গোপাল উড়ে

খ্রিষ্টীয় বিংশ শতাব্দীর পালাগানের অভিনেতা ও পালাগান রচয়িতা।

 

উড়িষ্যার কটক জেলার জাজপুর গ্রামের এক চাষী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মুকুন্দ। এঁর তিন পুত্রের ভিতর গোপাল ছিলেন মধ্যম। 

 

তরুণ বয়সে জীবিকার জন্য তিনি কলকাতা আসেন। এখানে এসে ফল ফেরি করার ব্যবসা শুরু করেন। একদিন বিদ্যাসুন্দর যাত্রাদলের কর্ণধার বিশ্বনাথ মতিলাল গোপালের উচ্চস্বরে ফল বিক্রয়ের হাঁক শুনে ডেকে আনেন। এরপর যাত্রাদলের গানের মাস্টার মশাইদের কাছে গান শেখানোর জন্য পাঠান। নিজ প্রতিভাগুণে তিনি এই যাত্রাদলের অভিনেতা এবং গায়ক হিসেবে দলভুক্ত হন। এই সময় তিনি ভালো বাংলা বলতে পারতেন না। প্রায় দুই বৎসর চেষ্টার পর, তিনি মঞ্চে নামার অধিকার লাভ করেন। এই সময় রাধারমন সরকারের নেতৃত্বে যাত্রাগানের আসর বসে রাজা নবকৃষ্ণের বাড়িতে। এই আসরে গোপাল মালিনীর ভূমিকায় অভিনয় ও গান করেছিলেন। প্রথম আসরেই তিনি প্রশংসিত হন। এই সূত্রে গোপালের বেতন নির্ধারিত হয় মাসিক ৫০ টাকা। এরপর থেকে বিভিন্ন আসরে নেমে গোপাল উড়ে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। রাধারমন সরকারের মৃত্যুর পর এই যাত্রাদল ভেঙে যায়। এরপর গোপাল নতুন আঙ্গিকে একটি যাত্রাপালার দল করেন। এই দলের সূত্রে তিনি সুনাম এবং সম্পদের অধিকারী হন।  দুর্গাদাস লাহিড়ি সম্পাদিত বাঙালির গান গ্রন্থে তাঁর  ৩৩৯টি গানের নমুনা পাওয়া যায়।



সূত্র :
বাঙালির গান। দুর্গাদাস লাহিড়ি সম্পাদিত। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাডেমি, এপ্রিল ২০১। পৃষ্ঠা: ৩৬০-৪০০।