স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র
Automatic Nervous System
দেহের তৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশে এই স্নায়ুতন্ত্র কাজ করে। এই ক্ষেত্রে মানুষের
মনের ইচ্ছা দ্বারা এই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পায় না। যেমন
হৃদপিণ্ডের সঞ্চালন, যকৃত থেকে গ্লুকোজ নিঃসরণ, আলোর সাথে চোখের মণির সংকোচন
প্রসারণ ইত্যাদি। মানুষ যখন ঘুমায় তখন সচেতন কার্যক্রম নিষ্ক্রিয়া হয়ে যায়, কিন্তু
স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের কাজ কাজ চালতে থাকে।
কার্যকারিতার
বিচারে এই
স্নায়ুতন্ত্রকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ দুটো হলো
-
সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র
(Sympathetic autonomic nervous system):
উত্তেজনাকর আকস্মিক কর্মকাণ্ডে
এই স্নায়ুতন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে। ধরা যাক পথ দিয়ে চলতে চলতে দেখলেন
সামনে একটি গোখরো সাপ ফণা তুলে ছোবলের অপেক্ষায় আছে। আপনার অভিজ্ঞতা থেকে
মস্তিষ্ক তাৎক্ষণিকভাবে একটি ভয়ঙ্কর অনুভূতি সঞ্চার করবে। এক্ষেত্রে আপনার
দুটি পথ থাকবে, একটি পালিয়ে যাওয়া, অপরটি সাপকে মেরে ফেলা। এরূপ দশাকে
ইংরেজিতে একটি দুটি শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
Fight/Flight
(যুদ্ধ/পলায়ন)। যেটাই হোক স্নায়ুতন্ত্র আপনার অজান্তেই কিছু কাজ করবে। এর
ফলে
চোখের মণি বড় হয়ে যেতে
পারে, হৃদপিণ্ডের গতি বেড়ে যেতে পারে, মুখের লালা শুকিয়ে যেতে পারে, প্রচুর ঘাম
হতে পারে, শরীর কম্পিত হতে পারে। বিপদে মাথা ঠাণ্ডা রাখলে আবার কিছু
প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত নাও হতে পারে। এক্ষেত্রে কিছু হরমোন ক্ষরিত হয়ে
রক্তের সাথে মিশে গিয়ে শরীরকে পরিবেশের উপযোগী করার চেষ্টা হয়ে থাকে এই
পদ্ধতিতে।
-
প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র
(parasympathetic
nervous system):
এই পদ্ধতি কার্যকর হয় সিমপ্যাথেটিক পদ্ধতির বিপরীত দশায়। এক্ষেত্রে চোখের
মণি ছোটো হয়ে যাবে, মুখে লালার সঞ্চার হবে। হৃডপিণ্ডের গতি হ্রাস পাবে।