বায়োস
BIOS
আইবিএম পার্সোনাল কম্পিউটারে উপযোগী, কম্পিউটার একটি উপাদান।
BIOS
শব্দটি
basic input/output system
-এর
সংক্ষিপ্ত রূপ। এর অপরাপর নাম
–System BIOS, ROM BIOS।
বর্তমানে কম্পিউটারে এটি সাধারণভাবে ব্যবহার্য উপকরণ হিসাবে বিবেচিত হয়। বায়োস
তৈরি করেছিলেন গ্রে কিল্ডাল
Gary Kildall)
নামক একজন গবেষক। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সিপি/এম
(CP/M
)
নামক পরিচালন পদ্ধতিতে
(অপারেটিং সিসটেম)
বায়োস প্রথম ব্যবহার করা শুরু হয়।
কম্পিউটার তৈরি শুরুর দিকে বায়োস
কম্পিউটারে প্রবেশ করতো ফ্লপি ডিস্ক থেকে। কারণ, এই সময়ের কম্পিউটারগুলোর
অভ্যন্তরে এমন কোনো অংশে সংরক্ষিত থাকতো না। বর্তমানে কম্পিউটারে মাদারবোর্ডের
একটি সুনির্দিষ্ট অংশে বায়োস সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই অংশের ভিতরে
সুনির্দিষ্ট নির্দেশন প্রদানকারী কিছু সঙ্কেতের সেট থাকে। একে বলা হয়
ফার্মওয়্যার । কম্পিউটারে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে, বোতাম টিপে কম্পিউটার
চালু করা হয়, তখনই এর কম্পিউটার চালু হওয়ার উপযোগী ফার্মওয়ার বায়োস থেকে
র্যামে চলে আসে। এই ফার্মওয়্যারটকে সাধারণভাবে বলা হয় বুট ফার্মওয়্যার
(boot firmware
)। এর
মাধ্যমে কম্পিউটারের উপকরণগুলো যথাযথভাবে কম্পিউটার সিসটেমে আছে কিনা তা
পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমকে বলা হয় বিদ্যুৎপ্রাপ্তি উত্তর
স্বয়ং-পরীক্ষণ
(power-on self-test)
।
এই পরীক্ষণে দেখা হয়, দৃশ্য-প্রদর্শক কার্ড
(video display card
কীবোর্ড,
মাউস,
হার্ডডিস্ক ড্রাইভ,
আলোকসংবেদী ডিস্ক ড্রাইভ
এবং মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত অন্যান্য উপকরণাদি। প্রাথমিক এই পরীক্ষণের পর,
কম্পিউটারের কার্যোপযোগী প্রোগ্রাম হিসাবে একটি নির্দেশনা সেট খোঁজে। একে বলা
হয় বুট লোডার সফটওয়্যার। যেকোনো চালু কম্পিউটারে এই অংশটি সাধারণ হার্ডডিস্কে পরিচালন
পদ্ধতির (os)
সাথে থাকে। কম্পিউটারে পরিচালন পদ্ধতি সংস্থাপনের সময় সিডি বা ডিভিডি বা এই
জাতীয় মাধ্যম থেকে গ্রহণ করা হয়।
কম্পিউটার ভেদে বায়োস-চিপ কম্পিউটারের
মডেল ভেদে ভিন্ন ভিন্ন রকমের হতে পারে। কম্পিউটারে ক্রম বিবর্তনের ধারায়
কম্পিউটারের অন্যান্য উপকরণের মতোই বায়োসেরও উন্নতি ঘটেছে। আধুনিক
কম্পিউটারগুলোতে বায়োস-চিপ কম্পিউটারের মাদারবোর্ড থেকে প্রতিস্থাপিত না করেই
ভিতরের ফার্মওয়্যার পুনরায় লেখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা
যাতে নিজেদের পছন্দসই উপকরণাদিকে নিজেদের কম্পিউটারে ব্যবহার করতে পারে, তার
জন্য একটি ব্যবহারিক পত্র (user interface
=UI) বায়োসের সাথে পায়। কম্পিউটার
চালু করার সাথে সাথে কীবোর্ড থেকে এক বা একাধিক কী চেপে এই ইন্টাফেসে
প্রবেশ করা যায়। এখান থেকে একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারী সেসকল বিষয় নির্ধারণ করে
দিতে পারবে, তা হলো–
-
কম্পিউটারে সাথে যুক্ত হার্ডওয়্যার উপকরণাদির বিন্যাসন
- কম্পিউটারে সাথে
যুক্ত সিস্টেম ঘড়ি নিয়ন্ত্রন
- কোনো বিশেষ উপকরণকে চালু রাখা বা বন্ধ করা।
- প্রবেশসঙ্কেত (password
) দিয়ে কম্পিউটারে ব্যবহারকারীর
নিয়ন্ত্রণ।
কম্পিউটারে অনেক
উপকরণ আছে, যেগুলোর সাথে নিজস্ব বায়োস থাকে। কম্পিউটারে রক্ষিত বায়োসের সাথে এই
বায়োসের কোনো সংঘাত যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে অতিরক্ত উপকরণাদির বায়োসকে
তৈরি করা হয়ে থাকে।
১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বায়োস রাখা হতো রম (ROM)
বা পিরোম (PROM)
চিপের ভিতরে।এই বায়োস কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা পরিবর্তন করতে পারতেন না।
বর্তমানে বায়োস ফার্মওয়্যারকে সাধারণভাবে
EEPROM
(electrically
erasable PROM) বা ফ্লাশ স্মৃতিতে (flash memory)
রাখা হয়। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে বায়োসের জন্য এই ব্যবস্থা কার্যকরীভাবে গ্রহণ করা
হয়েছে।