সামবেদ
পুর্বার্চিকঃ ছন্দ আর্চিকঃ
প্রথম অধ্যায়ঃ
আগ্নেয় কাণ্ডঃ অগ্নিস্তুতি
অষ্টম খণ্ড : মন্ত্র সংখ্যা ৮ ॥
দেবতা অগ্নি; ৩ পূষা ॥ ছন্দ ত্রিষ্টুপ
॥
ঋষিঃ ১
আগ্নেয় বুধ ও গবিষ্টির,
২।৫ ভালদ্দন বৎসপ্রি;
৩ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য,
৪।৭ গাথি
বিশ্বামিত্র,
৬ বসিষ্ঠ মৈত্রাবরুণি,
৮ পায়ু ভারদ্বাজ॥
মন্ত্রঃ (৭৩)
অবোধ্যগ্নিঃ সমিধা জনানাং প্রতি ধেনুমিবায়তীমুষাসম্। যহ্বা ইহ প্র বয়ামুজ্জিহানাঃ
প্র ভানবঃ সস্রতে নাকমচ্ছ ॥ ১॥
অর্থ (৭৩) ঊষাকালে দুগ্ধদাত্রী গাভীগণ যেমন মানুষের কাছে যায় অগ্নিও সেরূপ
সমিধকাঠে প্রজ্জ্বালিত হন। তাঁর সেই মহান্ শিখাগুলি শাখাবিস্তারকারী বৃক্ষের মত
দ্যুলোকের পানে ছুটে চলে।
মন্ত্র (৭৪) প্র
ভূর্জয়ন্তং মহাং বিপোধাং মূরৈরমূরং পুরাং দর্মাণম্। নয়ন্তং গীর্ভির্বনা ধিয়ং ধা
হরিশ্মশ্রুং ন বর্মণা ধনর্চিম্ ॥ ২॥
অর্থ (৭৪) ভুবনজয়ী, প্রাণদ, মূঢের মত দৃষ্ট অথচ অবাধজ্ঞানসম্পন্ন, পুরনাশক,
বেদবাণীর দ্বারা ভজনীয়, সর্বকর্মধারক শ্মশ্রুর মত উজ্জ্বল সুবর্ণশিখারূপ বর্মের
দ্বারা আবৃত অগ্নিকে উত্তমরূপে স্তব কর।
মন্ত্র (৭৫) শুক্রং তে অন্যদ্যজতং তে অন্যদ্বিষুরূপে অহনী দ্যৌরিবাসি।
বিশ্বা হি মায়া অবসি স্বধাবন্ ভত্রা তে পুষন্নিহ রাতিবস্তু ॥
৩॥
অর্থ (৭৫) সে উদিতভানু পূষারূপী অগ্নি, তোমার এই যে লোহিতবর্ণ এ তোমার এক
রূপ, আর যজ্ঞযোগ্য পূজনীয় তোমার যে রূপ তা অন্য; দিন ও রাত্রি সৃষ্টিরূপ কর্মের
দ্বারা তুমি অন্তরিক্ষের মত বিশ্বব্যাপী। যে নিয়ন্তা, এই বিশ্বমায়ার তুমিই পালক; হে
পূষা, তোমার এই দান কল্যাণময় হোক॥
মন্ত্র (৭৬) ইড়ামগ্নে
পুরুদংসং সনিং গোঃ শশ্বত্তমং হবমানায় সাধ। স্যান্নঃ সূনুস্তনয়ো বিজাবাগ্নে সা তে
সুমতির্ভূত্বস্মে ॥ ৪॥
অর্থ (৭৬) হে অগ্নি, তোমার উপাসকের জন্য বহুকর্মযুক্ত ধন ও শাশ্বতী
বেদবাণী তুমি দিয়ে থাক। হে অগ্নি, আমাদের এমন পুত্র দাও যার থেকে বংশ বিস্তার হবে
আর তোমার কল্যাণ আমাদের ওপর বর্ষিত হবে।
মন্ত্র (৭৭) প্র হোতা জাতো মহান্নভো বিন্নৃষদ্মা সীদদপাং বিবর্তে।
দধদ্যো ধায়ী সু তে বয়াংসি যন্তা বসূনি বিধতে তনূপাঃ ॥ ৫॥
অর্থ (৭৭) অগ্নি মহান্ হয়ে হোতারূপে জাত হলেন, মানুষের মধ্যে নিবাস করলেন,
