(১৯০৬-১৯৮৪)
কবি, সাহিত্য-সমালোচক ও ছান্দসিক।
১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার
আড়াইসিধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাজী আফসারউদ্দীন ছিলেন ব্যবসায়ী। শৈশবে মাতৃহারা হওয়ার কারণে পিতার তত্ত্বাবধানেই তিনি বড় হন।
১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাঁচটি বিষয়ে লেটারসহ ম্যাট্রিক পাস করেন।
১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। এরপর তিনি বি.এ. পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সম্ভবত ১৯২৭-২৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বিএ পাশ করেছিলেন।
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় মুসলিম সাহিত্য সমাজের যে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন সংঘটিত হয়,
তিনি তাঁর অন্যতম সদস্য ছিলেন।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপত্র বার্ষিক 'শিখা' পত্রিকা
প্রকাশিত হয়। তিনি পত্রিকার প্রকাশক ছিলেন।
১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় বিখ্যাত সওগাত পত্রিকায় সম্পাদনা বিভাগে চাকরি নেন।
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা করপোরেশনের একটি প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
এই বছরে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় জয়তী নামে একটি মাসিক পত্রিকা।
১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর সম্পাদিত জয়তী পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নবশক্তি পত্রিকার সম্পাদনা শুরু করেন।
১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে কমরেড মুজাফ্ফর আহমদের কন্যা আফিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন।
১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতার যুগান্তর পত্রিকায় যোগ দেন।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে দৈনিক নবযুগ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক নিযুক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে সরকারের প্রচার সংস্থার বাংলা অনুবাদক পদে যোগ দেন।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে সাপ্তাহিক মোহাম্মদী ও অর্ধ-সাপ্তাহিক পয়গাম পত্রিকায় চাকরি করেন।
এই বছরে তিনি কলকাতা করপোরেশনের প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ ত্যাগ করেন।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাক-ভারত বিভাজনের পর ঢাকা চলে আসেন। সাপ্তাহিক পয়গাম পত্রিকায়
যোগদান করেন।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের মুখপত্র মাসিক বিখ্যাত মাহেনও পত্রিকায়
সম্পাদক হিসেবে
যুক্ত হন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এই পত্রিকার সম্পাদনা করেন।
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের প্রকাশনা কর্মকতা হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন তিনি সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার
(১৯৬৩)
- একুশে পদক (১৯৭৬)
- মুক্তধারা পুরস্কার প্রভৃতি লাভ করেন।
- নজরুল একাডেমী স্বর্ণপদক (১৯৭৭)
- কুমিল্লা ফাউন্ডেশন পদক (১৯৭৭)
- মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৭৭) মুক্তধারা
পুরস্কার লাভ করেন।
'আবদুল কাদেরের রচিত গ্রন্থাবলি
- দিলরুবা (কাব্য) (১৯৩৩)
- বাংলা কাব্যের ইতিহাস : মুসলিম সাধনার ধারা (১৯৪৪) -গবেষণা গ্রন্থ
- উত্তর বসন্ত (কাব্য) (১৯৬৭)
- কবি নজরুল (১৯৭০), জীবনী
- মওলানা মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন (১৯৭৯) - জীবনী
- ছন্দ সমীক্ষণ (১৭৭৯) সাহিত্যালোচনা
- কাজী আবদুল ওদুদ (১৯৭৬)- জীবনী
- বাংলা ছন্দের ইতিবৃত্ত (১৯৮৫)
- যুগকবি নজরুল (১৯৮৬)
- লোকায়ত সাহিত্য (১৯৮৫)
সম্পাদনা
- কাব্য মালঞ্চ (১৯৪৫)
- ইয়াকুব আলী চৌধুরী রচনাবলি (১৯৬৩)
- মুসলিম সাহিত্যের সেরা গল্প
- নজরুল রচনাবলি (প্রথম খণ্ড-পঞ্চম খণ্ড) (১৯৬৬-১৯৮৪)
- শিরাজী রচনাবলি (১৯৬৭)
- কাজী ইমদাদুল হক রচনাবলী (১৯৬৮)
- আবুল হুসেন রচনাবলী (১৯৬৮)
- লুৎফর রহমান রচনাবলী (১ম খণ্ড, ১৯৭২)
- রোকেয়া রচনাবলী (১৯৭৩)
- বাংলা সনেট (১৯৭৪)
সূত্র:
- বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭। সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত। পৃষ্ঠা- ৩২।
- https://bn.banglapedia.org/