ভেষজ গুণ: পাকা কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং কলার থোড় বা মোচা ডায়াবেটিস, আমাশয়, আলসার নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।
কলা
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
বীরুৎ
|
ভাস্কুলার উদ্ভিদ
|
উদ্ভিদ |
জীবসত্তা |
জীবন্তবস্তু |
দৈহিক-লক্ষ্যবস্তু |
দৈহিক
সত্তা
|
সত্তা
|}
কলা নামক
ফল এবং এই ফলের
গাছের নাম।
সমার্থক শব্দাবলি:
অংশুমৎফলা,
আয়তচ্ছদা, কদলীবৃক্ষ, কলাগাছ, সারতরু।
ইংরেজি :
banana,
banana
tree
এটি মুসা
(Mussa)
গণের অন্তর্গত কতকগুলি প্রজাতি ও তার ফল। ঔষধি উদ্ভিদের মধ্যে এটি বৃহত্তম। এর
উল্লেখযোগ্য প্রজাতি দুটি হলো-
Musa acuminata
এবং
Musa balbisiana।
গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে, এই উদ্ভিদ প্রচুর পরিমাণে জন্মে। কলা একবীজপত্রী উদ্ভিদ। এর একটি অলীক-কাণ্ড (false trunk) বৃদ্ধি পেয়ে দীর্ঘাকার ধারণ করে। এর ভিতরের নরম কাণ্ডটি, বেশ চওড়া চওড়া আঁইশযুক্ত রসালো পাতের আড়ালে ঢাকা পড়ে থাকে। এই আসল কাণ্ডটি প্রথমেই থাকে। গাছটি যখন পূর্ণতা লাভ করে তখন এর অলীক-কাণ্ডের কেন্দ্রস্থল ভেদ করে উদ্ভিদের মাথা দিয়ে বের হয়। এর শীর্ষদেশে মোচারূপে স্ত্রী-পুরুষ ফুল দেখায় যায়। এই মূল কাণ্ডকে বাঙলায় ভাদালি বা ভাড়ালি বলে।
কলাগাছ বীজ
থেকে
জন্মে না। গাছের গোড়া
থেকে
নূতন চারার জন্ম হয়। এই গাছে একবার মাত্র ফল ধরে। প্রায় সকল গ্রীষ্মপ্রধান দেশেই
এর চাষ হয়। সারা পৃথিবী জুড়ে এর বিবিধ প্রজাতি পাওয়া যায়। এখানে বাংলাদেশে
প্রাপ্ত কিছু প্রজাতির বাঙলা নাম তুলে ধরা হলো। নামগুলি হলো- অগ্নিস্বর,
অনুপম,
অমৃতসাগর,
আনাজ
বা কাঁচা কলা,
কবরী,
কানাইবাঁশী,
কাবুলী,
চাঁপা,
জাহাজী,
দুধসাগর,
বিচিকলা,
বীটজবা,
মর্তমান,
মোহনবাঁশী,
সবরী,
সাগর ইত্যাদি।
কলা একটি অর্থকরী উদ্ভিদ। এর ফল এবং কাণ্ডসহ প্রায় সকল অংশই ব্যবহৃত হয়। এটি একটি শ্বেতসার সমৃদ্ধ ফল। এ ছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আমিষ, খনিজ দ্রব্য ও ভিটামিন। এই ফলটি সুস্বাদু ও সহজপাচ্য। বাঙলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় কলার নাম সবরী। এর কিছু প্রজাতির কলা কাঁচা তরকারী হিসাবে খাওয়া হয়। এর মোচা ও ভাদালিও তরকারী হিসাবে খাওয়া হয়ে থাকে। কলা পাতা এবং এর কাণ্ড, পশুখাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়া নিকৃষ্ট শ্রেণীর কিছু কলা পশুখাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে এর কাণ্ড দিয়ে ভেলা নামক জলযান নির্মাণ করা হয়।
সূত্র
বাংলা বিশ্বকোষ (দ্বিতীয় খণ্ড)। নওরোজ কিতাবিস্তান। ডিসেম্বর ১৯৭৫।