Kingdom: Plantae |
ঢেঁড়স
সংস্কৃত : ডিণ্ডিস, গন্ধমূলা।
বাংলা অন্য নাম : ভেন্ডি।
ইংরেজি : lady's fingers,
gumbo।
বৈজ্ঞানিক নাম :
Abelmoschus esculentus
Malvaceae
গোত্রের এক প্রকার সবজী জাতীয়
উদ্ভিদ। দক্ষিণ এশিয়া, ই্থিওপিয়া এবং পশ্চিম আফ্রিকা অঞ্চলের আদি উদ্ভিদ। বর্তমানে
গ্রীষ্ম প্রধান সকল দেশেই সবজির ঢেঁড়সের চাষ করা হয়।
এই গাছ বর্ষজীবী। গাছগুলো লম্বায় প্রায় ২ মিটার হয়ে থাকে। এই গাছের কাণ্ডে লোম থাকে। এদের পাতার বোঁটা প্রায় ১৫-২০ সেন্টিমটার লম্বা হয়। এর পাতা বেশ বড় হয়। তবে পত্রফলক ৫ থেকে ৭টি খণ্ডে খণ্ডিত থাকে এবং দাঁতযুক্ত। পাতার গাত্র খসখসে হয়।
জাত ভেদে এর ফুলের পাপড়ি সাদা বা পীত বর্ণের হয়ে থাকে। ফুলের ব্যাস ৪-৮ সেন্টিমিটার।
কাঁচা
অবস্থায় এর ফল সবুজ থাকে। ফলের গায়ে ছোটো ছোটো লোম থাকে। ফলের অগ্রভাগ সরু এবং
সামান্য বাঁকা হয়। ফলগুলো প্রায় ১৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। চওড়া হয়
প্রায় ৫ সেন্টিমিটার। ফলের গায়ে শিরা থাকে। ঢেঁড়স ফলে ৪-৫টি বীজ থাকে।
বাংলাদেশে
সারা বছরই
ঢেঁড়সের চাষ করা যায়। তবে সাধারণতঃ গ্রীষ্মকালে এর চাষ করা হয়। ফাল্গুন চৈত্র ও
আশ্বিন-কার্তিক মাস বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। দোআশ ও বেলে দোআশ ঢেঁড়শ চাষের জন্য
সবচেয়ে উপযোগী। পানি নিষ্কাশনের সুবিধা থাকলে এটেল মাটিতেও চাষ করা যায়। এর
বিভিন্ন জাত বাংলাদেশে চাষ করা হয়ে থাকে।
এই জাতগুলো হলো—
শাউনি, পারবনি
কানি, বারী ঢেঁড়শ, পুশা সাওয়ানী, পেন্টা গ্রীন, কাবুলী ডোয়ার্ফ, জাপানী প্যাসিফিক
গ্রীন। এর ভিতর
কাবুলী ডোয়ার্ফ, জাপানী প্যাসিফিক গ্রীন
সারা বৎসর ব্যাপী চাষ
করা চলে।
ঢেঁড়শে প্রচুর
পরিমাসে ভিটামিন সি, এ ও বিভিন্ন খনিজ পদার্থ (ক্যালসিয়াম,
ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, গন্ধক, সোডিয়াম, লোহা, তামা)
রয়েছে।
ঢেঁড়শ-এর উপকারিতা
১. নিয়মিত খেলে গলাফোলা
রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে না।
২. ঢেঁড়শ খেলে
খাওয়ার রুচি বাড়ে, মল পরিষ্কার হয়। এছাড়া
এটা হজম শক্তি বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।
৩. কবিরাজি মতে
ঢেঁড়শ পিত্ত ও শ্লেষ্মা নাশক,
প্রস্রাব পরিষ্কারক।
৪. বহুমূত্র রোগীদের জন্য উপকারী।
ঔষধ হিসাবে ব্যবহার
১. টাটকা নরম বীজ পিষে চিনি মিশিয়ে ১-২ মাস খেলে প্রস্রাবের দোষ কেটে যায়।
২. গাছের শেকড় পিষে চিনি মিশিয়ে ১ সপ্তাহ খেলে আমাশয়ে উপকার পাওয়া যায়।
অপাকারিতা
১. অধিক পরিমাণ ঢেঁড়শ খেলে বাতের প্রকোপ হয়।
২. কাশি হয়েছে ও যাঁরা কফ ও বায়ুরোগে ভুগছেন তাঁদের না খাওয়াই ভালো।
সূত্র
ভারতীয় বনৌষধি।। প্রথম খণ্ড। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০২।