RX Lep বিষম তারা |
বিষম তারা
ইংরেজি : variable
star।
মহাকাশে এমন কিছু তারা দেখা যায়, সেগুলোর ঔজ্জ্বল্য ধারাবহিকভাবে বাড়ে কমে। পৃথিবী
থেকে এই তারাগুলোকে দেখার সময় লক্ষ্য করা যায় যে, এই ঔজ্জ্বল্য হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে
নির্দিষ্ট বা অনির্দিষ্ট সময় পর পর। ঔজ্জ্বল্যের এই তারতম্যের কারণেই একে বলা হয়
বিষম তারা। অবশ্য প্রতিটি জীবিত তারার ক্ষেত্রে এরকম ঔজ্জ্বল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে
থাকে। যেমন আমাদের সূর্যের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে ১১ বৎসর অন্তর। এই সময়ের ব্যবধানে
সূর্যের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পায় ১%। এছাড়া দূর-আকাশের কোনো নক্ষত্র অপর কোন কম
উজ্জ্বল নক্ষত্রের পরস্পরের আবর্তনের কারণে আড়ালে চলে গেলেও পৃথিবী থকে বিষম তারা
হিসাবে মনে হতে পারে।
বিষম তারার আবিষ্কারে ইতিহাস:
১৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে জোহানস হোলাওর্ডা (Johannes
Holwarda)
এরূপ একটি নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্যের হ্রাস-বৃ্দ্ধি লক্ষ্য করেন। এই নক্ষত্রটি ছিল
তিমি মণ্ডলের (Cetus)
ওমিক্রন
সেটি (Omicron Ceti)
নামক একটি নক্ষত্র। পরে এর নাম দেওয়া হয়েছে মিরা
(Mira)।
এই নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্যের তারতম্য ঘটে ১১ মাস পর পর। অবশ্য এর আগে ১৫৯৬
খ্রিষ্টাব্দে ডেভিড ফাব্রিকিয়াস (David
Fabricius)
এই নক্ষত্রটিকে একটি নবতারা হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন। এর আগে এ্যারিস্টোটেলে
এবং অন্যান্য প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মনে করতেন যে, মহাকাশের কোনো নক্ষত্রই
বিষম নয়। মিরা এবং সেই সাথে ১৫৭২ এবং ১৬০৪ খ্রিষ্টাব্দের বিষম অতিনবতারা আবিষ্কারের
পর এই সকল প্রাচীন মতবাদ বাতিল হয়ে যায়। এর ফলে জোতির্বিজ্ঞানে একটি নতুন ধরনের
তারা-শ্রেণির নাম যুক্ত হয়।
দ্বিতীয় বিষম তারা এ্যালগোল (Algol) আবিষ্কৃত হয় ১৬৬৯ খ্রিষ্টাব্দে। এই তারাটি আবিষ্কার করেছিলেন গেমিনিয়ানো মোন্টানারি (Geminiano Montanari)। ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে এই তারাটি সম্পর্কে যথার্থ ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন জন গুডরিকে (John Goodricke)। এরপর একের পর এক বিষম তারা আবিষ্কৃত হতে থাকে। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের সর্বশেষ নক্ষত্র তালিকায় শুধু আমাদের গ্যালাক্সিতেই স্থান পেয়েছে প্রায় ৪৬,০০০ বিষম তারা। অন্যান্য গ্যালক্সিতে রয়েছে প্রায় ১০,০০০ বিষম তারা। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্যালাক্সিতে বিষম তারার সন্দেহজনক তালিকায় রয়েছে আরও ১০,০০০ নক্ষত্র।
বিষম তারাশ্রেণি বিভাজন
বিষমতারাকে প্রাথমিকভাবে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ দুটি হলো— স্বাভাবিক বিষম তারা এবং অপ্রকৃত বিষম তারা।
স্বাভাবিক বিষম তারা (Intrinsic variables): এই জাতীয় নক্ষত্রের স্বাভাবিক সঙ্কোচন এবং প্রসারণের কারণে ঔজ্জ্বল্যের এই তারতম্য ঘটে। স্বাভাবিক তারার দৈহিক বৈশিষ্ট্যের বিচারে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগগুলো হলো—
বিস্ফোরণধর্মী বিষমতারা ((Cataclysmic or explosive variables) সৃষ্টি কালে সৃষ্ট ঔজ্জ্বল্যের তারতম্য ঘটে।
প্রক্ষেপিত বিষমতারা (Eruptive variables) : এই জাতীয় নক্ষত্রের উপরিতল থেকে অগ্নিশিখা উৎক্ষেপণ বা ভর প্রক্ষেপণের কারণে ঔজ্জ্বলের তারতম্য ঘটে।
সূত্র :
তারা পরিচিত। মোহাম্মদ আব্দুল
জব্বার। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল এসোসিয়েশান। ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪
বাংলা একাডেমী বিজ্ঞান বিশ্বকোষ। ১-৫ খণ্ড।
http://en.wikipedia.org/wiki/
contemporary Astronomy/ Jay M. Pasachoff।
2nd edition
A
Brief history of time /
Stephen Hawking
Essays about Univesre/Boris A. Vorontrov-Vel'Yaminov/Mir
Pulishers Moscow/1985