সুকান্ত ভট্টাচার্য
কবি।

১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগষ্ট (৩০ শ্রাবণ ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ ) তারিখে কলকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামাবাড়িতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নিবারণ ভট্টাচার্য এবং মায়ের নাম সুনীতি দেবী। তাঁর পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে। সুকান্তের বাবা নিবারণ ভট্টাচার্য কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে বইয়ের ব্যবসা করতেন। সেই সুবাদে কবির পরিবারের প্রায় সবাই কলকাতায় থাকতেন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের পরে কবির পরিবার তাঁদের আদি বাসস্থানে ফিরে আসেন নি। ফলে পূর্বপুরুষের ভিটাটি বেদখল হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫৯ বছর বেদখল থাকার পর ২০০৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সরকারি উদ্যোগে কবির বাড়ি দখলমুক্ত হয়। এরপরও কবির শূন্য ভিটাটি অযত্নে পড়ে ছিল। পরে কবির পিতৃভিটায় কবির নামে সরকারিভাবে একটি অডিটরিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে।

১৩৫২ বঙ্গাব্দে তিনি বেলঘাটার দেশবন্ধু হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এই সময় তিনি সমাজতান্ত্রিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হন এবং পশ্চিম বাংলার সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। এই সময় তিনি যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হন এবং এই অবস্থাতেই তিনি দলের কাজ করেছেন। স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা, এবং দারিদ্রতার সাথে সংগ্রাম করতে করতে
  ১৯৪৭ সালের ১৩ মার্চ (১৩৫৪ বঙ্গাব্দের ২৯ বৈশাখ) মাত্র ২১ বছর বয়সে যাদবপুর যক্ষ্মা হাসপাতেলে মৃত্যুবরণ করেন।

তাঁর এই ক্ষুদ্র জীবনের শ্রেষ্ঠ উল্লেখযোগ্য অবদান হলো তাঁর কবিতা। এছাড়াও তিনি রচনা করেছিলেন সামান্য কিছু গান ও গদ্য। এগুলো হলো

কাব্যগ্রন্থ
ছাড়পত্র (১৩৫৪), ঘুম নেই (১৩৫৭), পূর্বাভাস (১৩৫৭), মিঠে কড়া (১৩৫৮), সূর্য-প্রণাম, অভিযান (১৩৬০), হরতাল (১৩৬৯)।

সঙ্গীতগ্রন্থ
গীতিগুচ্ছ (১৩৭২)

গদ্যরচনা
হরতাল

এছাড়া কিছু অপ্রকাশিত রচনা আছে। ১৩৫১ বঙ্গাব্দে ফ্যাসিবিরোধী লেখক ও শিল্পীসংঘের পক্ষে অকাল নামক কাব্যগ্রন্থের সম্পাদনা করেন। তিনি তখনকার দৈনিক পত্রিকা স্বাধীনতা-এর কিশোর বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা এবং আজীবন সম্পাদক ছিলেন।


সূত্র:
সংসদ বাঙালি চরিতাবিধান। প্রথম খণ্ড। ২০০২।
শিশু বিশ্বকোষ। পঞ্চম খণ্ড। পৌষ ১৪০৪, ডিসেম্বর ১৯৯৭।