শিবনাথ শাস্ত্রী
(১৮৪৭-১৯১৯)
শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, দার্শনিক, লেখক, অনুবাদক, ঐতিহাসিক, ব্রাহ্মধর্ম প্রচারক।

১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার চাংড়িপোতা গ্রামে, মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল একই জেলার মজিলপুরে। উল্লেখ্য তাঁর মামা দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ ছিলেন সোমপ্রকাশ পত্রিকার সম্পাদক।

১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে শিবনাথ কলকাতার সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করেন।
১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কৃত কলেজ থেকে এফ.এ পাশ করেন।
১৮৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কেশবচন্দ্র সেনের ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজে যোগ দেন। এই বৎসরেই তিনি
Indian Reforms Association-এ যোগ দিয়ে তিনি মদ্যপান নিবারণ ও নারীমুক্তি আন্দোলনে এবং শিল্প-সাহিত্য-কারিগরি বিদ্যার প্রচারে অংশগ্রহণ করেন।
১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে মদ্যপানের বিরোধিতার সূত্রে 'মদ না গরল' শীর্ষক একটি মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন।
১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কৃত কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন।
১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কৃত কলেজ থেকে এমএ পাস করেন। পরে সংস্কৃত কলেজ থেকে কলেজ থেকে তিনি ‘শাস্ত্রী’ উপাধি লাভ করেন। এই বৎসরে তিনি কেশব সেনের 'ভারত আশ্রমের বয়স্কা মহিলা বিদ্যালয়'-এ শিক্ষকতা করেন। নারীমুক্তি আন্দোলনে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে এবং বিধবাবিবাহের পক্ষে তিনি কেশবচন্দ্রের সহযোগী ছিলেন। তাঁদের বলিষ্ঠ প্রচেষ্টায় এই বৎসরে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৪ বছর নির্ধারিত হয়।
১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি 'সোমপ্রকাশ' নামক একটি পত্রিকার সম্পাদনা করেন।
১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে এই পত্রিকার ছেড়ে তিনি ধর্মবিষয়ক সমদর্শী পত্রিকার সম্পাদনা করেন। এই বৎসরে তিনি ভবানীপুর সাউথ সুবারবন স্কুল-এ শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতার হেয়ার স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রাহ্ম যুবকদের ‘ঘননিবিষ্ট’ নামে একটি বৈপ্লবিক সমিতি তৈরি করেন। এর মাধ্যমে তিনি পৌত্তলিকতা ও জাতিভেদ প্রথার বিরোধিতা করে প্রচারণা চালান। একই সাথে নারী-পুরুষের সমানাধিকার ও সর্বজনীন শিক্ষার পক্ষে সংস্কার আন্দোলনের সূচনা করেন।
১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা প্রসারের জন্য তিনি সিটি স্কুল ও স্টুডেন্টস সোসাইটি নামে একটি গণতান্ত্রিক ছাত্র সমিতি গঠন করেন।
১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে মেয়েদের নীতিবিদ্যালয় স্থাপন করেন।
১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর উদ্যোগে ব্রাহ্ম সমাজের পক্ষে ভারতের প্রথম কিশোর মাসিক পত্রিকা 'সখা' প্রকাশিত হয়।
১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রাহ্ম সমাজের জন্য সাধনাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন ।

১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে ইন্ডিয়ান মেসেজ ও মুকুল (১৮৯৫) পত্রিকা সম্পাদনা করেন।
এই সময়ে তিনি কিছুদিন 'তত্ত্বকৌমুদী পত্রিকার সম্পাদনা করেন।

১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে সেপ্টেম্বর কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়।

তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাদি