হকিং
লন্ডনের হাইগেটের বাইরন হাউজ স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু করেন। ১৯৫০
খ্রিষ্টাব্দে হকিংদের পরিবার হার্টফোর্ডশায়ারের সেন্ট অ্যালবান্সে
চলে যায়। এই সময়ে হকিং কয়েক মাস সেন্ট অ্যালবান্সের
মেয়েদের স্কুলে পড়েন। উল্লেখ্য সে সময় ১০ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেরা মেয়েদের স্কুলে পড়তে
পারতো। পরে সেখান থেকে ছেলেদের স্কুলে ভর্তি করা হয়। এরপর তিনি হার্টফোর্ডশায়ারের র্যাডলেট গ্রামের স্বাধীন স্কুলে,
এক বছর পড়াশুনা করেন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর থেকে হার্টফোর্ডশায়ারের
সেন্ট অ্যালবান্সের অপর একটি স্বাধীন স্কুলে (সেন্ট অ্যালবান্স স্কুলে) লেখাপড়া
করেন।
হকিংয়ের বাবার ইচ্ছা ছিল হকিং প্রখ্যাত ওয়েস্টমিনস্টার স্কুলে পড়াশুনা করুক। কিন্তু ১৩
বছর বয়সী হকিং বৃত্তি পরীক্ষার দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃত্তি ছাড়া তাঁর পরিবার,
ওয়েস্টমিনস্টারে তাঁর পড়াশুনার খরচ চালাতে পারবেন না, তাই তিনি সেন্ট অ্যালবান্সে
রয়ে যান।
শিক্ষাজীবনের শুরুর দিকে তাঁর পরীক্ষার ফলাফল তেমন ভালো ছিল না। তবে বিজ্ঞানে তাঁর সহজাত আগ্রহ
রয়েছে এটা জানা গিয়েছিল। এই সময় হকিং তাঁর শিক্ষক
তাহতার অনুপ্রেরণায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গণিত বিষয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। হকিংয়ের বাবার ইচ্ছে ছিল হকিং যেন তার মতো ডাক্তার হয়, কারণ
সে সময়ে গণিতে স্নাতকদের জন্য
খুব বেশি চাকরির সুযোগ ছিল না। এছাড়া তাঁর পিতা তার নিজের কলেজ অক্সফোর্ড
বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি করাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে গণিতের কোর্স পড়ানো
হতো না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই তিনি পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয় নিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের মার্চে মাসে পরীক্ষা দিয়ে বৃত্তি লাভ করেন।
১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে ১৭ বছর বয়সে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে
তিনি
স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন। এই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ তাঁর কাছে নিতান্তই সহজ মনে হতো।
সেই কারণে তিনি চরম বিরক্তি নিয়ে পড়াশুনা করতেন। এর ফলে এই সময় তিন ধ্রুপদী সঙ্গীত ও বিজ্ঞান কল্পকাহিনীতে
বেশি আগ্রহী
হয়ে ওঠেন। তিনি কলেজের বোট ক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয়
কলেজ বোট ক্লাবে যোগদান করেন।
অক্সফোর্ডে লেখাপড়ার সময়, তাঁর ভিতরে কেম্ব্রিজে মহাবিশ্বতত্ত্ব নিয়ে
পড়ার আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠে। এই সময় কেম্ব্রিজে এই বিষয়ে ভর্তি নেওয়া হতো স্নাতক
শ্রেণিতে প্রথম মান শিক্ষার্থীদের। তাই অক্সফোর্ডের স্নাতক পরীক্ষার চতুর্থ বর্ষে
ব্যাপকভাবে লেখাপড়া মন দেন। কিন্তু এই পরীক্ষার ফলাফল হলো প্রথম মানের খুব
কাছাকাছি। ফলে প্রথম মান পাওয়ার জন্য তাঁকে মৌখিক পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল। মৌখিক
পরীক্ষায় সন্তুষ্ট হয়ে, পরীক্ষক যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, তাঁর ভবিষ্যৎ
পরিকল্পনা কি। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন-' যদি আমাকে ফার্স্ট ক্লাস দেন,
তাহলে কেম্ব্রিজে চলে যাবো, ওখানে গিয়ে মহাবিশ্বতত্ত্ব পড়বো। যদি সেকেন্ড ক্লাস
দেন, তাহলে অক্সফোর্ডেই থাকবো। মনে হয়, ফার্স্ট ক্লাস দিয়ে বিদেয় করে দিলেই ভালো
হবে'।
এরপর তিনি প্রথম মান পেয়ে কেম্ব্রিজে
তত্ত্বীয় কসমোলজি আর কোয়ান্টাম মধ্যাকর্ষ বিষয়ে পিএইচডি শুরু করেন। এখানে তাঁর তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ডেনিশ
উইলিয়াম শিয়াম। ১৯৬০ এর দশকে ক্যাম্ব্রিজের বন্ধু ও সহকর্মী রজার পেনরোজের সঙ্গে
মিলে হকিং আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব থেকে একটি নতুন মডেল তৈরি করেন।
১৯৬২
খ্রিষ্টাব্দে তিনি ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হন
Department of Applied Mathematics and
Theoretical Physics (DAMTP)
-বিভাগে। প্রাথমিকভাবে তিনি মহাবিশ্ব তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। কেমব্রিজে আসার পরপরই
তিনি প্রাথমিকভাবে 'হকিং মটর নিউরন' রোগে আক্রান্ত হোন। এ কারণে তাঁর প্রায় সকল
মাংসপেশী ধীরে ধীরে অবশ হয়ে আসতে থাকে। এর ফলে তাঁর গবেষণাতেও বিঘ্ন ঘটতে থাকে। ১৯৬৩
খ্রিষ্টাব্দের পুর্ণোদমে হকিংয়ের
চিকিৎসা শুরু হয়। এবং এরপর এই রোগের প্রকোপ কিছুটা কমে গেলে, তিনি পুনরায় গবেষণার কাজ করতে
থাকেন। এই সময় তার বোনের বান্ধবী জেইন ওয়াইল্ডের সাথে দেখা হয়। এই মেয়েটার সাথে খুব
দ্রুত তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে এবং সেটা শেষ পরন্ত তা প্রণয়ে পরিণত হয়। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে
অক্টোবরে তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই জুলাই তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ
হন।
বিবাহের প্রথম বছরে জেইন লেখাপড়ার জন্য লন্ডনে বসবাস করতেন। এই সময় তাঁরা
বিভিন্ন কনফারেন্স ও পদার্থবিজ্ঞান-বিষয়ক কাজের জন্য কয়েকবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে
যান। তঁদের প্রথম সন্তান রবার্ট জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে।
দ্বিতীয় সন্তান লুসি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে। আর তৃতীয় সন্তান টিমোথি
জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে।
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জর্জ লেমিটর এবং এডুইন হাবলের বিগব্যাং সংক্রান্ত তথ্যাবলি
ও আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বের ভিত্তিতে গবেষণা পত্র লেখা শুরু করেন। এই
প্রবন্ধের নাম রাখা হয়
Properties of extending universe
(প্রসারণশীল মহাবিশ্বের বৈশিষ্ট্যগুলো)। এই বছরেই তিনি পিএচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
রিসার্স ফেলো পদ লাভ করেন।
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
'Singularities and the Geometry of Space-time'
রচনার জন্য 'এ্যাডাম পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইন্সটিটিউট অফ এ্যাস্ট্রোনোমিতে যোগদান করেন।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে রজার পেনরজের সাথে মহাবিশ্বের উপর গবেষণা করেন।
১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে ক্যাম্ব্রিজের (DAMTP)-তে
ফিরে আসেন রিসার্স এ্যসিস্টেন্ট হিসেবে গবেষণায় যুক্ত হন। এই সময় সহলেখক এলিসের সাথে
'The Large Scale Structure of
Space-Time' নামক একটি গ্রন্থ
প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থ প্রকাশের পর, তিনি দেখলেন তাঁর দ্বিতীয় বিধির
'ঘটনা দিগন্ত ছোটো না হওয়ার'-তে কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
কৃষ্ণগহ্বরের বিকিরণ সংক্রান্ত তত্ত্ব উপস্থাপন করেন। এই তত্ত্বে বলা হয়েছে কৃষ্ণগহ্বর থেকে বিকিরণ হয়, এবং এটা ততদিন চলবে, যতদিন এটার শক্তি শেষ না
হয়, যতদিন এটা বিকিরণ করতে করতে উবে না যায়।' উল্লেখ্য এই বিকিরণকে এখন
Hawking Radiation (হকিং
বিকিরণ) বলা হয়। এই বছরে তিনি অফ রয়্যাল সোসাইটি'র ফেলো পদ লাভ করেন।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
(DAMTP)-র
রিডার পদ লাভ করেন। আর ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে গ্র্যাভিটেশনাল পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক পদ
