আর্গন
ইংরেজি :
Argon।
এটি একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন ও স্বাদহীন,
নিষ্ক্রিয় বা দুর্বল গ্যাসীয় মৌলিক পদার্থ। ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ রসায়নবিদ
স্যার উইলিয়াম র্যামসে এবং ব্যারেন জন উইলিয়াম স্ট্রুট রেলেইঘ এই গ্যাসটি আবিষ্কার
করেন। সাধারণ তরল বাতাসের অংশিক পাতন প্রক্রিয়ায় আর্গন তৈরি করা হয়। এর প্রতীক
Ar,
এর পারমাণকি সংখ্যা ১৮, পারমাণবিক ওজন ৩৯.৯৪৮। ইলেক্ট্রন বিন্যাস ২-৮-৮। আর্গন। এর
গলনাঙ্ক ১৮৯.৩ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (-৩০৮.২ ডিগ্রী ফারেনহাইট) এবং স্ফুটনাঙ্ক
-১৮৫.৮৬ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (-৩০২.৫৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট)।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলই এই গ্যাসের একমাত্র প্রাকৃতিক আধার। অবশ্য কোনো কোনো খনিজ ও
উল্কাপিণ্ডে আর্গনের খোঁজ পাওয়া গেছে। বায়ুমণ্ডলের আয়তনের দিক দিয়ে আর্গনের পরিমাণ
০.৯৩৪%। এর মধ্যে ৯৯.৬% আর্গন হলো- আর্গন-৪০ আইসোটোপ। অবশিষ্ট আইসোটোপগুলো হলো-
আর্গন-৩৬ ও আর্গন-৩৮। প্রাপ্ত আর্গন-৪০ আবার তেজষ্ক্রিয় পটাশিয়াম-৪০ এর
তেজষ্ক্রিয়তা বিকিরণের ফলে সৃষ্ট।
আর্গন সাধারণ তাপমাত্রায় গ্যাস হলেও এটিকে তরল, এমনকি কঠিন অবস্থায়ও রূপান্তরিত করা
যায়। সাধারণ কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় আর্গন অংশ নেয় না, তবে পানি, ফেনল ও
হাইড্রোকুইনোন-এর সঙ্গে দুর্বল সংযুক্তির যৌগ গঠন করতে পারে। এর বেশিরভাগ
ব্যবহার করা হয় ইলেকট্রিক বাল্বে। নিওন বাল্বেও এই গ্যাস ব্যবহার করা হয়। নিওন
বাল্বের নিওন লাল আলো প্রদান করে, পক্ষান্তরে আর্গন নীল আলো প্রদান করে। ফলে নিয়ন
বালব থেকে এই দুই আলোর মিশ্রিতরূপ পাওয়া যায়। তা ছাড়া আর্গন নিওন গ্যাস থেকে
অপেক্ষাকৃত কম ভোল্টেজে জ্বলে। এ ছাড়া আর্গন ইলেকট্রিক-আর্ক টেকনোলজিতে, গ্যাস
লেজারে এবং আর্ক ওয়েল্ডিং-এ ব্যবহৃত হয়।