Kingdom: Plantae
|
গাঁজা
সংস্কৃত ভাং, ভঙ্গা।
বাংলা : গাঁজা, ভাং, সিদ্ধি।
বৈজ্ঞানিক নাম :
ভারতীয় প্রজাতি :
Cannabis indica।
অন্য প্রজাতি :
Cannabis sativa
।
Cannabaceae
গোত্রের বর্ষজীবী দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ।
Cannabis
গণের
sativa
প্রজাতিটির নামকরণ করেছিলেন
Linnaeus।
১৭৮৫ খ্রিষ্টাব্দে,
Jean-Baptiste Lamarck
নামক একজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী
Cannabis গণের ভিন্নতর প্রজাতি
হিসাবে অপর একটি উদ্ভিদকে শনাক্ত করেন এবং নামকরণ করেনCannabis
indica। পরে
Richard Evans Schultes
উভয় প্রজাতির বিস্তারিত বর্ণনা করেন।
উভয় প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে তিনটি প্রধান
পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। পার্থক্য তিনটি হলো।
১. sativa
প্রজাতিটি চেয়ে অপেক্ষাকৃত খাটো । সাধারণত
sativa
লম্বায় ৪ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত হয়।
২. sativa
প্রজাতিটি ঘন শাখা-প্রশাখাযুক্ত হয়। সেই তুলনায়
indica
প্রজাতিটি ঘন শাখা-প্রশাখাযুক্ত হয় না।
৩. sativa প্রজাতিতে নেশা-উৎপাদক ভেষজ উপাদানের
(ক্যানাবিডিওল) পরিমাণ কম
থাকায়, এই প্রজাতিটির চাষ হয় না।
ভারতীয় প্রজাতিটি (Cannabis indica) ভারতবর্ষে এসেছিল হিন্দুকুশ পার্বত্য এলাকা থেকে। বর্তমানে এই প্রজাতিটি পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ভারতে চাষ করা হয় হাসিস উৎপাদনের জন্য। বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে এর চাষ হয়ে থাকে।
![]() |
Cannabis indica। ছবি : Silverhaze |
উভয় প্রকার গাছের পাতার পত্রকগুলো আঙুলের মতো বিভাজিত। পাতার প্রান্তভাগ করাতের দাঁতের মতো খাঁচকাটা থাকে। এর বেশ লম্বা পত্র বৃন্ত থাকে। এর ফুলের রঙ সবুজ এবং একলিঙ্গ বিশিষ্ট। পুংপুষ্প ছোটো হয়। এতে পাঁচটি পাপড়ি ও পাঁচটি পুংদণ্ড থাকে। স্ত্রীপুষ্প পুষ্পদণ্ডের অগ্রভাগে জন্মায়। তবে এর গর্ভদণ্ড ছোটো হয় এবং তা স্ত্রীকেশরের ভিতরে থাকে। এই উদ্ভিদের ফল ও বীজ হয় চ্যাপ্টা এবং ফলের গায়ে কাঁটা থাকে।
এই গাছের অন্যান্য ভেষজগুণ থাকলে, এর প্রধান ব্যবহার হয় নেশা করার জন্য। এই গাছ থেকে যে সকল নেশাদ্রব্য উৎপন্ন হয়, সেগুলো হলো–
গাঁজা : স্ত্রীপুষ্পকে ৪৮ ঘণ্টা রৌদ্রে
শুকালে ফুলগুলো জমাট বেধে যায়। এই জমাটফুলই গাঁজা নামে বিক্রয় হয়। সাধারণত
কল্কিতে গাঁজা ভরে অগ্নিসংযোগ করে এর ধোঁয়া গ্রহণ করা হয়। এছাড়া সিগারেট বা বিড়ির
মতো করে গাঁজা ভরে এর ধুমপান করা হয়।
ভাং : স্ত্রী উদ্ভিদের ভূ-উপরিস্থ অংশ শুকিয়ে বা কাঁচা অবস্থায় পিষে পানির
সাথে মিশিয়ে সরবত বানিয়ে পান করা হয়। নেশাকারক উপাদান কম থাকে বলে গাঁজা অপেক্ষা
ভাং কম দামে বিক্রয় হয়।
চরস্ : গাছের আঠা থেকে চরস তৈরি হয়ে থাকে। অনেক সময় গাঁজার ফুল শুকানোর সময়
যে গুঁড়া উৎপন্ন হয়, তা আঠার সাথে যুক্ত করে চরস তৈরি হয়ে থাকে। অনেক সময় এই আঠা
পাওয়ার জন্য গাঁজার গাছ কেটে দেওয়া হয়।
সিদ্ধি : গাঁজা গাছের পাতা শুকিয়ে সিদ্ধি তৈরি করা হয়। সিদ্ধি থেকে অন্যান্য
উপাদান মিশিয়ে ঔষধ তৈরি করা হয়। এছাড়া সিদ্ধি মুখে পুরে চিবিয়ে নেশা করে অনেকে।
হাসিস : গাঁজার স্ত্রীপুষ্পের নির্যাস
থেকে হাসিস তৈরি করা হয়। গাঁজা গাছ থেকে ঊৎপন্ন সকল নেশা দ্রব্যের মধ্যে হাসিসকে
শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।
সূত্র :
ভারতীয় বনৌষধি (চতুর্থ খণ্ড)। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০২।
ভেষজ রসায়ন । আব্দুল গণি। বাংলা একাডেমী। চৈত্র ১৪০৬/মার্চ ১৯৯৯।
http://forum.sensiseeds.com/images/users/a_silverhaze/a_cannabis_indica_i2629.html