কালিদাস
খ্রিষ্টীয় চতুর্থ বা পঞ্চম শতাব্দীর সংস্কৃত ভাষার কবি ও নাট্যকার।

তাঁর সম্পর্কে বিশেষ নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় না। তাঁর রচিত নাটকের চরিত্রসমূহের ঐতিহাসিক কালের বিচারে, কালিদাসের সময় সম্পর্কে দুটি মত পাওয়া যায়। প্রথম মতে, তিনি খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকে বিদ্যমান ছিলেন। তাঁর রচিত মালবিকাগ্নিমিত্রম্ নাটকের নায়ক অগ্নিমিত্র ছিলেন শুঙ্গবংশীয় রাজা। এই রাজারে শাসনকাল ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১৮৫-৪৮ অব্দ। অপর মতে, তার সময়কাল খ্রিষ্টীয় চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শতকের মধ্যে। বিক্রমাদিত্য নামে পরিচিত গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সভাকবি হিসাবেই তাঁর খ্যাতি সমধিক ছিল। কালিদাসের বহু রচনায় দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজ্য, রাজধানী উজ্জয়িনী ও রাজসভার উল্লেখ পাওয়া যায়। সপ্তম শতাব্দীতে বাণভট্ট রচিত হর্ষচরিত গ্রন্থে কালিদাসের সপ্রশংস উল্লেখ আছে। সবমিলিয়ে খ্রিষ্টীয় চতুর্থ বা পঞ্চম শতাব্দীর কবি হিসেবে তাঁকে মান্য করা হয়।

কালিদাসের জন্মস্থান নিয়েও বিতর্ক আছে। কোনো কোনো মতে তিনি হিমালয়ের কাছাকাছি কোনো অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন। কোনো কোনো মতে তিনি উজ্জয়িনী অথবা কলিঙ্গের অধিবাসী ছিলেন। মূলত কুমারসম্ভবম্‌ গ্রন্থে হিমালয়ের বর্ণনা, মেঘদূত গ্রন্থে প্রকাশিত উজ্জয়িনীর প্রতি তার ভালবাসা এবং রঘুবংশম্‌ গ্রন্থে বর্ণিত কলিঙ্গ-সম্রাট হেমাঙ্গদের স্তুতিবাদের কারণে- এই তিনটি স্থানকে তাঁর জন্মস্থান বা বাসস্থান হিসেবে ধরা হয়।
 
কিংবদন্তি আছে, তিনি দেবী কালীর এবং সরস্বতীর ভক্ত ছিলেন। তিনি প্রথম জীবনে নিরক্ষর ছিলেন। ঘটনাক্রমে  এক বিদূষী রাজকন্যার সঙ্গে তার বিবাহ হয়েছিল। মূর্খ বলে  রাজকন্যা তাঁকে অপমান করলে, তিনি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে যান। এই সময় দেবী সরস্বতী তাঁকে রক্ষা করেন ও বর দেনদেবীর বরে তিনি কবিত্বশক্তি অর্জন করেন। পরে রাজা বিক্রমাদিত্যের নবরত্ন সভায় তার স্থান হয়। কথিত আছে, রাজা কুমারদাসের রাজত্বকালে সিংহলে এক গণিকার হাতে তিনি নিহত হন।

তাঁর রচিত গ্রন্থাদি: