মিঠা আবুবক্কর ওসমান, মেজর জেনারেল
(১৯২৩-১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ)
পাকিস্তানি সেনাকর্মকর্তা। এঁর পুরো নাম আবুবক্কর ওসমান মিঠা। সাধারণ নামে মিঠ্‌ঠা খান বা মিঠা খান নামে পরিচিত ছিলেন।

১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জুন বোম্বের মেমোন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কেটেছে বোম্বাই শহরে। তাঁর পিতামহের ইচ্ছা ছিল, মিঠা তাঁদের পৈতৃক ব্যবসায়ে অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু তাঁর ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে যোগদান করা। এই কারণে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর, প্রিক্যাডেট একাডেমিতে ভর্তি হন। পরে তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অস্থায়ী কমিশন পদে নির্বাচিত হন। এই সময় তাঁর পিতামহ তাঁর বিবাহের জন্য পাত্রী ঠিক করেন। কিন্তু তিনি তাঁর পিতামহের ইচ্ছা অগ্রাহ্য করে ভারতের দেরাদুনে মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য চলে যান।

১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ শে জুন এই একাডেমি থেকে পাশ করার পর, তাঁকে ৪র্থ বোম্বে গ্রেনাডিয়ার-এর দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়ানে নিয়োগ দেওয়া হয়। এখানে তিনি স্বেচ্ছাসেবামূলক প্যারাসুট রেজিমেন্টে কাজ করেন। এরপর তাঁকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা রণাঙ্গনে পাঠানো হয়। এই সময় তিনি তাঁর বাহিনী নিয়ে বার্মা সীমান্তে অগ্রসরমান জাপানি সেনাবাহিনীর পিছনে প্যারসুটের সাহায্যে অবতরণ করেন। এই অভিযানে সফলতার জন্য ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে ডিসেম্বর তাঁকে সাবস্ট্যানিভ লেফট্যান্ট পদে উন্নীত করা হয়। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জুন, তিনি প্রাথমিকভাবে স্থায়ী কমিশন পদ পান। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের ১লা ডিসেম্বর লেফট্যান্ট পদে উন্নীত হন। এরপর ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মে নিয়মিত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে স্থান লাভ করেন।

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাক-ভারত বিভাজনের পর, মিঠা খান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। এরপর তিনি কোয়েটার আরমি স্টাফ কলেজ থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ করেন। এই সময় তিনি লাহোর সরকারি কলেজের অধ্যাপক গণেশ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা ইন্দু চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমে পড়েন। কিন্তু গণেশ চট্টোপাধ্যায় সপরিবারে দিল্লিতে চলে যাওয়াতে এই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়। চার বছর পরে ইন্দু তাঁর পিতামাতাকে ত্যাগ করে করাচিতে চলে আসেন এবং এঁদের বিবাহ হয়।

১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পাকিস্তানি কমান্ডো ইউনিটের সেনাকর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এই সময়ে পেশোয়ারের সেরাতে তিনি উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পূরব-পাকিস্তানে আসেন- অপারেশন সার্চলাইট-এর প্রারম্ভে। ডিসেম্বর মাসে তিনি কোয়াটার মাস্টার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইসলামাবাদে মৃত্যুবরণ করেন।