ইন্দোনেশিয়ার
বোর্নিও এবং মালুকু দ্বীপপুঞ্জের মধ্যবর্তী সুলাওয়েসি দ্বীপের প্রাচীন গুহাচিত্র। প্রায় ৪০ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এই
প্রাচীন গুহাচিত্রগুলো অঙ্কিত হয়েছিল। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে এই
গুহাচিত্রকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণের ঘোষণা দেন।
১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে ব্রিটিশ প্রকৃতি-বিজ্ঞানী আলফ্রেড ওয়াল্লেস
( Alfred Wallace)
প্রথম এই গুহার সন্ধান পান।
তিনি এই বিষয়ে "The Malay Archipelago",
নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। কিন্তু এই গ্রন্থ গুহাচিত্র সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করেন নি।
১৯০৫-৬ খ্রিষ্টাব্দে সুইজারল্যান্ডের প্রকৃতি-বিজ্ঞানী ফ্রিট্জ্ এবং পল এই দ্বীপে গবেষণার জন্য আসেন। এই দ্বীপের গুহায় অঙ্কিত
চিত্রকর্ম সম্পর্কে প্রথম আলোকপাত করেন। তবে এঁরা বিস্তারিতভাবে চিত্রকর্মগুলো সম্পর্কে কিছু জানান নি। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে
অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই গুহায় হাতের ছাপের কথা কেউ কেউ উল্লেখ করেন। ব্যাপক গবেষণা ছাড়াই গবেষকরা ধারণা দেন যে এই
গুহাচিত্রগুলো ১২ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে অঙ্কিত হয়েছিল।
এরপর ব্যাপক গবেষণায় হাত দেন অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার যৌথ
প্রত্নতত্ত্ব দল। এঁদের ব্যাপক গবেষণার সূত্রে জানা যায়, এই গুহাচিত্রগুলো অঙ্কিত
হয়েছিল প্রায় ৪০-২৭ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন আধুনিক মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্সরা) আফ্রিকা থেকে ইউরেশিয়া ঘুরে
ইন্দোনেশিয়াতে পৌঁছেছিল প্রায় ৪৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে। এই সময় ইন্দোনিশিয়া
নিয়াডার্থালদের আবাস ছিল। ফলে হোমো স্যাপিয়েন্সদের সাথে এদের সংঘাত হয়। হোমো
স্যাপিয়েন্সরা উন্নত অস্ত্র এবং যুদ্ধকৌশল দ্বারা নিয়াডার্থালদের পরাজিত করে
ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন দ্বীপ দখল করে নেয়। এই সময়ে হোমো স্যাপিয়েন্সদের একট দল
সুলাওয়েসি দ্বীপের প্রায় ২৪২টি গুহায় প্রাচীনকালের মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেছিল।