'জেলা বীরভূম রামপুরহাট মহকুমার নলহাটি থানার এলাকায় ধর্মপুর নামে একটি পল্লীগ্রাম আছে৷ ধর্মপুর কাশিমবাজারের দানশীলা রাণী আন্নাকালী দেবীর মহালের অন্তর্গত। রাণীমা উক্ত ধর্মপুরের "পণ্ডিত" উপাধিধারী রাঢ়ীশ্রেণী ব্রাহ্মণ বংশের এক গৃহস্থকে গ্রামখানি পত্তনী বন্দোবস্ত দেন।...'
পারিবারিক বিবাদের ফলে শরচ্চন্দ্রের পিতামহ ঈশানচন্দ্র পণ্ডিত ভিটেমাটি ত্যাগ করে মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর মহকুমার দফরপুরে এসে বসবাস শুরু করেন।
এই গ্রামই ছিল দাদাঠকুরের পৈতৃক বাসস্থান। তাঁর জন্ম হয়েছিল বীরভূম জেলার নলহাটি থানার অন্তর্গত
ধরমপুরে গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে সেখান থেকে মাতুলালয় সিমলাদ্দি কিছুদিন থাকেন। পিতার নাম হরিলাল পণ্ডিত। মায়ের নাম তারা সুন্দরী।
শৈশবে তাঁর পিতামাতার মৃত্যু হয়। এরপর তিনি প্রতিপালিত হন, তাঁর চাচা রসিকলাল
পণ্ডিতের কাছে। তিনি জঙ্গিপুর হাইস্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে বর্ধমান রাজ কলেজে এফ.এ. ক্লাশে ভর্তি হন। অর্থের অভাবে
তিনি এফ.এ পড়া শেষ করতে পারেন নি।
১৯০২ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তিনি পরে তিনি ৪৬টাকায় দফরপুর
বাড়িতে একটি হস্তচালিত ছাপাখানা স্থাপন করেন।
প্রথম জীবনে এই ছাপাখানাটিই ছিল তাঁর উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন। এই
ছাপাখানার নাম দিয়েছিলেন 'পণ্ডিত প্রেস'। এই সময় তিনি বাস করতেন।
এই ছাপাখানায় তিনি ছিলেন একাধারে কম্পো্জিটার, মুদ্রণ-সংশোধক। ছাপার ক্ষেত্রে তাঁকে
সাহায্য করতেন তাঁর স্ত্রী। এ বিষয় নলিনীকান্ত সরকার তাঁর দাদাঠাকুর গ্রন্থে
দাদাঠাকুরের জবানিতে লিখেছেন-
'আমার ছাপাখানার আমিই প্রোপাইটর, আমি কম্পোজিটর, আমি প্রুফ রিডার, আর আমিই ইঙ্ক-ম্যান। কেবল প্রেস-ম্যান আমি নই। সেটি ম্যান নয় - উওম্যান অর্থাৎ আমার অর্ধাঙ্গিনী। ছাপাখানার কাজে ব্রাহ্মণী আমাকে সাহায্য করেন, স্বামী-স্ত্রীতে আমরা ছাপাখানা চালাই।'তিনি ১১ বছরের বালিকা প্রভাবতী দেবীকে বিবাহ করেছিলেন। কিছুদিন পরে তিনি সস্ত্রীক চলে আসেন জঙ্গীপুরে। এখানে তাঁর প্রেসের কাজ শুরু করেন নতুনভাবে শুরু করেন।