Kingdom: Plantae
|
বহেড়া
সংস্কৃত :
বিভীতকী।
ইংরেজি : bastard myrobalan,
Beleric
বৈজ্ঞানিক নাম
Terminalia belerica
ভারতবর্ষের বৃহদাকার পাতাঝরা বৃক্ষ গাছ। বাংলাদেশের বনাঞ্চল এবং গ্রামাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো এ গাছ দেখা যায়। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মতে―দেবরাজ ইন্দ্র অমৃতের সন্ধানে যখন সমুদ্র মন্থন করছিলেন, সে সময় এক ফোঁটা অমৃত মর্ত্যে পড়ে এবং সেই ফোঁটা থেকে এই বহেড়া গাছের জন্ম হয়।
![]() |
বহেড়া পাতা |
![]() |
বহেড়া ফল |
এই
গাছ ৬০-১০০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এর বাকল ধূসর বা ছাই রঙের। বাকল প্রায় ১/২ ইঞ্চি
পুরু হয়। বাকলে লম্বা ফাটল থাকে। পাতা গাছের ডালের আগায় থাকে। আকৃতি কাঁঠাল-পাতার মতো। বোঁটা লম্বা। পাতা লম্বায় প্রায় পাঁচ
ইঞ্চি। ফুল হয় পাতার বোঁটার বৃন্তমূল থেকে। ফুল ডিম্বাকৃতি এবং প্রায় এক ইঞ্চির মতো
লম্বা হয়। ফুলে ১০টি পুংকেশর থাকে। ফুলের রং সবুজাভ-হলুদ। ফুল ফোটে অক্টোবর মাসের দিকে।
ফল প্রায় ডিম্বাকৃতি, কিন্তু ওপর
প্রান্ত তীক্ষ্ণ। ব্যাস প্রায় এক ইঞ্চি। কাঁচা ফলের রং গাঢ় বাদামি। ফল পাকে ডিসেম্বর থেকে
ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ফলের বাইরের আবরণ মসৃণ ও শক্ত। ভেতরে একটি মাত্র শক্ত বীজ থাকে।
ভারতবর্ষে বড় ও ছোটো
আকারের বহেড়া পাওয়া যায়।
বহেড়ায় আছে ট্রাইটারপেনয়েডস, কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইড, সিটোস্টেরল, ট্যানিন, গেলোইল
গ্লুকোজ, পামিটিক এসিড ও লিপোলিক এসিড। বহেড়া আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে
প্রাচীনকাল থেকে। কথিত
আছে, প্রতিদিন বহেড়া ভেজানো এক কাপ পরিমাণ পানি পান করলে আয়ু বৃদ্ধি পায়।
বহেড়া হৃৎপিণ্ড এবং যকৃতের রোগের আক্রমণ কমায়। সর্দিকাশি, অর্শ, কৃমিনাশক,
জ্বরনাশক, অনিদ্রা, হাঁপানি, কুষ্ঠ এসব রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
বহেড়ার কাঠ হরিদ্রাভ ও শক্ত। কাঠ পানিতে সহজে পচে না। এই কারণে নৌকা তৈরিতে এই কাঠ ব্যবহার
করা হয়। ফল
থেকে লেখার কালি বানানো হয়।
সূত্র :
ভারতীয় বনৌষধি। দ্বিতীয় খণ্ড। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২০০২।
http://www.diyhealth.com/triphala-churna-6-negative-side-effects.html
http://en.wikipedia.org/wiki/Terminalia_bellirica