অতুল বসু

চিত্রশিল্পী।


১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের ময়নসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক নিবাস ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের রসুনিয়া গ্রাম। পিতার নাম শশিকুমার বসু। ইনি ময়মনসিংহে চাকরি করার সময়, অতুল বসুর জন্ম হয়।

 

তাঁর শৈশবকাল ময়মনসিংহ শহরেই কেটেছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন-এর ময়মনসিংহ শাখায় তার প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয়। এরপর ১২ বৎসর বয়সে তিনি কলকাতার টেকনিক্যাল স্কুলে ভর্তি হন। কিশোর বয়সেই তিনি বিপ্লবী দলের সাথে যুক্ত হন। পরে তিনি রণদা গুপ্তের জুবিলি আর্ট একাডেমিতে ভর্তি হন। এর বছর তিনেক পর তিনি গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টসের ছাত্র হিসাবে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও পার্সি ব্রাউনের কাছে চিত্রকলা শেখেন। এখানকার ছাত্র থাকাকালীন সময়ে তিনি লন্ডনে অধ্যয়ন এবং ইউরোপ ভ্রমণের জন্য বৃত্তি পান। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে হেমেন্দ্রনাথ মজুমদার ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ আর্ট প্রতিষ্ঠা করার সময় অতুল বসু তাঁকে বিশেষভাবে সহায়তা দেন। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ভবানীচরণ লাহার সহযোগিতায় তিনি সোসাইটি অফ ফাইন আর্টস প্রতিষ্ঠা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'গুরুপ্রসন্ন বৃত্তি পেয়ে লণ্ডন রয়্যাল একাডেমির ছাত্র হন। এখানে তাঁর কাজের জন্য ;আইভর' পুরস্কার লাভ করেন। দেশে ফিরে ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রদোৎকুমার ঠাকুর কর্তৃক একাডেমি অফ ফাইন আর্টস প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। মূলত তিনি ছিলে এই প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম-প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। ১৯৪৫-৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টসের অধ্যক্ষ ছিলেন।

 

তাঁর অঙ্কনরীতিটি ছিল পাশ্চাত্য রীতি দ্বারা প্রভাবিত। ইনি সারা জীবনে অসংখ্য ছবি এঁকেছেন। স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আবক্ষ প্রতিমূর্তি এবং নোয়াখালীর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়ে গান্ধীজীর চিন্তামগ্ন চিত্র বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।  তাঁর আঁকা বহু প্রতিকৃতি লণ্ডনের বার্কিংহাম প্রাসাদে রক্ষিত আছে।

 

১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুলাইতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 


সূত্র :
বাংলাপিডিয়া প্রথম খণ্ড। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। চৈত্র ১৪০৯/মার্চ ২০০৩।
সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড। জানুয়ারি ২০০২।