 মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী 
১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে নোয়াখালীর সোনাপুরের আহমদিয়া হাই ইংলিশ স্কুল থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন ও মেধা তালিকায় ৪র্থ স্থান লাভ করেন।
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা কলেজ (তৎকালীন ঢাকা 
	ইন্টারমিডিয়েট কলেজ) থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকায় প্রথম 
	স্থান লাভ করেন। এরপর তিনি কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে বাংলায় (সম্মান) ভর্তি 
	হন। কিছুদিন পর এই কলেজ ত্যাগ করে কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজে ইংরেজি অনার্স 
	পড়া শুরু করেন। পরে তিনি শান্তিনিকেতনে চলে যান ও 
	সেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস অনুসারে বাংলা (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি 
হন। 
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নন-কলেজিয়েট পরীক্ষার্থী হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের 
	স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় অংশ নেন ও প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। এ সাফল্যের জন্য 
	তাঁকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় “সুরেন্দ্রনলিনী স্বর্ণপদক” প্রদান করে। 
১৯৪৬-১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যায়ে মাস্টার্স পড়া শুরু করেন। 
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্র-ভবনের বৃত্তি লাভ করে 
সেখানে ফিরে যান। 
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্রনাথের জীবন ও সাহিত্য 
নিয়ে গবেষণা করে “সাহিত্যভারতী” উপাধি অর্জন করেন।
১৯৪৯ সালের নভেম্বরে তিনি শান্তিনিকেন্তন ছেড়ে 
ঢাকায় চলে আসেন ও রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রে পাণ্ডুলিপি রচয়িতা
(script writer) 
হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৫০ সালে জগন্নাথ কলেজে প্রভাষক পদে যোগ দেন। তিনি এসময় সেন্ট গ্রেগরিজ কলেজ 
(বর্তমান নটরডেম কলেজ)-এও খণ্ডকালীন অধ্যাপনা করেন। 
১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম 
হয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।
১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে 
	যোগ দেন।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে সৈয়দা তাহমিনা মনোয়ারা নুরুন্নাহারকে বিবাহ করেন। 
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ 
	ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ 
(School of Oriental and African 
	Studies)-এ ভাষাবিজ্ঞান অধ্যয়নের জন্য বৃত্তি লাভ করেন। সেখানে দুই বছর গবেষণা 
	করার পর কথ্য বাংলার শব্দের ছন্দোবিজ্ঞানের ওপর একটি অভিসন্দর্ভ লেখেন, কিন্তু 
	তাঁর গবেষণার ধরন তৎকালীন মার্কিন ধারার ভাষাবৈজ্ঞানিক গবেষণাপন্থার 
	অতিমাত্রায় অনুসারী ছিল বলে এই অভিসন্দর্ভটি প্রকাশের জন্য গৃহীত হয়নি। পরে 
	বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাংলা একাডেমী থেকে এটি প্রকাশ করা হয়।
১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁকে আবারও স্যার আশুতোষ 
	গোল্ড মেডেল দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ১০০ বছরের 
	ইতিহাসে তাঁর মত এত বেশি নম্বর পেয়ে কেউ বাংলা (সম্মান)-এ ডিগ্রী অর্জন করেন 
নি। 
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভাষাবিজ্ঞান 
পড়ার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এই বৎসর তাঁর প্রথম সন্তান 
সুমনের জন্ম হয়। 
১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় সন্তান শোভনের জন্ম হয়।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে সংবর্ধনা দেয়। একই বছরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা রীডার (পরবর্তীতে এ পদের নাম বদলে সহযোগী অধ্যাপক করা হয়) পদে নিযুক্ত হন।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রায় পুরো সময়টাই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডের বাসায় ছিলেন। ১০ ডিসেম্বরে তিনি ফুলার রোডের বাস ছেড়ে কেএম দাস লেনে শের-এ-বাংলার বাসায়। ডিসেম্বরের ১২-১৩ তারিখের দিকে তিনি ওই বাসা ছেড়ে তিনি তাঁর ছোট ভাই লুত্ফুল হায়দার চৌধুরীর শান্তিবাগের বাসায় উঠেন। ১৪ই ডিসেম্বর আল-বদর বাহিনী তাঁকে এই বাসা থেকে অপহরণ করে। এর পর তাঁর আর কোন খবর পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় ঐ দিনই তাঁকে হত্যা করা হয়।
তাঁর রচিত গ্রন্থাবলী
সূত্র :