গণেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(১৮৪১-১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দ)

ব্রিটিশ ভারতের জাতীয়তাবাদী কর্মী, গীতিকার, সংগঠক।

 

১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দে কোলকাতার জোড়াসাঁকোস্থ ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম গিরীন্দ্রনাথ ঠাকুর (দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাই), মায়ের নাম যোগমায়া দেবী।
 

তিনি হিন্দু কলেজের ছাত্র ছিলেন। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রবেশিকা পরীক্ষায় তিনি এবং দেবেন্দ্রনাথের দ্বিতীয় পুত্র সত্যেন্দ্রনাথ উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এরপর গণেন্দ্রনাথ আর কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন নি। প্রথাগত লেখাপড়া বাদ দিয়ে তিনি শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠেন।

১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর বিবাহ হয় স্বর্ণকুমারী দেবীর সাথে। স্বর্ণকুমারী একটি পুত্রের অকাল প্রসব করেন। পরে দ্বিতীয় কোনো সন্তান জন্মের আগেই গণেন্দ্রনাথ মারা যান (২৮ বৎসর বয়সে)।


১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁরই উদ্যোগে জোড়াসাঁকো নাট্যশালা প্রতিষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, এই মঞ্চে প্রথম অভিনীত হয়েছিল মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'কৃষ্ণকুমারী'। বাংলায় ভালো নাটক লেখায় লেখকেদের উৎসাহিত করার জন্য, তিনি একটি পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। রামানারায়ণ তর্কালঙ্কার তাঁর 'নবনাটক' রচনার জন্য তাঁর কাছ থেকে ২০০ টাকা পুরস্কার লাভ করেন এবং নাটকটির ১০০০ কপি মুদ্রণের ব্যয়ভার বহন করেন।

 

১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁরই উদ্যোগে 'হিন্দু মেলা' প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই মেলার তৃতীয় অধিবেশন (১৮৬৯) পর্যন্ত তিনি সম্পাদক ছিলেন। ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দের দ্বিতীয় মেলা উপলক্ষে তিনি রচনা করেছিলেন 'লজ্জায় ভারত যশ গাহিব কি করে' গানটি। ১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দের শুরু দিকে তিনি কালিদাসের 'বিক্রমোর্বশীয়' বাংলায় অনুবাদের কাজ শেষ করেন।

১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে (
১২৭৬ বঙ্গাব্দের ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ) কলেরাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

 



সূত্র :