দত্তিল
খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয়-তৃতীয় শতাব্দী
অন্যান্য নাম ধূতিল, দণ্ডিল।
ভরতের নাট্যশাস্ত্রে প্রথম অধ্যয়ের ২৬-৩৯ শ্লোকসমূহে ভরতের একশত
পুত্রের নাম পাওয়া যায়। এঁদের ভিতর দত্তিলের নাম পাওয়া যায়। ব্রহ্মার আদেশ
ভরত তাঁর পুত্রদের নিয়ে নাট্যশাস্ত্র প্রণয়ন করেছিলেন।
ভরতের পুত্র হিসেবে ধারণা করা হয় দত্তিল খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় শতাব্দীর
ব্যক্তি ছিলেন। নাট্যশাস্ত্রের প্রথম অধ্যায় থেকে জানা যায়- ভরত তাঁর পুত্রদের
নাট্যশাস্ত্রের শিক্ষা দিয়েছিলেন।
১তিনি নারদের অনুসরণে স্বরমণ্ডলের
বিশ্লেষণ করেছেন। আর ভরতের অনুসরণে ২২টি শ্রুতি, মূর্চ্ছনা, গ্রাম, সাধারণ
জাতি, বর্ণ রস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ভরতের অনুসরণে
তিনি বিকৃত স্বর হিসেবে- কাকলি নিষাদ ও অন্তর গান্ধারের উল্লেখ করেছেন। তাঁর গ্রন্থে
৮৪টি তান, ১০টি রাগত্ব ধর্ম, গ্রহস্বর, তার, মন্দ্র, ষাড়ব
ঔড়ব, অল্পত্ব, গ্রহ, অংশ, ন্যাস অপন্যাস ইত্যাদী রাগের উপাদানসমূহের
উল্লেখ আছে। তিনি বাদী এবং
অংশস্বরের বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। জাতিগানে ভরত গান ভেদে একাধিক অংশস্বরের কথা
বলেছেন। কিন্তু দত্তিল প্রতিটি ১৮টি জাতিগানের প্রত্যেকটির জন্য একটি মাত্র
অংশস্বরের কথা বলেছেন।
তিনি তালের উপাদান এবং ৭টি তালের (আবাপ, নিষ্ক্রাম,
বিক্ষেপ, প্রবেসন, তাল, শম্যা, সন্নিপাত) বিশ্লেষণ করেছেন।
তিনি তালের কলা, পাত, পাদভাগ. মাত্রা, পরিবর্ত, বস্তু, বিদারী, অঙ্গুলি, পাণি, যতি
ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেছেন। কলা সম্পর্কে লিখেছেন- নিমেষকালকে কলা বলা হয়। কলা তিন
প্রকার (চিত্রা, বার্তিক ও দক্ষিণ)। ভরতের মতো তিনিও উল্লেখ করেছেন- চিত্রায়
দুটি, বার্তিকে চারটি এবং দক্ষিণে ৮টি কলা থাকে।
নাটকে ব্যবহৃত নিবন্ধগীত হিসেবে মদ্রক, অপরান্তক, উল্লোপক, প্রকরী, ওবেণক, রোবিন্দক,
উত্তর, বর্ধমানক, আসারিত এবং মাগধী গীতরীতির বর্ণনা করেছেন।
সূত্র:
- সংগীত মণীষা, প্রথম খণ্ড।
অমল দাশশর্মা। কেপি বাগচী এ্যান্ড কোম্পানি। কলকাতা। ১৯৭৯।
- নাট্যশাস্ত্র (প্রথম
খণ্ড)। ভরত। বঙ্গানুবাদ: ডঃ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডঃ ছন্দা চক্রবর্তী।
নবপত্র প্রকাশন।ডিসেম্বর ২০১৪। পৃষ্ঠা: ১৯