GodfreyKneller আঁকা ছবি IsaacNewton-1689

নিউটন, স্যার আইজাক
(Sir Isaac Newton)
(১৬৪২-১৭২৭ খ্রিষ্টাব্দ)। গণিতজ্ঞ ও পদার্থবিজ্ঞানী।

ইংল্যাণ্ডের লিঙ্কনশায়ারের গ্রানথামের নিকটবর্তী উল্স্থর্প নামক গ্রামে ১৬৪২ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। এঁর পিতার নামও ছিল আইজাক নিউটন। নিউটনের জন্মে কয়েকমাস পূর্বে এঁর পিতা মৃত্যুবরণ করলে- এঁর মা হ্যানা নিউটন স্বামীর স্মৃতি হিসাবে পুত্রের নাম রেখেছিলেন আইজাক নিউটন।

নিউটনের দু'বছর বয়সের সময় এঁর মা নিকটস্থ গীর্জার পাদরি বার্নাবাস স্মিথকে বিবাহ করেন। এই বিবাহকালে তিনি তাঁর সকল সম্পত্তি নিউটনের নামে লিখে দেন। এই সময় তিনি উল্স্থর্প গ্রামে তাঁর মাতামহীর কাছে প্রতিপালিত হন। এই গ্রামের পাঠশালায় তাঁর শিক্ষাজীবনের শুরু হয়। ১২ বৎসর বয়স পর্যন্ত এই স্কুলে ছিলেন। এরপর তিনি নিকটস্থ গ্যানথাম শহরে গিয়ে কিংস নামক একটি স্কুলে ভর্তি হন। প্রথম দিকে ইনি উল্স্থর্প থেকে পায়ে হেটে গ্যানথাম স্কুলে যেতেন। পরে তাঁর মা ও নানী মিলে শহরের ক্লার্ক নামক এক ঔষধের দোকানদারের বাড়িতে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করে দেন। উল্লেখ্য এই দোকানদারের স্ত্রী নিউটনের মায়ের বান্ধবী ছিলেন। এর তিন বৎসর পর নিউটনের মা আবার বিধবা হন। এই ঘরে তাঁর একটি ছেলে (বেঞ্জামিন) ও দুটি মেয়ে (মেরি ও হ্যানা) জন্মেছিল। এরপর নিউটন তাঁর মাও সৎ ভাইবোনসহ একত্রে বসবাস শুরু করেন।

এই সময় নিউটনকে তাঁর মা স্কুল থেকে ছাড়িয়ে এনে মাঠের কাজে নিয়োজিত করলেন। কিন্তু নিউটন তাঁর ক্ষেত খামারের কাজের পাশাপাশি তাঁর বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পারিবারিক লাইব্রেরি থেকে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে থাকেন। এই সময় তিনি পড়াশুনার পাশাপাশি যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘরোয়া কাজ করতেন এবং ছবি আঁকার চেষ্টা করতে থাকেন। তিনি নিজের চেষ্টায় তৎকালীন বিস্ময়কর যন্ত্র বাষ্পীয় ইঞ্জিনের একটি মডেল এবং একটি জলঘড়ি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই সকল কাণ্ডখারখানা দেখে নিউটনের মা তাঁকে ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে স্কুলে আবার ভর্তি করে দেন।

১৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে স্কুল পাশ করে তিনি ইনি ক্যাম্বি্রজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তাঁর বিস্ময়কর গণিত প্রতিভার জন্য ১৬৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ট্রিনিটি কলেজে ফেলো অফ ট্রিনিটি নির্বাচিত হন। ১৬৬৯ খ্রিষ্টাব্দে লুকাশিয়ানে গণিতের অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন। ১৬৭১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি লণ্ডনের রয়াল সোসাইটির সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন। ১৬৭২ খ্রিষ্টাব্দের তাঁর প্রথম বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ আলোকবিজ্ঞান প্রকাশিত হয়। তৎকালীন বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী এ্যাডমন্ড হ্যালির অনুরোধে তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ১৬৮৪-১৬৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ প্রিন্সিপিকা। ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এই গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল।

১৬৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্লামেন্ট সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন। ১৬৯৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সরকারি টাকশালের ওয়ার্ডেন এবং পরে প্রধানপদ লাভ করেন। ১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রয়াল সোসাইটির সভাপতি নির্বাচিত হন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এই উভয়পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৭০৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি  নাইট খেতাব লাভ করেন।

মহাকর্ষীয় সূত্রাদি, আলোকবিজ্ঞান, ক্যালকুলাস প্রভৃতির উপর মৌলিক গবেষণার জন্য জীবদ্দশাতেই তিনি কিম্বদন্তীতূল্য ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন। যদিও ক্যালকুলাসের প্রথম আবিষ্কারের দাবিদার হিসাবে জার্মান বিজঝমানী লিয়েব্নিজ্-এর নাম শোনা যায়। তারপরেও সমালোচকেরা স্বীকার করেন যে ক্যালকুলাসের উপর তিনি দীর্ঘ সময় গবেষণা করে ফলাফল লাভে সমর্থ হয়েছিলেন। ১৭২৭ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মার্চ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।


তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য বই

1. Method of Fluxions (1671)
2. Of Natures Obvious Laws & Processes in Vegetation (unpublished, c. 1671–75)[40]
3. De Motu Corporum in Gyrum (1684)
4. Philosophiae Naturalis Principia Mathematica (1687)
5. Opticks (1704)
6. Reports as Master of the Mint (1701–25)
7. Arithmetica Universalis (1707)
8. The System of the World, Optical Lectures, The Chronology of Ancient Kingdoms, (Amended) and De mundi systemate (published posthumously in 1728)
9. Observations on Daniel and The Apocalypse of St. John (1733)
10. An Historical Account of Two Notable Corruptions of Scripture (1754)