লাভ করেন। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
গণিতের লুকাসিয়ান অধ্যাপক পদ লাভ করেন। উল্লেখ্য রেভারন্ড হেনরি লুকাস এই অধ্যাপক
পদের জন্য ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে অর্থ প্রদান করেছিলেন।
১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তাঁর চিকিৎসা এবং সন্তান লালন-পালনের জন্য তিনি কিছুটা আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে পড়েন।
তাই তিনি সর্বসাধারণের জন্য সাধারণ
ভাষায় একটা বই লেখার চেষ্টা করেন। 'কালের সংক্ষিপ্ত
ইতিহাস' নামক এই বইটির প্রথম খসড়া প্রস্তুত হয়েছিলো ১৯৮৪
খ্রিষ্টাব্দে। কিন্তু তাঁর প্রকাশক মনে করেছিলেন, এই বইটা সাধারণ মানুষের জন্য কঠিন
হয়ে গেছে। পরে এই গ্রন্থটি সংস্কারের জন্য পিছিয়ে যায় এবং তা ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে
প্রকাশিত হয়েছিল।
১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রস্তাব করেন যে, বিকিরণ করতে করতে যখন কৃষ্ণগহ্বর
উবে যায়, তখন এর ভেতরের তথ্যগুলোও হারিয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবে কোনো তথ্য তো কখনো হারিয়ে যায় না।
এ নিয়ে নানা ধরনের তর্ক-বিতর্ক বিজ্ঞান মহলে রয়েছে। এর বিপরীত তত্ত্বটি বলা হয়
Blackhole Information Paradox।
১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে গ্রীষ্মে জেনেভার সার্ন-এ অবস্থানকালে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত
হয়েছিলেন। এই সময় তিনি প্রায় কোমায় চলে গিয়েছিলেন। তাঁর কষ্ট দেখে একসময় চিকিৎসকরা হকিংয়ের স্ত্রী
জেইনকেও লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানান। তবে সে প্রস্তাবে জেইন
রাজি অবশ্য রাজি হন নি। শেষ পর্যন্ত তিনি বেঁচে যান। তবে এ সময় থেকে তাঁর স্বাভাবিক
বাকশক্তি হারিয়ে যায়। প্রথমে কিছুদিন তিনি বানান কার্ড ব্যবহার করে যোগাযোগ করতেন।
এই সময় তাঁকে একটা একটা অক্ষর দেখানো হতো, তিনি যেটা বলতে চাইতেন, সেটাতে এসে
থামলে ভ্রু উঁচু করতেন। পরবর্তীতে হকিং এর এক সহযোগী পদার্থবিদ ক্যালিফোর্নিয়ার একটি
সফটঅওয়ার
কোম্পানি দিয়ে বাক্য বানানোর মত সফটঅয়্যার তৈরি করে দিয়েছিলেন। এরপর এই সফটঅয়ারের
সাথে যুক্ত করা হয়েছিল কথা বলার উপযোগী একটি ভয়েস সিনথেসাইজার
(Speech Plus)। এর পর থেকে তিনি মিনিটে
১৫টি শব্দ বলতে পারতেন।
১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে 'কালের সংক্ষিপ্ত
ইতিহাস' সহজতর ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই গ্রন্থটি প্রায় ১ কোটি কপি বিক্রয় হয়েছিল।
এই বইটির মাধ্যমে তিনি সর্বসাধারণকে মহাবিশ্ব বুঝাতে গিয়ে সর্বসাধারণের কাছে
বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিলেন। এরপর তাঁর আর্থিক সমস্যাও দূর হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দাম্পত্য
জীবনে সংঘাত শুরু হয়েছিল এই সময় থেকেই। জেইন এরূপ দাম্পত্য জীবনে অস্থির হয়ে
পড়েছিলেন। এরপর ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি একজন সেবিকার সেবাতে কাটাতেন। ১৯৯৫
খ্রিষ্টাব্দে আনুষ্ঠানিকভাবে জেইনের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এবং এই বছরেই ওই
সেবিকাকে তিনি বিবাহ করেন।
১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কৃষ্ণ গহ্বরের বিষয়ে একটি বাজি ধরেছিলেন স্টিভেন হকিং। বাজিতে তাঁর পক্ষে ছিলেন পদার্থ বিজ্ঞানী কিপ থর্ন এবং অন্য পক্ষে ছিলেন জন প্রেস্কিল। পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই বাজি "থর্ন-হকিং-প্রেস্কিল বাজি" নামে পরিচিত। প্রফেসর হকিং এবং থর্ন যুক্তি দেখালেন যে, যেহেতু সাধারণ অপেক্ষবাদ অনুসারে কৃষ্ণগহ্বর তার ঘটনা দিগন্তের ভেতরের কোনো কিছুই বাইরে আসতে দেয় না, এমনকি সেখান থেকে আলো পর্যন্ত বের হতে পারে না, সেহেতু হকিং বিকিরণের মাধ্যমে বস্তুর ভর-শক্তির যে তথ্য পাওয়া যায় তা কোনো ক্রমেই কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরের তথ্য নয়। তা নতুন, এবং যেহেতু এটি আবার কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সাথে সাংঘর্ষিক সেহেতু কোয়ান্টাম বলবিদ্যা নতুন করে লেখা প্রয়োজন। অপরপক্ষে জন প্রেস্কিল যুক্তি দেখালেন , যেহেতু কোয়ান্টাম বলবিদ্যা বলে যে, এই তথ্য কৃষ্ণগহ্বর দ্বারা উৎসারিত এমন তথ্য যা কৃষগহ্বরের প্রথম দিককার কোনো অবস্থা নির্দেশ করে এবং সেহেতু সাধারণ অপেক্ষবাদ দ্বারা নির্ণীত কৃষ্ণ বিবরের চলতি ধারণায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। দীর্ঘদিন পরে ২০০৪ সালে হকিং স্বীকার করেন যে তিনি বাজিতে হেরেছেন। তবে কিপ থর্ন পরাজয় মানেননি এবং বাজিতে তাঁর অংশের পুরস্কার দিতে রাজি হন নি।
২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর সেবিকাকে পত্নীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর জেইনের
সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে।
২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর এক সহকারী তাঁর চশমার সাথে অবলোহিত আলো যুক্ত করে গালের
পেশীর নড়চড়ার ব্যবস্থা করে দেন।
২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসিয়ান অধ্যাপক পদ থেকে অবসর নেন।
২০১১ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এই ব্যবস্থা ফলাফল দিতে ব্যর্থ হয়ে যায়। ফলে মিনিটে ১টি
২টি শব্দ বলতে পারতেন। পরে মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা কোম্পানি ইন্টেলের অপেক্ষাকৃত
দ্রুত শব্দ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিলেন। তবে পুরোটাই ছিল পরীক্ষামূলক।
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই মার্চ তিনি কেম্ব্রিজে মৃত্যুবরণ করেন।
পুরস্কার:
আইনস্টাইনের পর হকিংকেই বিখ্যাত পদার্থবিদ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই সূত্রে বহু
পুরস্কার লাভ করেছেন বিভিন্ন সময়ে।
অ্যাডামস পুরস্কার (১৯৬৬)
এডিংটন পদক (১৯৭৫)
ম্যাক্সওয়েল পদক ও পুরস্কার (১৯৭৬)
গাণিতিক পদার্থবিদ্যায় ড্যানি হাইনম্যান পুরস্কার (১৯৭৬)
হিউ পদক (১৯৭৬)
আলবার্ট আইনস্টাইন পদক (১৯৭৮)
রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির স্বর্ণ পদক (১৯৮৫)
ডিরাক পুরস্কার (১৯৮৭)
উলফ পুরস্কার (১৯৮৮)
প্রিন্স অব অ্যাস্টুরিয়াস পুরস্কার (১৯৮৯)
অ্যান্ড্রু গেম্যান্ট পুরস্কার (১৯৯৮)
নেলর পুরস্কার ও লেকচারশিপ (১৯৯৯)
লিলিয়েনফেল্ড পুরস্কার (১৯৯৯)
রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টসের আলবার্ট পদক (১৯৯৯)
কপলি পদক (২০০৬)
প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (২০০৯)
ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স পুরস্কার (২০১২)
বিবিভিএ ফাউন্ডেশন ফ্রন্টিয়ারস অব নলেজ পুরস্কার (২০১৫)
হকিং মূর্তি ও প্রতিষ্ঠান
২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে ডিসেম্বর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বীয় কসমোলজি কেন্দ্রে
হকিংয়ের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়। এই মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন প্রয়াত শিল্পী আয়ান ওয়াল্টার।
২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে হকিংয়ের তাঁর একটি আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করা হয়,
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনে অবস্থিত আফ্রিকান ইনস্টিটিউট অব ম্যাথমেটিক্যাল
সায়েন্সের সামনে।
এছাড়া মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর তাদের রাজধানী সান সালভাদরে বিজ্ঞান জাদুঘরটির
নাম হকিংয়ের নামে রেখেছে।
প্রকাশনাসমূহ
তার কর্মজীবন ও কর্মকাণ্ডের উপর প্রণীত চলচ্চিত্র ও ধারাবাহিক
তথ্যসূত্র: