![]() |
অফুটন্ত শাপলা ও তার পাতা |
সাধারণত শাপলা বলতে, বাংলাদেশে Nymphaea nouchali প্রজাতিকেই বুঝানো হয়। একে বাংলাতে শাপলা বা শালুক বলা হয়। এর ফুলের বর্ণ সাদা। এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। পৃথিবীর প্রায় সকল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এই ফুল জন্মে। একসময় এটি বাংলাদেশে হাওর, বিল বা উন্মুক্ত জলাশয়ে অত্যন্ত সুলভ ছিল। বর্তমানে জলাশয়ের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এই উদ্ভিদ দুর্লভ হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ ছাড়াও এই ফুল থাইল্যান্ড ও মায়ানমারে পুকুর ও বাগান সাজাতে চাষ করা হয়। সাদা শাপলা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ইয়েন, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, কম্বোডীয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, পপুয়া নিউগিন, অস্ট্রেলিয়া ও মায়ানমারে পুকুর ও হ্রদে দেখা যায়।
![]() |
সাদা শাপলা |
শাপলা ফুল দিনের বেলা
ফোটে। এই ফুল সরাসরি কাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকে। ফুলের
কাণ্ড বা ডাঁটা পানির নিচে মূলের সাথে যুক্ত থাকে এবং এই
মূল জলাশয়ের তলদেশের ভূমিতে যুক্ত থাকে। এর পাতাগুলো পানির
উপর ভেসে থাকে। পাতার আকার প্রায় গোল, তবে এর একটি পার্শ্ব
বিভক্ত থাকে। পাতার রঙ সবুজ, পাতার প্রান্ত ঘিরে ধারালো
খাঁচ থাকে। পাতার ব্যাস প্রায় ১৫-২০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে।
এর ফুলগুলো অফুটন্ত অবস্থায় গম্বুজের মতো দেখায়। এর বাইরের
দিকের রঙ সবুজাভ ধূসর। ফুটন্ত অবস্থায় এর ভিতরের সাদা
পাপড়িগুলো ছড়িয়ে পড়ে। পাপড়িগুলো ৭-১০ সেন্টিমিটার হয়ে
থাকে। এই উদ্ভিদের ফুল প্রায় সারা বছরই দেখা যায়। তবে
বর্ষা ও শরৎ এই ফুল ব্যাপকভাবে দেখা যায়। এর ফল প্রায়
গোলাকার অর্থাৎ ঈষৎ লম্বাটে।
শাপলার অন্যান্য প্রজাতিগুলোর বৈশিষ্ট্য প্রায় একই রকম।
তবে রঙের হেরফের কারণে এদের ভিন্ন ভিন্ন নামে অভিহিত করা
হয়। নিচে এরূপ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রজাতির সাধারণ পরিচয়
তুলে ধরা হলো।
১.
Nymphaea
lotus
ইংরেজি নাম :
pond lily
বাংলা নাম : শাপলা। এই ফুলগুলো সাদা শাপলার চেয়ে একটু
নিষ্প্রভ হয়। পুকুরে এর চাষ হয়। সাধারণভাবে বাংলাতে একে সাদা শাপলার
সাথে আলাদা করে বিচার না করে, শাপলা বা শালুক নামে অভিহিত করা হয়।
![]() |
রক্তকমল বা লাল শাপলা |
২.
Nymphaea
rubra Rxob
ইংরেজি নাম :
red
water lily
বাংলা নাম : রক্তকমল। এই ফুলগুলো লাল বর্ণের হয়ে থাকে।
পুকুরে ও বিলে পাওয়া যায়।
৩.
Nymphaea
stellata Wild
ইংরেজি নাম :
Blue
water lily
বাংলা নাম : নীলকমল। এই ফুলগুলো নীল বর্ণের হয়ে থাকে।
পুকুরে ও বিলে পাওয়া যায়।
সূত্র :
- http://blog.bdnews24.com/napa500mg/7224
- http://rezowan.wordpress.com/
- শিশু বিশ্বকোষ : পঞ্চম খণ্ড। শিশু একাডেমী। পৌষ ১৪০৪, ডিসেম্বর ১৯৯৭।
- ভারতীয় বনৌষধি।
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০২।