প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে পদার্থবিদ্যায় অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর অধ্যাপক প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের সাহায্যে এডিংটনের Mathematical Theory of Relativity-র ওপর অধ্যয়ন করেন। অসুস্থতার কারণে তিনি এমএসসি পরীক্ষা না দিয়ে, তিনি বিভাগ পরিবর্তন করে ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে দর্শনে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন। এই সময় তিনি ভারতের বিখ্যাত দার্শনিক অধ্যাপক রাধাকৃষ্ণন ও অধ্যাপক কৃষ্ণচন্দ্র ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে Content of Error in Perception and Thought বিষয়ে গবেষণা করেন। পেশাগত জীবনে অল্পসময়ের জন্য তিনি প্রেসিডেন্সি ও কৃষ্ণনগর কলেজে অধ্যাপনা করেন।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর প্রথম বাংলা প্রবন্ধ
'বুদ্ধিবিভ্রাট ও অপরোক্ষানুভূতি' প্রকাশিত হয় ত্রৈমাসিক 'পরিচয়' পত্রিকায়
প্রকাশিত হয়। এই প্রবন্ধ রবীন্দ্রনাথ, প্রমথ চৌধুরী ও অতুলচন্দ্র
গুপ্ত-এর প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয় করেন। এরপর পত্রিকার সম্পাদক সুধীন্দ্রনাথ
দত্ত-এর উৎসাহে তিনি 'সুন্দর ও বাস্তব' শীর্ষক প্রবন্ধ রচনা করেন।
১৯৪০
খ্রিষ্টাব্দে হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সাথে তিনি 'আধুনিক বাংলা কাব্যে'-এর
সংকলন তৈরি করেন।
১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় ফ্যাসিস্ট-বিরোধী লেখক ও শিল্পী
সংঘ আয়োজিত প্রথম রাজ্য সম্মেলনে তিনি সভাপতিমণ্ডলীতে ছিলেন।
১৯৪৯
খ্রিষ্টাব্দে ফ্যাসিস্ট-বিরোধী লেখকগোষ্ঠীর সহসভাপতি হন।
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
বিশ্বভারতীতে গবেষণা ও অধ্যাপনার কাজে যোগদান করেন। তবে স্বাস্থ্যগত কারণে এই কাজ
বেশিদিন চালিয়ে যেতে পারেন নি।
১৯৫৪-৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তাঁকে রকফেলার ফাউন্ডেশনের
ফেলো নির্বাচিত করা হয়। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল 'মার্কসিস্ট থিওরি অব
ভ্যালু'।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ধীরেন্দ্রমোহন দত্তের কন্যা ও তাঁর ছাত্রী গৌরী
দত্তকে বিবাহ করেন।
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে কোয়েস্ট পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপার্টমেন্ট অব
ইন্ডিয়ান স্টাডিজ খোলা হলে, তিনি এর প্রথম বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর 'আধুনিকতা ও রবীন্দ্রনাথ' গ্রন্থটি কলকাতার
সাহিত্য-জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
১৯৬৯-৭১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সিমলার
ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ-এ ফেলোরূপে কর্মরত ছিলেন।
১৯৭০
খ্রিষ্টাব্দে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত বক্তৃতামালা Poetry and Truth নামে
প্রকাশিত হয়।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সমর্থন এবং
বুদ্ধিজীবীদের সহায়তাদান বিশেষভাবে স্মরণীয়।
১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর বিখ্যাত
গ্রন্থ 'পান্থজনের সখা' প্রকাশিত হয়।
১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পার্কিনসন রোগে
আক্রান্ত হন।
১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি:
১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি 'রবীন্দ্র
পুরস্কার' লাভ করেন।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লির 'সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার'
পান।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বভারতীর 'দেশিকোত্তম' উপাধি লাভ করেন।
১৯৮০
খ্রিষ্টাব্দে টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে 'রবীন্দ্র তত্ত্বনিধি' উপাধি প্রদান
করে।
তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ
১. আধুনিকতা ও রবীন্দ্রনাথ (১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দ)
২. পান্থজনের সখা (১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দ)
৩. পথের শেষ কোথায় (১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দ)
৪. গালিবের গজল থেকে। অনুবাদ (১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দ)
সূত্র:
সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান প্রথম
খণ্ড। জানুয়ারি ২০০২।