আদা
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { বীরুৎ | ভাস্কুলার উদ্ভিদ | উদ্ভিদ | জীবসত্তা | জীবন্তবস্তু | দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}

ইংরেজি :
ginger, gingerroot
বাংলা সমার্থক শব্দাবলি :
আদা, আর্দ্রক, শুঁঠ, শুণ্ঠ
সংস্কৃত
আর্দ্রক, শৃঙ্গভেরা। হিন্দি ও পাঞ্জাবআদ্রক।  গুজরাটি, মারাঠি আলে, আদু। তামিলসুক্কু। তেলেগুসুটি, অদ্রকাম, অল্পং। মালয়অন্দ্রকাম।

বাংলা, অহমী ও উড়িষ্যার ভাষায় এটি দা সংস্কৃতিতে একে বলা হয় আর্দ্রক, শৃঙ্গভেরা। সংস্কৃত শৃঙ্গভেরা নামটি shringavera গ্রিসে প্রবেশ করে ziggiberis হিসাবে, ল্যাটিনে এই নাম হয়েছে zingiber বা gingiber। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ইংরেজিতে এই নাম ছিল gingifer বা gingivere ধুনিক ইংরেজিতে একে বলে Ginger। পুরানো ফরাসী ভাষায় ছিলgingivie

    এটি Zingiberaceae পরিবারভূক্ত গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় অঞ্চলে বহুবর্ষজীবী, একবীজপত্রী, গুপ্তবীজী, বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ বিশেষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Zingiber officinale। এর দি উৎপত্তিস্থান মধ্য এশিয়া। তবে ভারত এবং চীনে প্রাচীনকাল থেকে এই উদ্ভিটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পৃথিবীর মোট উৎপাদিত দার ৫০ ভাগ জন্মে ভারত উপমহাদেশের দেশগুলোতে। বণিকদের মাধ্যমে এশিয়া থেকে অন্যান্য মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে  ব্রাজিল, জ্যামাইকা ও নাইজেরিয়াতে দার ভাল চাষ হয়ে থাকে।
    ভূগর্ভে এর শাখা-প্রশাখা এর মূল ও কাণ্ড স
ম্প্রসারিত হয়। এই কাণ্ডের সাহায্যে দার বংশবিস্তার হয়ে থাকে। মাটির নিচে দা খণ্ড থেকে অন্যান্য অঙ্গ খণ্ড বের হয়। এর ঊর্ধ্বাংশে পাতাসহ ডালপালা বৃদ্ধি পায়। গাছ ৩-৪ ফুট উচ্চ হয়ে থাকে। এর পাতাগুলো ১-১৩ ইঞ্চি লম্বা এবং ১ ইঞ্চি বিস্তৃত হয়ে থাকে। পাতার অগ্রভাগ ক্রমশঃ সরু হয়ে থাকে। এর পুংকেশর গাঢ় বেগুনি বর্ণের হয়ে থাকে। এর ফুল খুব বেশি দেখা যায় না। এর বীজ হয় না।
   
সাধারণ আদাগাছের ঝালযুক্ত, ঝাঁঝালো রাইজোম, বিশেষভাবে প্রাচ্যদেশীয় রান্নাতে খাদ্য সুস্বাদুকরণে মশলা হিসাবে এটি ব্যবহার করা হয়। তবে অসিদ্ধ বা কাঁচা দাও খাওয়ার রীতি রয়েছে। চায়ের সাথে বা সুপের সাথে দার রস বা দার ছোট খণ্ড ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গলার খুসখুসানি রোধে শুকনো দার কুচি অনেকে খেয়ে থাকেন। এছাড়া আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।


সূত্র :
বাংলা বিশ্বকোষ
চতুর্থ খণ্ড। নওরোজ কিতাবিস্তান।
বাংলা একাডেমী বিজ্ঞান বিশ্বকোষ, দ্বিতীয় খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। কার্তিক ১৪০৬/জুন ১৯৯৯।
ভারতীয় বনৌষধি (চতুর্থ খণ্ড)। কালীপদ বিশ্বাস ও এককড়ি ঘোষ। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২০০২।