গুণরাজ খান মালাধর বসু
মধ্যযুগীয় কবি। প্রকৃত নাম মালাধর বসু। গৌড়ের সুলতান তাঁর কাব্য পাঠ করে, এই উপাধি প্রদান করেন। তাঁর রচিত 'শ্রীকৃষ্ণ বিজয়' -এর বিভিন্ন অংশের ভণিতায় গুণরাজ খান এবং মালাধর বসু নাম ব্যবহার করা হয়েছ।

মালাধর বসু জন্মগ্রহণ করেছিলে বর্ধমান জেলার অন্তর্গত জামালপুর থানার কুলীন গ্রামে। পিতার নাম ভগীরথ এবং মায়ের নাম ইন্দুমতী। তাঁর বংশলিতকা অনুসারে জানা যায় যে, আদিশূরের যজ্ঞে কান্যকুব্জ থেকে যে পাঁচজন কায়স্থ বঙ্গদেশে এসেছিলেন, তাঁদের একজন ছিলেন দশরথ। দশরথের ত্রয়োদশতম অধ্স্তন পুরুষ ছিলেন 'গুণরাজ খাঁ'। উল্লেখ্য বংশলতিকায় 'মালাধর বসু' নামটি পাওয়া যায় না।
 
উল্লেখ্য ১৪৫৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৪৭৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত গৌড়ের সিংহাসনে ছিলেন রুকনউদ্দিন খান বরবক্ শাহ্। তাঁর রাজত্বকালের শেষে, ১৪৭৩ খ্রিষ্টাব্দে মালাধর বসু ভাগবত অনুবাদ শুরু করেছিলেন। ১৪৭৪ খ্রিষ্টাব্দে রুকনদ্দিন-এর মৃত্যুর পর পুত্র সামসউদ্দিন রাজত্ব লাভ করেন। তিনি রাজত্ব করেন ১৪৮১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। সামসউদ্দিনের সাহিত্যে অনুরাগ ছিল প্রবলভাবে। মালাধর বসু 'শ্রীকৃষ্ণ বিজয়' রচনা করেছিলেন ১৪৭৩ থেকে ১৪৮০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে। সামসউদ্দিন তাঁর কাব্য প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে 'গুণরাজ খান' উপাধি দেন।

যদিও এই কাব্যকে ভাগবতের অনুবাদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূলত এই গ্রন্থটিতে তিনি ভাগবতের ১০ ও ১১ স্কন্ধ অনুবাদ যুক্ত করেছিলেন। অবশিষ্ট অংশ ছিল প্রচলিত শ্রীকৃষ্ণের লীলাভিত্তিক কাহিনি।

সূত্র: