 নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, 
পণ্ডিত
নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, 
পণ্ডিত
মাইহার ঘরানার প্রখ্যাত সেতার পণ্ডিত।
১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই অক্টোবর তিনি কলকাতার এক সংগীতপ্রেমী পরিবারে জন্মগ্রহণ 
করেন। তাঁর বাবা জীতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন শখের সেতারী। পিতার সেতার বাদন 
শুনে, তাঁর সেতার শেখার ইচ্ছা জাগে। তাঁর জিদের কাছে হার মেনে, তাঁর বাবা তাঁকে 
একটি ছোট সেতার কিনে দেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র চার বৎসর। মাত্র নয় বৎসর বৎসর 
বয়সে (১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ) তিনি ভারতের অল ইণ্ডিয়া সেতার বাদন প্রতিযোগিতায় 
শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন এবং অল ইণ্ডিয়া রেডিও-র তরুণতম শিল্পী হিসাবে অনুর্ভুক্ত হন। 
শিক্ষা জীবনে প্রথমে তিনি ওস্তাদ মোশতাক আলী খাঁ এবং পরে বাংলাদেশের গৌরীপুরের 
জমিদার বীরেন্দ্রকিশোর রায়ের কাছে তালিম নেন।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এরপর ওস্তাদ 
আলাউদ্দিন খাঁ-এর কাছে তালিম নিতে থাকেন। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর কাছে নাড়া বাঁধার 
পর তিনি ভোর চারটা থেকে মাঝে কিছু বিরতি দিয়ে রাত এগারটা পর্যন্ত তালিম চর্চা 
করতেন। 
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর কাছে তিনি শেখেন সেতার বাদনে— 
রুদ্রবীণা, সুরবাহার ও সুরশৃঙ্গারের নান্দনিক বীণবাজ-এর লম্বা আলাপ ও সূক্ষ্ম কাজের 
মিশ্রণ। তাঁর নিজের মতে ,তাঁর ওপর ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ, 
ওস্তাদ আমীর খাঁ,  পণ্ডিত ওঙ্কারনাথ ঠাকুর, ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁ ,কেশরবাঈ কেরকার 
ও রোশনারা বেগমের প্রভাব পড়েছিল। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর মৃত্যুর পর তিনি তাঁর পুত্র 
ওস্তাদ আলী আকবর খান ও কন্যা অন্নপূর্ণা দেবীর কাছে তালিম অব্যাহত রাখেন। 
মাইহার থেকে ফিরে তিনি দেশে-বিদেশে নানা অনুষ্ঠানে বাজানো শুরু করেন। 
১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে জানুয়ারি মাত্র ৫৪ বছর বয়সে চতুর্থবারের হৃদরোগে তিনি 
শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 
সম্মাননা
ভারত সরকার মরণোত্তর পদ্মভূষণ উপাধি দিয়ে এই কৃতী সঙ্গীতগুণীকে সম্মান জানিয়েছেন।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মশ্রী পুরস্কার পান।
১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কারে ভূষিত হন।
সূত্র:
পণ্ডিত নিখিল 
	বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারত বিচিত্রা, অক্টোবর ২০১৩