-
এ্যাঙ্গোলান অজগর
(Python
anchietae)।
ছোটো লেজা অজগর
(Python
curtus)।
ভারতীয়-বার্মিজ অজগর (Python
molurus)
বল অজগর/রাজকীয় অজগর (Python
regius)।
জালি অজগর
(Python reticulatus)।
আফ্রিকার পাথুরে
অজগর
(Python sebae)।
তিমুর অজগর (Python timoriensis)।
এ্যাঙ্গোলান
অজগর (Angolan python)
এর বৈজ্ঞানিক নাম-Python
anchietae,
Bocage,
1887।
এর কোনো উপপ্রজাতি নেই।
আফ্রিকার এ্যাঙ্গোলা এবং নামিবিয়াতে পাওয়া যায়। এরা লম্বায় প্রায় ৬ ফুট (১৮৩
সেন্টিমিটার) হয়ে থাকে।
এরা পাথুরে ভূমিতে বা তৃণাচ্ছাদিত অঞ্চলে বিচরণ করে। তবে বসবাসের জন্য এরা কোনো
পাথুরে গুহা পছন্দ করে।
এরা ছোটো ছোটো স্তন্যপায়ী প্রাণী (ইঁদুর, খরগোশ, ছাগল, ভেড়া, হরিণ ইত্যাদি)
আহার করে। সুযোগ পেলে গাছের পাখি ধরে খায়।
এরা একসাথে ৪ থেকে ৫টা ডিম প্রসব করে।
ছোটো লেজা অজগর
এর
অন্যান্য নাম : রক্ত-অজগর, কৃষ্ণ-লোহিত অজগর, সুমাত্রার রক্ত অজগর।
এর দুটি উপপ্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। এই উপপ্রজাতি দুটি হলো-
Python
curtus
curtus,
Schlegel,,
1872।
Python
curtus brongersmai, Stull, 1938।
Python
curtus
curtus
প্রজাতিগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার থ্যাইল্যান্ড, মায়ানমার,
ইন্দোনেশিয়ায় এই অজগর পাওয়া যায়। এই অজগরগুলোর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫-৮ ফুট (১.৫-২.৫
মিটার)। সমগ্র দেহের চেয়ে লেজটি বেশ ছোটো।
এর একটি উপপ্রজাতি হলো-
Python curtus
brongersmai।
এই উপপ্রজাতিটি ৪.৫-৬ ফুট (১৩৭-১৮২ সেন্টিমিটার)। সিঙ্গাপুর, মালয় উপদ্বীপে এই
উপপ্রজাতিটি পাওয়া যায়। এই উপপ্রজাতির স্ত্রীসাপ পুরুষ সাপটির চেয়ে সামান্য বড়। এর
ওজন ৫.৪-৯ কেজি।
এরা নিশাচর। এরা দিনের বেলায় লতা-পাতা, কাঠের গুড়ি, অগভীর পানির নিচে লুকিয়ে থাকে। এরা শিকারের জন্য ঘুরে বেড়ায় না। কোনো গোপন জায়গায় বসে শিকারের জন্য অপেক্ষা করে। মূলত এরা ইঁদুর, খরগোশ জাতীয় প্রাণী আহার করে। স্ত্রী সাপটি প্রায় ৩০টি ডিম প্রসব করে।
ভারতীয়-বার্মিজ
অজগর
এর প্রধান প্রজাতিগত নাম-
Python molurus।
বার্মিজ অজগর : এই উপপ্রজাতিটি-
Python molurus
bivittatus,
Kuhl, 1820।
এর সাধারণ নাম বার্মিজ অজগর। পূর্ব ভারতের নেপালে এবং মায়ানমার, থাইল্যান্ড,
কম্বোডিয়া, লাওস, চীন, মালোয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া অঞ্চলে পাওয়া যায়।
Python molurus
প্রজাতির মধ্যে এই উপপ্রজাতিটির দৈর্ঘ্যে সবচেয়ে বেশি। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯ ফুট
(৫.৮ মিটার) হয়ে থাকে।
ভারতীয়
অজগর : এই উপপ্রজাতিটি-
Python molurus
molurus,
Linnaeus, 1758।
এর অন্যান্য নাম-
কালো-লেজা অজগর, ভারতীয় পাথুরে অজগর। এই অজগর পাওয়া যায় পকিস্তান, নেপাল, ভারত,
বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলঙ্কার বনাঞ্চলে। এই অজগরের দৈর্ঘ্য ৭.৯-৯.৮ ফুট (২.৪-৩
মিটার)। এরা পাহাড়ি বনে, আর্দ্র বনভূমি, তৃণভূমি, জলপূর্ণ এলাকায় বসবাস করে। এরা
বেশ সাঁতারে পটু।
তবে এরা সাধারণত ডাঙার কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে। এরা ছোটো ছোটো স্তন্যপায়ী প্রাণী
(ইঁদুর, খরগোশ, ছাগল, ভেড়া, শিয়াল, হরিণ ইত্যাদি) আহার করে। সুযোগ পেলে গাছের পাখি
ধরে খায়। এরা একবারে প্রায় ১০০টি ডিম প্রসব করে।
