মালবাগ্নিমিত্রম
কালিদাসের রচিত সংস্কৃত নাটক।

খ্রিষ্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকের কবি-নাট্যকার কালিদাসের রচিত এই পঞ্চাঙ্কের এই নাটকটি বিষয় হলো- বিদর্ভ-রাজকন্যা মালবিকা ও বিদিশারাজ অগ্নিমিত্রের প্রণয়কাহিনি। এটি একটি মিলনান্তক নাটক।

বিদর্ভরাজ মাধব সেন রাজ্যচ্যূত হলে তিনি নিজের বোন মালবিকার সঙ্গে অগ্নিমিত্রের বিবাহ দেবেন। বিদিশায় পাঠানোর সময় পথে দস্যুরা আক্রমণ করলে অগ্নিমিত্রের সেনাপতি মালবিকাকে উদ্ধার করেন এবং তিনি তাঁর অগ্নিমিত্রের প্রথমা পত্নী ধারিণীর সেবায় নিযুক্ত করেন।

মালবিকার ছবি দেখে রাজা তার প্রতি আসক্ত হন। কিন্তু রানি সবসময়ই মালবিকাকে তাঁর চোখের আড়ালে রাখতে চান। কিন্তু বিদুষক রাজার ইচ্ছা পূরণের জন্য নানা কৌশলের আশ্রয় নেন। তিনি ধারিণীর সহচরী পরিব্রাজিকা পণ্ডিতকৌশিকীর সহায়তায় তিনি নাট্যাচার্য গণদাস ও হরদত্তের মধ্যে বিবাদ উপস্থিত করলেন। পরিব্রাজিকা উভয় নাট্যাচার্যের পরীক্ষা নিতে বললে, গণদাসের শিষ্যা মালবিকা রাজসমক্ষে নৃত্য প্রদর্শন করেন। এই সমায় মালবিকাকে দেখে রাজা মোহিত হন। এরপর বিদূষক ধারিণীর অপর পরিচারিকা বকুলাবলিকার সহায়তায় প্রমোদকাননে রাজা ও মালবিকার মিলনের পরিকল্পনা করেন। ঠিক তখনই রাজার দ্বিতীয়া মহিষী ইরাবতী রাজার সঙ্গে দোলারোহণের ইচ্ছায় প্রমোদকাননে উপস্থিত হন। যথাস্থানে রাজাকে দেখতে না পেয়ে মালবিকা ও বকুলাবলিকা, উভয়ে রাজার সম্পর্কে আলোচনা করা শুরু করলে, রাজা ও বিদূষককে আড়াল থেকে তাদের কথা শুনে তাঁরা বুঝলেন যে, মালবিকা রাজার প্রতি অনুরক্ত। এরপর রাজা মালবিকা আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে আলিঙ্গনে উদ্যত হলে, রানি ইরাবতী রাজাকে কটূক্তিতে অপদস্থ করেন। বিষয়টি রাজার প্রথমা স্ত্রী ধারিণী জানতে পেরে  এই প্রণয় বন্ধ করার জন্য মালবিকাকে ঘরে বন্দী করে রাখেন। কিন্তু বিদুষকের কৌশলে মালবিকার মুক্তি ঘটে।

এমন সময় সংবাদ পাওয়া যায় যে, বিদর্ভ রাজের পরাজয় ঘটেছে। পরে সবাই জানতে পারেন যে, মালবিকা আসলে বিদর্ভরাজ মাধবসেনের ভগিনী এবং পরিব্রাজিকা পণ্ডিতকৌশিকী মাধবসেনের মন্ত্রী আর্যসুমতির ভগিনী। অগ্নিমিত্রের সেনাপতি বীরসেন দস্যুর হাত থেকে উদ্ধার করে মালবিকাকে ধারিণীর হাতে সমর্পণ করেছিলেন। আর্যসুমতির ভগিনীও একই বিপদ থেকে উদ্ধার পেয়ে পরিব্রাজিকারূপে রাজ অন্তঃপুরে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

এদিকে ধারিণীর পুত্র বসুমিত্র শত্রুদের পরাজিত করেন। পুত্রের বিজয় গৌরবে ধারিণী মালবিকার সঙ্গে অগ্নিমিত্রের বিবাহের অনুমতি দেন।  বসুমিত্রের বিজয়বার্তায় ইরাবতীও ঈর্ষা ভুলে যান।

সূত্র: