চুনি
ইংরেজি Ruby।
এটি
একটি রত্ন বিশেষ। এর প্রকৃতনাম সূর্যকান্তমণি। সংস্কৃততে বলা হয় পদ্মরাগ, ফারসি ও
আরবীতে এটিকে বলা হয়– এয়াকুত বা ইয়াকুত।
এটি বিভিন্ন বর্ণের হয়ে থাকে। প্রকৃষ্ঠ চুনির রঙ টকটকে লাল। এছাড়া বাদামী লাল,
চকোলেট লাল, কমলা ইত্যাদি বর্ণের চুনি পাওয়া যায়। প্রকৃষ্ঠ চুনি কষ্ঠি পাথরে ঘসলে
ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। এটির উপর সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয় এবং প্রতিফলিত আলো তীব্রতর
হয়ে শুকনো কাগজ বা ঘাসকে জ্বালিয়ে দিতে সক্ষম। এটি সূর্যের ছোটো তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের
নীল আলোকে শুষে নিয়ে তাকে বড় তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের লাল আলোতে রূপান্তরিত করে।
চুনি কারানডাম গ্রুপ-এর শ্রষ্ঠ রত্ন। অনেকে একে রত্নরাজ বলে থাকেন। এর রাসায়নিক নাম
এ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড। এবং রাসায়নিক সংকেত
Al203।
এরকাঠিন্য ৯, আপেক্ষিক গুরুত্ব ৩.৯৭-৪.০৫, প্রতিসরাঙ্ক, ১.৭৬৬-১.৭৭৪, বিচ্ছুরণ
০.০১৮।
এই রত্নটি কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, থাইল্যাণ্ড, নরওয়ে, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা,
সুইজারল্যাণ্ড পাওয়া যায়।
জ্যোতিষশাস্ত্রের মতে- চুনি সিংহ রাশি ও রবি গ্রহের রত্ন। হস্তরেখায় রবি গ্রহের
অশুভ প্রভাব থেকে অর্থ, যশ বৃদ্ধি, সৌন্দর্য ও গৌরব বৃদ্ধির সহায়ক। কথিত আছে-
চুনিকে কিছুক্ষণ মদে চুবিয়ে রাখলে, এর মাদক গুণ নষ্ট হয়ে যায়। শরীরের কোথাও থকে
রক্তপাত হলে- চুনির গুঁড়া লাগালে তা বন্ধ হয়ে যায়।
কয়েকটি বিখ্যাত চুনি :
ক. খিরাজ-ই-আলম : এটির ওজন ৩৬১ ক্যারেট। ভারত থকে তৈমুর লঙ এই রত্নটি লুট
করে নিয়েছিল। বিভিন্ন হাত ঘুরে নাদির শাহের হাতে পড়ে।
খ. ব্লাক প্রিন্স চুনি : ১৩৬৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যাস্তেলের রাজা দম পেড্রো যখন
গ্রেনেডার রাজার সম্পত্তি হস্তগত করেন, তখন এই রত্নটি লুটের মালের মধ্যে ছিল। এটি
একটি এবড়ো থেবড়ো রত্ন, মাঝখানে একটি ছিদ্র আছে। ধারণা করা হয়, এটি এক সময় গলায়
ঝুলিয়ে পড়া হতো।