লীলা মজুমদার
লেখিকা।
১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে ফেব্রুয়ারিতে ইনি কলকাতার গড়পাড় সড়কস্থ বাসভবনে
জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম প্রমদরঞ্জন রায় এবং মায়ের নাম সুরমাদেবী। এই
সূত্রে তাঁর বিবাহপূর্ব নাম ছিল লীলা রায়। পরিবারের অন্যান্য প্রখ্যাত
ব্যাক্তিরা ছিলেন–
প্রখ্যাত কিশোর সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন তাঁর কাকা,
প্রখ্যাত শিশু-কিশোর সাহিত্যিক সুকুমার রায়চৌধুরী ছিলেন খুড়তুতো ভাই এবং
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যাজিৎ রায় ছিলেন– ভাইপো।
এঁর শৈশব অতিবাহিত হয়েছিল শিলং-এ। এখানে তিনি ১৯১৯ সাল পর্যন্ত লরেটো
কনভেন্টে
Loreto Convent তিনি পড়াশোনা করেন। ১৯১৯ সালে তাঁর পিতা কলকাতায়
চলে এলে, ইনি সেন্ট জন'স ডাইয়োসেসান স্কুলে ভর্তি হন এবং এখান থেকে ১৯২৪
সালে মেয়েদের ভিতর দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর ইনি
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষায় বিএ অনার্স এবং এমএ পাশ করেন।
উল্লেখ্য উভয় পরীক্ষাতেই তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজী পরীক্ষায় তিনি ইংরাজীতে সর্বোচ্চ নম্বর
অর্জন করেন।
১৯৩১ সালে তিনি
দার্জিলি-এর মহারাণী বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে
যোগদান করেন। এরপর রবীন্দ্রনাথের অনুরোধে তিনি শান্তিনিকেতন স্কুলে চলে
আসেন। এখানে এক বৎসর থাকার পর তিনি কলকাতার অস্টাস কলেজের মহিলা শাখায় যোগ
দেন। এখানেও তিনি বেশি থাকেন নি। মাঝে কিছুদিন তিনি অল-ইন্ডিয়া রেডিতে
সাত-আট বৎসর কাজ করেছেন।
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত দন্ত-চিকিৎসক সুধীরকুমার মজুমাদারের সাথে বিবাহ হয়।
১৯৩৪ সালে পুত্র রঞ্জন এবং ১৯৩৮ সালে কন্যা কমলা জন্মগ্রহণ করে।
মূলত তাঁর বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত হয়েছে– লেখালেখির কাজে। তাঁর প্রথম গল্প
লক্ষীছাড়া ১৯২২ সালে সন্দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৬১ সালে সত্যজিৎ রায় সন্দেশ পত্রিকা পুনরায় প্রকাশ শুরু করলে করলে তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৪
অবধি সাম্মানিক সহ-সম্পাদক হিসাবে পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, ১৯৯৪-এ
তাঁর স্বাস্থের অবনতির জন্য অবসর নেন।
২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ৫ এপ্রিলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রচনা হল:
বদ্যিনাথের বাগান (১৯৩৯)
দিন দুপুরে (১৯৪৮)
হলদে পাখির পালক
টং লিং
পদি পিসীর বর্মী বাক্স
সব ভুতুড়ে
পাকদণ্ডী (আত্মজীবনী)
পুরস্কার ও সম্মাননা
আর কোনো খানে (রবীন্দ্র পুরস্কার)
বক বধ পালা-এর জন্য (সঙ্গীত নাটক একাডমী পুরস্কার)
হলদে পাখির পালক-এর জন্য (স্টেট পুরস্কার, শিশু সাহিত্য পুরস্কার।