এ্যাসিটাইলকোলিন
ইরেজি
Acetylcholine>বাংলা
এ্যাসিটাইলকোলিন।
ভিন্ন বানান: অ্যাসিটাইলকোলিন।।
সংক্ষিপ্ত নাম বা সাঙ্কেতিক নাম ACh
রাসায়নিক সঙ্কেত: CH3COO(CH2)2N+(CH3)3
পদ্ধতিগত নাম: 2-acetoxy-N,N,N-trimethylethanaminium.
এটি এক ধরনের এ্যাসিটিক এ্যাসিড। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ রসায়ন বিজ্ঞানী
হেনরি হ্যালেট ডেল (Henry Hallett
Dale), হৃদপিণ্ডের কলাসমূহের কার্যক্রম
পরীক্ষা করতে গিয়েএই রাসায়নিক পদার্থটি প্রথম শনাক্ত করেন।
মানুষ-সহ বহু প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রে এই যৌগিক পদার্থটি পাওয়া যায়। মানুষের
স্নায়ুবাহিত তথ্য সঞ্চালনে
নিউরোট্রান্সমিটার-এর
অন্তর্গত অন্যান্য উপাদানের মধ্যে এই পদার্থটিও একটি। সাধারণত এই পদার্থের অভাবে
মানুষের মনে অবসাদের জন্ম দেয়। এছাড়া পেশীর অবসাদ রোধে এ্যাসিটাইকোলিন
বিশেষ ভূমিকা রাখে।
স্নায়ুকোষের এ্যাক্সেনের প্রান্তদেশে এ্যাসিটাইলকোলিন
তৈরি হয়ে থলির ভিতরে জমা হয়। যখন কোনো এ্যাক্সেন প্রান্তে কোনো তথ্য জমা হয়, তখন
এ্যাক্সনে ক্যালসিয়াম আয়নের আধিক্য ঘটে। এর ফলে তথ্য বহনকারী হিসেবে
এ্যাসিটাইলকোলিন সিন্যাপ্সে প্রবেশ করে। এরপর এ্যাসিটাইলকোলিন
অন্য স্নায়ুকোষের দিকে চলে যায়। ঐচ্ছিক পেশীর ক্ষেত্রে এ্যাসিটাইলকোলিন
অন্য কোষে পোঁছার পর, সোডিয়াম চ্যানেল উন্মুক্ত হয় এবং বাইরে থেকে কোষের ভেতরে
প্রচুর পরিমাণ সোডিয়ামের প্রবেশ করে। এর ফলে পেশীর সংকোচন ঘটে। উভয় ক্ষেত্রে তথ্য
সঞ্চালনের পর, এ্যাসিটাইলকোলিন
আগের জায়গায় ফিরে আসে। এরপর ‘এ্যাসিটাইলকোলিন এস্টারেজ’ নামক একটি এনজাইম এ্যাসিটাইলকোলিনকে
ভেঙে অকার্যকর করে দেয়।
সচলচিত্রে উদাহরণ দেখুন :
Chemical
Synapse (478.0K)
পেশীর ক্ষেত্রে যদি কোন কারণে এ্যাসিটাইলকোলিন
সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে পেশীর সংকোচন ঘটবে না। মায়েস্থেনিয়া গ্র্যাভিস নামক
রোগে দেখা যায়, এ্যাসিটাইলকোলিন
এক ধরণের রিসেপ্টর অ্যান্টিবডির দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে থাকে। ফলে রোগী পেশীগত
দুর্বলতায় ভোগে এবং ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। মানুষের মস্তিষ্কে এ্যাসিটাইলকোলিন
ঠিক কি কি কাজ করে, তা সুনির্দিষ্টভাবে এখনো জানা যায় নি। তবে ধারণ
করা হয়, ঘুম, অবসাদ ইত্যাদির সাথে এই উপাদানটির সম্পর্ক আছে। এ্যাসিটাইলকোলিন-উৎপাদক
স্নায়ুকোষের মৃত্যুর কারণে এ্যালঝেইমার রোগ
হয় বলে ধারণা করা হয়।