এ্যাসিড
ল্যাটিন
acidus (টকভাব)>ফরাসি Acid>ইংরেজি Acid>বাংলা এ্যাসিড, অ্যাসিড।

রসায়ন বিজ্ঞানে ব্যবহৃত একটি উল্লেখযোগ্য সংমিশ্রণ। যদি কোন যৌগের অণুতে প্রতিস্থাপনযোগ্য হাইড্রোজেন থাকে এবং উক্ত প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন ধাতু বা ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল কোন যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা হলে লবণ উৎপন্ন হয়, তখন ঐ যোগকে এ্যাসিড বলা হয়।

এ্যাসিডের ধর্ম ও বৈশিষ্ট্য
ক। এ্যাসিডের অণুতে অবশ্যই প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন থাকতে হবে।
খ। ধাতু বা ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল যৌগমূলক দ্বারা হাইড্রোজেন প্রতিস্থাপিত হলে অবশ্যই লবণ উৎপন্ন হতে হবে।
গ। জলীয় দ্রবণে এ্যাসিড অবশ্যই হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন করবে।
ঘ। এ্যাসিডের সাথে ক্ষারকের বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন হতে হবে।
ঙ। এ্যাসিডের জলীয় দ্রবণে নীল লিটমাস লাল বর্ণ ধারণ করবে।
চ। এ্যাসিড সাধারণতঃ টক স্বাদযুক্ত হবে।

এ্যাসিডের শ্রেণী বিভাগ
এ্যাসিডের উৎস, গঠন, শক্তি, ক্ষারকত্ব ইত্যাদির বিচারে বিবিধভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। নিচে এই জাতীয় বিভাজনগুলি আলোচিত হলো।

  উৎস অনুসারে এসিডের বিভাজন
এ্যাসিডের যৌগ-উৎস জৈব কি অজৈব, সেই এ্যাসিডকে দুটি ভাগ ভাগ করা হয়। ভাগ দুটি হলো-
    ক। অজৈব বা খনিজ এ্যাসিড। যেমন- হাইড্রোক্লোরিক এ্যাসিড, সালফিউরিক এ্যাসিড ইত্যাদি।
খ। জৈব এ্যাসিড। যেমন-ফরমিক এ্যাসিড, অক্সালিক এ্যাসিড ইত্যাদি।
     
  গঠন অনুসারে এ্যাসিডের বিভাজন
গঠনগত উপাদান অনুসারে এ্যাসিডকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ দুটি হলো-
    ক। হাইড্রোসিড : হাইড্রোজেন এবং একাধিক অধাতব মৌলের সমন্বয়ে এই এ্যাসিডগুলি গঠিত হয়ে থাকে। যেমন- হাইড্রোক্লোরিক এ্যাসিড
খ। অক্সি-এ্যাসিড : হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং একাধিক অধাতব মৌলের সমন্বয়ে এই এ্যাসিডগুলি গঠিত হয়ে থাকে। যেমন- সালফিউরিক এ্যাসিড।
     
  গঠন অনুসারে এ্যাসিডের বিভাজন
এ্যাসিডের প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনের পরমাণু সংখ্যা দ্বারা এ্যাসিডের ক্ষারকত্ব নিরূপিত হয়। সেই হিসাবে ক্ষারকত্বের বিচারে এ্যাসিডকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। ভাগগুলি হলো-
    ক। এক-ক্ষারকীয় এ্যাসিড : এই জাতীয় এ্যাসিডে একটি প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে। যেমন- হাইড্রোক্লোরিক এ্যাসিড।
খ। দ্বি-ক্ষারকীয় এ্যাসিড : এই জাতীয় এ্যাসিডে দুটি প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে। যেমন- সালফিউরিক এ্যাসিড।
গ। ত্রি-ক্ষারকীয় এ্যাসিড : এই জাতীয় এ্যাসিডে তিনটি প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে। যেমন- সাইট্রিক এ্যাসিড।
     
  শক্তির ভিত্তিতে এ্যাসিডের বিভাজন
এ্যাসিড জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়ন উত্পন্ন করে। সকল প্রকার এ্যাসিডের হাইড্রোজেন আয়ন উত্পন্ন করার ক্ষমতা এক প্রকার নয়। এই ক্ষমতাকে এ্যাসিডের শক্তি বলে। শক্তির বিচারে এ্যাসিড দুই প্রকার। প্রকার দুটি হলো-
    ক। তীব্র এ্যাসিড : যে সকল এ্যাসিড সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন উত্পন্ন করে। যেমন :- হাইড্রোক্লোরিক এ্যাসিড।
খ। মৃদু এ্যাসিড : যে সকল এ্যাসিড সামান্য বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন উত্পন্ন করে। যেমন :- কার্বনিক এ্যাসিড।