অন্নদাচরণ তর্কবাগীশ
বিশিষ্ট সংস্কৃত পণ্ডিত ও নৈয়ায়িক।

১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে [১২৮২ বঙ্গাব্দ] ফরিদপুর জেলার (ইদিলপুর পরগণা) মূলগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এঁর পিতা প্রসন্নচন্দ্র ভট্টাচার্য ছিলেন একজন সংস্কৃত পণ্ডিত।

শৈশবে পিতার কাছেই তিনি সংস্কৃত ভাষার প্রাথমিক পাঠ গ্রহণ করেন। পরে স্থানীয় চতুষ্পাঠীতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক পাঠ নেন। এরপর তৎকালীন ত্রিপুরা জেলার শিবচরণ সিদ্ধান্তবাগীশের কাছে কলাপব্যাকরণ অধ্যয়ন করেন। সরকারী পর্যায়ে পরীক্ষায় পাশ করে তিনি কাব্যতীর্থ উপাধি লাভ করেন। এরপর নবদ্বীপের বঙ্গবধুজননী সভা থেকে ন্যায়শাস্ত্রে পরীক্ষা দিয়ে স্বর্ণপদক-সহ 'তর্করত্ন' উপাধি পান। এখানে কিছুদিন কাটিয়ে তিনি উচ্চতর জ্ঞানলাভের জন্য কাশী যান এবং সীতারাম শাস্ত্রী কাছে ন্যায় শাস্ত্র শেখেন এবং তর্কবাগীশ উপাধি লাভ করেন। এরপর কাশীর মহামহোপাধ্যায় সুব্রহ্মণ্য শাস্ত্রীর কাছে সাংখ্য ও বেদান্ত অধ্যয়ন করেন।

কাশীর বাঙালিটোলায় একটি চতুষ্পাঠী স্থাপন করে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৮৯৬-১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দ [১৩০৩-১৩১৪ বঙ্গাব্দ] পর্যন্ত তিনি এই চতুষ্পাঠীতেই অধ্যাপনা করেছেন।

১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিজগ্রামে ফিরে আসেন এবং কিছু ছাত্র সংগ্রহ করে পাঠদান শুরু করেন। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে 'ইদিলপুর হিতৈষণী সভা' নামক একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানের তিনি আমৃত্যু সম্পাদক ছিলেন। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে [১৩০৮বঙ্গাব্দ] নদী ভাঙনে তাঁর বসতবাড়ি বিনষ্ট হয়। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে [১৩০৯ বঙ্গাব্দ] তিনি পাশের গ্রাম ধীপুর গ্রামে চলে আসেন এবং এখানে একটি চতুষ্পাঠী স্থাপন করেন। ১৩৫০ বঙ্গাব্দে ৪ কার্তিক [১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দ] তারিখে ধীপুরে মৃত্যুবরণ করেন।

তাঁর রচিত গ্রন্থ:
প্রভা । ব্যাপ্তিবদ্যানয়ের ব্যধিকরণ এবং ব্যাপ্ত্যনুগমের উপরে প্রসিদ্ধ টীকা গ্রন্থ।


সূত্র :
সংসদ বাঙালি অভিধান। প্রথম খণ্ড। সাহিত্য সংসদ। জানুয়ারি ২০০২।

http://www.banglapedia.org/HTB/100042.htm