অ্যালুমিনিয়াম, এ্যালুমিনিয়াম
aluminum

ল্যাটিন শব্দ থেকে ১৮০৮ সালে হামফ্রি ডেভি
(Humphry Davy) নামকরণ করেন aluminum (ল্যাটিন alumen, alumin>alumium)। ১৮১২ সালে হামফ্রি ডেভি এর পুনঃ নামকরণ করেন aluminum। পরে বিজ্ঞানীরা এই সংশোধনীয় নাম দেন Aluminium

একটি ধাতব পদার্থ। এর প্রতীক
Al, পারমাণবিক সংখ্যা ১৩, পর্যায় সারণীতে এর অবস্থান 13(IIIa), পারমাণবিক ওজন ২৬.৯৮১৫। এর যোজনী +৩। বিশুদ্ধ এ্যালুমিনিয়াম বেশ নরম এবং রূপার মতো। এর গলনাঙ্ক ৬৬০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (১২২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট), স্ফুটনাঙ্ক ২৪৬৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৪৪৭৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৭। এ্যালুমিনিয়ামর একটি উভধর্মী পদার্থ।

১৮২৫ খ্রিষ্টাব্দে হ্যানস খ্রিষ্টিয়ান ওয়েরস্টেড
(Hans Christian Oersted) নামক ডেনিশ রসায়নবিদ প্রথম পটাশিয়াম আকরিক থেকে এ্যালুমিনিয়াম পৃথক করেন এবং নতুন মৌলিক পদার্থ আবিষ্কারে কথা বলেন। ১৮২৭-৪৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে জার্মান রসায়নবিদ ফ্রেডরিখ ওহলার (Friedrich Wöhler) এ্যালুমিনিয়াম পৃথকীকরণের ব্যবস্থার উন্নয়ন করেন। ইনিই প্রথম এর আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ধারণ করেন। ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ৪৫ কেজির কাছাকাছি ওজনের এ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছিল।

পৃথিবী ও চাঁদের মাটিতে এ্যালুমিনিয়ামের প্রাচুর্য সর্বাধিক। প্রকৃতিতে এ্যালুমিনিয়াম মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। এটি এ্যালুমিনিয়াম সিলিকনের যৌগ হিসাবে (সিলিকেট) সোডিয়াম, পটাশিয়াম, লোহ, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম-এর সাথে মিশ্রিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই সিলিকেট থেকে এ্যালুমিনিয়াম পৃথক করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে- বক্সাইট (অশুদ্ধ হাইড্রেটেড এ্যালুমিনিয়াম অক্সাইট) থেকে এ্যালমুনিয়াম পৃথক করা হয়।

এ্যালুমিনিয়াম একটি অত্যন্ত ইলেক্ট্রোপজেটিভ ধাতব এবং অত্যন্ত সক্রিয় পদার্থ। বাতাসের অক্সিজেনের সাথে এই মৌলিক পদার্থটি দ্রুত বিক্রিয়া করে এ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড তৈরি করে এবং এ্যালুমিনিয়ামের উপর একটি স্বচ্ছ আস্তরণের সৃষ্টি করে। একই সাথে অক্সিজেনের সাথে এ্যালুমিনিয়ামের সাথে বাতাসের অক্সিজেনের বিক্রিয়ার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এ্যালুমিনিয়াম বহু মৌলের অক্সিজেনকে দ্রুত অপসারণ করে মূল ধাতুকে মুক্ত করে। যেমন থার্মাইটকে (এ্যালুমিনিয়াম ও আয়রন অক্সাইডের মিশ্রিত গুঁড়ো) উত্তপ্ত করলে এ্যালুমিনিয়াম লোহা থেকে অক্সিজেন অপসারণ করে লোহাকে অক্সিজেন মুক্ত করে।

হাল্কা ধাতু হিসাবে এয়ারক্র্যাফট, রেলওয়ে বগি, বাস, ট্রাক ইত্যাদি তৈরিতে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া গৃহোপকরণ, বিভিন্ন বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি তৈরির ক্ষেত্রে এ্যালুমিনিয়াম ব্যবহৃত হয়।