নরোত্তম দাস
১৫৩১-১৬১১ খ্রিষ্টাব্দ।
গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতাদর্শে পণ্ডিত ও প্রচারক।
১৫৩১ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান রাজশাহীর গোদাগাড়ীর গোপালপুরে
জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতা কৃষ্ণানন্দ দত্ত ছিলেন স্থানীয় জমিদার। মায়ের নাম নারায়ণী দেবী।
মাত্র ১৬ বৎসর বয়সে ১৫৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পৈত্রিক সম্পত্তির মায়া ত্যাগ করে বৈষ্ণব
ধর্মে দীক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে বৃন্দাবন যান। সেখানে তিনি দীক্ষা লাভের জন্য লোকনাথ
গোস্বামীর কাছে গেলে, প্রথমে লোকনাথ তাঁকে শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করে দীক্ষা
প্রদানে অস্বীকার করেন। নরোত্তম এতে নিরাশ না হয়ে একটি অভিনব কৌশলের আশ্রয় নেন।
প্রতিদিন সকালে লোকনাথ মলত্যাগ করতেন, আর নরোত্তম সেই মল গোপনে পরিষ্কার করে
রাখতেন। লোকনাথ
বিষয়টির কারণ বুঝতে না পেরে, একদিন নিজেকে গোপন করে মলত্যাগের স্থান পর্যবেক্ষণ
করেন। নরোত্তমের মল পরিষ্কারের সময় লোকনাথ তাঁকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং গুরুভক্তি
দেখে সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করে দীক্ষা দান করেন।
উল্লেখ্য নরোত্তমই লোকনাথ গোস্বামীর একমাত্র শিষ্য ছিলেন।
গুরুর কাছে দীক্ষা নেওয়ার পর তিনি বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার শুরু করেন। কিছুদিন পর তিনি
নিজগ্রামে ফিরে আসেন এবং খেতুরী বৈষ্ণব আশ্রম স্থাপন করেন। এই আশ্রম থেকেই তিনি
বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার করতে থাকেন। ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি তিনি কীর্তন গান করতেন।
তিনি এই আশ্রম থেকে তাঁর সাধনার অংশ হিসেবে লীলা রসকীর্তন প্রবর্তন করেন।
এই কীর্তনের ধারাটি পরবর্তীয় সময়ে গড়ানহাটি ধারা নামে পরিচিত লাভ করে।
ধারণা করা হয় ১৬১১ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।