কমলাকান্ত ভট্টাচার্য
(আনুমানিক ১৭৭২-১৮২১
খ্রিষ্টাব্দ)
প্রখ্যাত কালীসাধক ও
শ্যামাসঙ্গীত রচয়িতা।
আনুমানিক ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে বর্ধমান জেলার অন্তর্গত অম্বিকা-কালনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতার নাম মহেশ্বর ভট্টাচার্য এবং মাতার নাম
মহামায়াদেবী।
কিশোর বয়সে তাঁর পিতার মৃত্যু হলে মা
মহামায়াদেবী দুই শিশু পুত্র কমলাকান্ত ও শ্যামাকান্তকে নিয়ে পিত্রালয়ে আসেন।
এখানে কমলাকান্ত স্থানীয় টোলে
কিছুদিন পাঠ গ্রহণ করেন। এই সময় থেকে তিনি কালী সাধনার
প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। এই সূত্রে তিনি শ্যামা সঙ্গীত রচনায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
কালীসাধক হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লে, বর্ধমানের রাজা তেজচাঁদ বর্ধমান
শহরের কোহলহাটে তাঁর জন্য একটি বসতবাড়ি তৈরি করে দেন। এছাড়া
বর্ধমানের মহারাজা তাঁর বখে
যাওয়া পুত্র প্রতাপচন্দ্রকে শিক্ষা দীক্ষায় উপযুক্ত করে তোলার জন্য
কমলাকান্তকে নিয়োগ দেন। এরপর মহারাজ
তেজচন্দ্র কোটালহাটে কমলাকান্তের সাধন ভজনের জন্য মন্দির করে দেন। সেখানে কমলাকান্ত
কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পঞ্চমুন্ডীর আসনে বসে সাধনা করতেন। ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে কমলাকান্ত মৃত্যুবরণ করেন।
এই সাধনার পাশাপাশি তিনি ভারতীয় আধা-শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ধারা
হিসেবে টপ্পা শিখেছিলেন। তিনি তাঁর গানে রামপ্রসাদী সুরের সাথে টপ্পাকে সুনিপুণভাবে
প্রয়োগ করেছিলেন। ধারণা করা হয়, তিনি শতাধিক শ্যামাসঙ্গীত রচনা করেছিলেন।
তবে তাঁর রচিত অনেক গান হারিয়ে গেছে।
দুর্গাদাস লাহিড়ি
সম্পাদিত বাঙালির গান গ্রন্থে তাঁর
৭৯টি গানের নমুনা পাওয়া যায়।