বিদ্যায়লেয় অধ্যায়নের সময় থেকে ইনি সঙ্গীত শিক্ষা শুরু করেন। এই সময় ইনি যাত্রাগান ও কবিগানের প্রতি বিশেষভাবে আসক্ত হয়ে পড়েন। ইনি এই সব আসরে গান বাড়িতে অভ্যাসও করতেন। গানের কোনো অংশ ভুলে গেলে ইনি ভুলে যাওয়া অংশ নিজেই রচনা করে নিতেন। মূলত এরই মধ্য দিয়ে তাঁর কবিতা রচনার পাঠ শুরু হয়েছিল। এর পাশাপাশি ইনি প্রবন্ধ রচনাও করেছেন। ইনি মূলত কবি হিসাবে সুপরিচিত হলেও- তাঁর প্রথম প্রকাশিত রচনাটি ছিল প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধটির নাম ছিল- স্বপ্নদর্শন।
১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে বিবাহ করেন। স্ত্রীর নাম ছিল অভয়া।
বিবাহের চার বৎসর পর, সন্তান প্রসবকালে ইনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে ইনি
নবীনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের দ্বিতীয়া কন্যা কাদম্বরী দেবীকে বিবাহ করেন।
ইনি শেষ জীবনে বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত হন। ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ,
১৩০১ বঙ্গাব্দ) তারিখে ইনি মৃত্যবরণ করেন।
কলকাতার জোড়সাঁকোর ঠাকুর পরিবারে ইনি কবি হিসাবে সমাদৃত ছিলেন। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
তাঁকে পুত্রের মতো স্নেহ করতেন। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী কাদম্বরী দেবী এঁর
বিশেষ অনুরক্তা ছিলেন। কাব্য রচনার ক্ষমতায় কিশোর রবীন্দ্রনাথ যে কখনোই বিহারীলালের
সমকক্ষ নন এ নিয়ে কাদম্বরী দেবীর অনেক বাক্যাঘাত রবীন্দ্রনাথকে সহ্য করতে হয়েছে।
প্রথম দিকের রচনায় কাদম্বরী দেবীর উৎসাহে রবীন্দ্রনাথ বিহারীলালের রচনার দ্বারা
প্রভাবিত হয়েছিলেন।
বিহারীলাল একাধিক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। এর ভিতরে অধোবন্ধু নামক পত্রিকাটি
সাহিত্য মহলে সে সময়ে বিশেষ সাড়া জাগিয়েছিল।
রচনাবলী :
১. স্বপ্নদর্শন (১৮৫৮)
২. সঙ্গীত-শতক (১৮৬২)
৩. বঙ্গসুন্দরী (১৮৭০)
৪. নিসর্গদর্শন (১৯৭০)
৫. বন্ধুবিয়োগ (১৮৭০)
৬. প্রেম প্রবাহিনী (১৮৭০)
৭. সারদামঙ্গল (১৮৭৯)
৮. সাধের আসন চতুর্থ সর্গ পর্যন্ত (১২৯৫-১২৯৬ খ্রিষ্টাব্দে মালঞ্চ পত্রিকায়
প্রকাশিত হয়েছিল।)