আম (বৃক্ষ ও ফল)
বানান বিশ্লেষণ: অ+ক্+ম্++অ
উচ্চারণ:
আম্
[am]
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত
आम्र
(আম্র)>প্রাকৃত
অম্ব>বাংলা
আম।
পদ:
বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
ফলদবৃক্ষ
|
আবৃতবীজী বৃক্ষ
|
বৃক্ষ |
কাষ্ঠময় উদ্ভিদ
|
ভাস্কুলার উদ্ভিদ
|
উদ্ভিদ |
জীবসত্তা |
জীবন্তবস্তু |
দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু |
দৈহিক
সত্তা
|
সত্তা
|}
অর্থ: আম নামক ফলের গাছ
সমার্থক শব্দাবলি: আমগাছ, আম্রবৃক্ষ, চূতবৃক্ষ।
ইংরেজি:
Mango
tree।
বৈজ্ঞানিক নাম
Mangifera indica।
বিস্তারিত: আম নাম ফলের গাছ।
২০১০ খ্রিষ্টাব্দের নিয়মিত সংসদীয় সভায় এই সিদ্ধান্ত অনুসারে
বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ। এই বিচারে জাতীয় ফল কাঁঠাল কিন্তু জাতীয় গাছ আম।
এটি
Anacardiaceae
পরিবার ভূক্ত চিরহরিৎ সপুষ্পক বৃক্ষ। এই গাছের আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।
প্রজাতি অনুসারে
এই গাছ বিভিন্ন উচ্চতার হয়ে থাকে। এই উচ্চতার পার্থক্য ১৫ থেকে ৫০ ফুট-এর ভিতরে হয়ে
থাকে। এর পাতা লম্বায় ৮-১১ ইঞ্চি হয়। লম্বার বিচারে চওড়া কম। পাতার অগ্রভাগ
সরু। পাতার রঙ ঘন সবুজ। এর ফুল একটি পুষ্পদণ্ডে গুচ্ছাকারে হয়। ফুল পীতবর্ণ,
গন্ধযুক্ত এবং স্ত্রী ও পুংকেশরযুক্ত। ফুলে পাঁচটি পাপড়ি আছে। পাঁচটি পুংকেশরের
একটি বড়, অপর চারটি ছোট। চৈত্র মাসের শেষের দিকে আমের গুঁটি দেখা যায়। সাধারণত বৈশাখ
মাসের শেষাংশ থেকে থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত আম পাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় আমের রঙ
সবুজ, কিন্তু পাকলে প্রজাতিভেদে হলদে, কমলা, পীত ইত্যাদি বর্ণ ধারণ করে। আমগাছ
প্রাকৃতিকভাবে আঁটি থেকে জন্মে।
বাংলাদেশ, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ, মিশর,
অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি স্থানে আম প্রচুর পরিমাণ জন্মে। বাংলাদেশে রাজশাহী এবং
তদ্সংলগ্ন এলাকায় সবচেয়ে বেশি জন্মে। বাংলাদেশে আম একটি সর্বাধিক জনপ্রিয় ফল।
আম থেকে বিভিন্ন জাতীয় খাবার প্রস্তুত করা হয়। যেমন− আমের বিভিন্ন ধরনের আচার, আমের
জুস, আমসত্ত, আমচুর ইত্যাদি। কাঁচা আম রান্নাতে বিশেষ করে ডালের সাথে ব্যবহার করার
রীতি আছে। পাকা ও সুমিষ্ট আমের রসের সাথে দুধভাত খাওয়ার রীতি ব্যাপক ভাবে প্রচলিত।
বাংলাদেশে বহু প্রজাতির আম প্রচলিত আছে। এসকল আম আঞ্চলিক নাম নিয়ে খ্যাতি লাভ
করেছে। যেমন- ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, সিন্দুরি ইত্যাদি।
আম সাধারণত কাঁচা অবস্থায় শক্ত ও অম্লযুক্ত হয়ে থাকে। কিন্তু পাকলে তা অত্যন্ত
রসালো ও মিষ্টযুক্ত হয়ে থাকে। কোন কোন আম কাঁচা অবস্থাতেই মিষ্ট হয়ে থাকে। এই
জাতীয় আমকে কাঁচামিঠা আম বলে।
আম গাছের কাঠ তেমন মূল্যবান আসবাবপত্রে ব্যবহার হয় না। ছোট ছোট গাছের কাঠ সাধারণত
জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বহু পুরানো গাছ থেকে অনেক ক্ষেত্রে স্বল্প মূল্যের
চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ইত্যাদি তৈরি হয়ে থাকে।
সূত্র :
ভারতীয় বনৌষধি। প্রথম খণ্ড। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ২০০২।
বাংলা বিশ্বকোষ (প্রথম খণ্ড)। নওরোজ কিতাবিস্তান। ডিসেম্বর ১৯৭২।