বল অজগর/রাজকীয় অজগর
এর
প্রজাতিগত নাম-
Python regius।
এর সাধারণ নাম বল অজগর বা রাজকীয় অজগর।
এই প্রজাতিটি পাওয়া যায় আফ্রিকার সেনেগাল, মালি, গিনি-বিসাউ, গায়না, সেয়ের লিওন,
লাইবেরিয়া, আইভরি কোষ্ট, ঘানা, বেনিন, নাইজার, নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন, চাদ এবং মধ্য
আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র থেকে সুদান এবং উগান্ডা পর্যন্ত। এরা এই সব অঞ্চলের
তৃণভূমি ও বনভূমিতে বসবাস করে। এই অজগর বেশ সহজে পোষ মানে।
আফ্রিকার অজগরগুলোর ভিতরে আকারে এরা সবচেয়
ছোটো। এদের গড় দৈর্ঘ্য ৩-৩.৯ ফুট (৯০-১২০ সেন্টিমিটার)। তবে ৫-৬ফুট পর্যন্ত
দৈর্ঘ্যের নমুনাও দু একটা পাওয়া গেছে। স্ত্রী সাপের চেয়ে পুরুষ সাপের দৈর্ঘ্য
সামান্য ছোটো।
এরা ইঁদুর জাতীয় বা এই জাতীয় স্তন্যপায়ী প্রাণী ও পাখি আহার করে। একবারে এরা ৪-৬টি
ডিম প্রসব করে।
এদের প্রধান খাদ্য
ছোটো স্তন্যপায়ী (ইঁদুর, কাঠবিড়ালী, খরগোষ, শুকর, সিভেট, বানর, কুকুর,
বিড়াল, শেয়াল ইত্যাদি) প্রাণী। কখনো কখনো পাখিও খায়। মানুষকে সাধারণত
এরা আক্রমণ করে না। তবে এদের দ্বারা দুএকটি মানুষ খাওয়ার তথ্য পাওয়া
যায়।
এই অজগর ১৫ থেকে ৮০টি ডিম প্রসব করে। প্রায় ৮৮দিন তা দেওয়ার পর এই ডিম
ফুটে বাচ্চা বের হয়।
আফ্রিকার
পাথুরে অজগর
এর প্রজাতিগত নাম-
Python sebae,
Gmelin,
1788।
এর দুটো উপপ্রজাতি পাওয়া যায়। এই উপপ্রজাতি দুটো হলো-
সাধারণ আফ্রিকান পাথুরে অজগর :
Python sebae sebae,
Gmelin 1788। দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকান পাথুরে অজগর : Python sebae natalensis, Smith 1833। |
এই প্রজাতির অজগর পাওয়া যায় আফ্রিকার সাহারা থেকে সেনেগাল পর্যন্ত এবং ইথিওপিয়া থেকে সোমালিয়া পর্যন্ত। এর একটি উপপ্রজাতি পাওয়া যায় মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকা অঞ্চলে। অন্য প্রজাতি পাওয়া যায় আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে। এরা মরু অঞ্চলের নিকটবর্তী বনাঞ্চলে বসবাস করে। তবে এদের বসবাসের কাছাকাছি কোনো না কোনো জল-উৎস দেখা যায়।
এটি আফ্রিকার
দীর্ঘতম প্রজাতি। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ ফুট (৬ মিটার)। এদের রয়েছে
দুটি ফুসফুস।
এরা সাধারণত ছোটো ছোটো স্তন্যপায়ী খায়। মাঝে মাঝে এন্টিলোপ বা কুমিরের
মতো বড় প্রাণীদেরকেও হত্যা করতে দেখা যায়। মানুষকে সাধারণত এরা
আক্রমণ করে না।
তিমুর
অজগর
এর
প্রজাতিগত নাম-
Python timoriensis,
Peters,
1876।
এই প্রজাতির
অজগর ইন্দোনেশিয়া তিমুর অঞ্চলে বসবাস করে। এদের দৈর্ঘ্য ৭ ফুটের বেশি
হয়ে থাকে। এদের এই অঞ্চলের বনগুলোতে দেখা যায়। এ ছাড়া শিকারে জন্য
তৃণাঞ্চলে নেমে আসে।
এরা ছোটো ছোটো স্তন্যপায়ী (ইঁদুর, খরগোশ, কাঠবিড়ালী, গিরগিটি ইত্যাদি)
এবং পাখি আহার করে থাকে। এরা মানুষকে আক্রমণ করে না।
তথ্য সূত্র :
http://www.shutterstock.com/pic-33295432/stock-photo-angolan-python-python-anchietae-isolated-on-white-background.html
http://www.reptileuv.com/reptile-caresheets/blood-python.php
http://www.reptilesweb.com/reptiles-section/snake-world/ball-python.html
www.coolthingsworld.com/top-10-longest-snakes-in-the-world/
http://pitbulllady.deviantart.com/art/Python-sebae-sebae-191318842