Kingdom: Plantae
Order: Asterales
Family: Asteraceae
Subfamily: Asteroideae
Tribe: Tageteae
Genus: Tagetes

গাঁদা
ইংরেজি Meri Gold
বাংলা নাম : গাঁদা, গেঁদা

Tagetes গণের গুল্ম জাতীয় বর্ষজীবী উদ্ভিদ। এর প্রায় ৫৬টি প্রজাতি আছে। এই গাছের আদি নিবাস উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা। বিশেষ করে মেক্সিকোতে এই গাছ অধিক জন্মে। এর কিছু প্রজাতি পৃথিবীর উষ্ণ অঞ্চলের সর্বত্রই জন্মে। বাংলাদেশে এর ৩-৪টি প্রজাতি পাওয়া যায়। বাংলাদেশে এই ফুলগুলো শীত ও বসন্তকালে পাওয়া যায়। নিচে এর অধিক পরিচিত প্রজাতিগুলোর তালিকা দেওয়া হলো।
    ১.আফ্রিকার গাঁদা। দেশীয় নাম রাজগাঁদা। বৈজ্ঞানিক নাম-
Tagetes erecta
    ২. ফরাসী গাঁদা। দেশীয় নাম কালীগাঁদা। বৈজ্ঞানিক নাম-
Tagetes patula
    ৩. ছোটো গাঁদা।  বৈজ্ঞানিক নাম-
Tagetes lucida
    ৪. তারা গাঁদা। বৈজ্ঞানিক নাম-
Tagetes patula
    ৫. মিনুটা গাঁদা। বৈজ্ঞানিক নাম-
Tagetes minuta

বর্তমানে চীন, জাপান প্রভৃতি দেশ থেকে পষ্প প্রেমিকরা আমদানি করেছে।

রাজগাঁদা (Tagetes erecta)
এই গাছগুলোর আদি নিবাস মেক্সিকো। এই কারণে একে ইংরেজিতে
Mexican marigold বা Aztec marigold বলা হয়। আর গাছগুলি ৫০-১০০ সেন্টিমিটার (২০-৩৯ ইঞ্চি) পর্যন্ত উঁচু হয়। গাছগুলো খাঁড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। তবে ডালপালা বিস্তার করে ঝোপের সৃষ্টি করে। এর কাণ্ড বেশ নরম হয়। কাণ্ডে সূক্ষ্ম লোম থাকে। কাণ্ডের উভয় দিকে পাতা জন্মে এবং পক্ষাকারে বিস্তৃত হয়।

এই গাঁদা ফুলের জন্য আদৃত। এই গাছের ফুল হলুদ-কমলা বর্ণের হয়ে থাকে। ফুলগুলো বেশ বড় গোলাকার হয়ে থাকে। ফুলগুলি ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত চওড়া হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এই গাছের বাগান করা হয়। এছাড়া উঠানে, টবে এই গাছ লাগানো হয়। এই গাঁদা পাতা ছেঁচে রসসহ কাটা স্থানে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। এর রস কানের ব্যাথার উপসম করে। ফোড়া, কার্বাঙ্কল ও পাচড়ায় বিশেষ উপকারে আসে।

কালী গাঁদা (
Tagetes patula)
এই গাছের আদি বাস ছিল উত্তর আমেরিকা। সেখান থেকে এর চাষ দক্ষিণ ইউরোপে শুরু হয়। ফ্রান্সে এক সময় এই গাছের ব্যাপক চাষ হয়। কালক্রমে ইউরোপে এই গাছের নাম দাঁড়িয়েছিল
French marigold

এই গাছ রাজগাঁদার চেয়ে উচ্চাতায় বেশ ছোটো হয়। এর ফুল ২-৫ সেন্টিমিটার চওড়া হয়ে থাকে। এর পাপড়ি বাহিরের দিকের রঙ ঘন লাল, ভিতরের দিকটা হলুদ হয়ে থাকে।

ফ্রান্সে এই গাছের তেল সুগন্ধী তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এই গাঁদা পাতা ছেঁচে রসসহ কাটা স্থানে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। এর রস কানের ব্যাথার উপসম করে। ফোড়া, কার্বাঙ্কল ও পাচড়ায় বিশেষ উপকারে আসে। এই গাঁদার রস থেকে 'আতর গন্ধা' নামক সুগন্ধী তৈরি হয়ে থাকে।

ছোটো গাঁদা (
Tagetes lucida)
এই গাছের আদি বাস ছিল উত্তর আমেরিকার মেক্সিকোতে। ইংরেজিতে এর অনেক নাম পাওয়া যায়। যেমন- 
 Mexican marigold, pericón, Mexican mint marigold, Mexican tarragon, Spanish tarragon, Texas tarragon

এই গাছ  উচ্চতায় ৪৬-৭৬ সেন্টিমিটার (১৮-৩০ ইঞ্চি) হয়। গাছগুলো বেশ ঝোপের সৃষ্টি করে। পাতাগুলো লম্বায় প্রায় ৩ ইঞ্চি মতো হয়। এর ফুলগুলোর হলুদ হয়, কিন্তু রাজ গাঁদার মতো ঘন পাঁপড়ি থাকে না। এই গাঁদা পাতা ছেঁচে রসসহ কাটা স্থানে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। এর রস কানের ব্যাথার উপসম করে। ফোড়া, কার্বাঙ্কল ও পাচড়ায় বিশেষ উপকারে আসে।

তারা গাঁদা (
Tagetes tenuifolia)
এই গাছের আদি বাস ছিল উত্তর আমেরিকার মেক্সিকোতে। এই গাছের ফুলগুলো তারার মতো ছড়ানো থাকে, এই কারণে স্থানীয়ভাবে অনেক সময় তারা গাঁদা বলা হয়। ফুল হিসাবে তারা গাঁদার আদর, রাজগাঁদা বা কালী গাঁদার চেয়ে কম। সে কারণে এই গাঁদার চাষ ততটা হয় না।

এই গাছ বাংলাদেশে ততটা আদৃত না হলেও, কেউ কেউ বাগানে চাষ করে থাকেন। এই গাঁদা পাতা ছেঁচে রসসহ কাটা স্থানে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। এর রস কানের ব্যাথার উপসম করে। ফোড়া, কার্বাঙ্কল ও পাচড়ায় বিশেষ উপকারে আসে।

মিনুটা গাঁদা (
Tagetes minuta)
এই গাছের আদি বাস ছিল উত্তর আমেরিকা। স্প্যানিশদের মাধ্যমে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলোতে এই গাছ ছড়িয়ে পড়েছে। ইংরেজিতে এর একাধিক নাম আছে। যেমন- Southern Cone Marigold, Stinking Roger, black min

ভেষজ উদ্ভিদ হিসাবে পেরু, বলিভিয়া এবং চিলিতে এর ব্যবহার রয়েছে। এই গাছগুলো উচ্চতায় সর্বোচ্চ ১.৩ মিটার পর্যন্ত হয়। এই গাছের পাতায় সুগন্ধ আছে। এই কারণে সুগন্ধী চা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এই গাছের পাতা ব্যবহার করা হয়। মূলত সর্দির জন্য এই গাছের রস বিশেষ উপকারী। বাংলাদেশে এই প্রজাতিটি ততটা দেখা যায় না।


সূত্র :
বাংলা বিশ্বকোষ। দ্বিতীয় খণ্ড। নওরোজ কিতাবিস্তান। ডিসেম্বর ১৯৭৫।
ভারতীয় বনৌষধি। তৃতীয় খণ্ড। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০২।
http://en.wikipedia.org/wiki/Tagetes