জলের মধ্যে অবস্থান করলেন॥ ওই মহাশূন্যে জন্মলাভ
করে সকল কিছুই তিনি জানলেন আর সকল জীব ও ধনসম্পদের নিয়ামক হলেন॥
মন্ত্র (৭৮) প্র সম্রাজমসুরস্য প্রশস্তয়ং পুংসঃ কৃষ্টীনামনুমাদ্যস্য।
ইন্দ্রস্যেব প্র তবসস্কৃতানি বদ্দদ্বারা বন্দমানা বিবষ্টু॥
৬॥
অর্থ (৭৮) প্রাণের দীপ্ত আধার, প্রশস্ত পৌরুষযুক্ত মানুষের পূজ্য, ইন্দ্রের
মত বলশালী সেই প্রথমজাতকে স্তুতিদ্বারা বন্দনা কর॥
মন্ত্র (৭৯) অরণ্যোর্নিহিতো জাতবেদ্য গর্ভ ইবেৎসুভৃতো গর্ভিণীভিঃ। দিবেদিব
ঈড্যো জাগৃবদ্ভির্হবিষ্মিদ্ভির্মনুষো-ভিরগ্নিঃ ॥ ৭॥
অর্থ (৭৯) গর্ভিণীর গর্ভে সুরক্ষিত ভাবে অবস্থিত প্রাণের মত দুই অরুণি কাঠের
মধ্যে নিহিত আছেন জাতবেদা অগ্নি। যাঁরা নিজকর্মে সচেতন সেই হবির দাতা নরকূলে অগ্নি
প্রতিদিন পূজিত।।
মন্ত্র (৮০) সনাদগ্নে
মৃণসি যাতুধানান্ন ত্বা রক্ষাংসি পৃতনাসু জিণ্ড্যঃ। অনুদহ সহমূরান্ কয়াদো মা তে
হেত্যা মুক্ষত দৈব্যায়াঃ॥ ৮॥
অর্থ (৮০) হে অগ্নি, যাদের হাত দুই অরণি
কাঠের মধ্য মধ্য নিহিত আছেন জাতবেদা অগ্নি। যাঁরা, যাদের হাত থেকে জীবন রক্ষিতব্য
তাদের ধ্বংস কর; তারা যেন তোমার ওপর জয়লাভ না করে; অপক্বমাংসভোজীগণ যেন তোমার দিব্য
অস্ত্রের আঘাত থেকে মুক্তিলাভ না করে॥
নবম খন্ডঃ মন্ত্রসংখ্যা ১০; দেবতা অগ্নি ।। ছন্দ অনুষ্টুপ ।। ঋষিঃ ১ গয় আত্রেয়, ২
বামদেব, ৬।৪ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য, ৫ দ্বিত মৃক্তবাহ্য আত্রেয়, ৩ অত্রিপুত্র বসুগণ,
৭।৯ গোপবন আত্রেয়, ৮ পুরু আত্রেয়, ১০ বামদেব কশ্যপ বা মারীচ অথবা বৈবস্বত মনু অথবা
উভয়কৃত।।
মন্ত্রঃ (৮১) অগ্ন ওজিষ্ঠমা ভর দ্যুম্নমষ্মভ্যমধ্রিগো। প্র নো রায়ে পনীয়সে রৎসি
বাজায় পন্থাম্।।১।। (৮২) যদি বীরো অনুষ্যাদগ্নিমিন্ধীত মর্ত্ত্যঃ।
আজুহ্বধ্বব্যমানুষক্ শর্ম ভক্ষীত দৈব্যম্।।২।। (৮৩) ত্বেষস্তে ধূম ঋন্বতি দিবি
সঞ্ছুক্রু আততঃ। সূরো ন দি দ্যুতা ত্বং কৃপা পাবক রোচসে।।৩।। (৮৪) ত্বং হি
ক্ষৈতবদ্যশোহগ্নে মিত্র ন পত্যসে। ত্বং বিচর্ষণে শ্রবো পুষ্টিং ন পুষ্যতি।।৪।। (৮৫)
প্রাতরগ্নিঃ পুরুপ্রিয়ো বিশ স্তবেতাতিথিঃ। বিশ্বে যস্মিন্নমর্ত্যে হব্যং মর্তাস
ইন্ধতে।।৫।। (৮৬) যদ্ বাহিষ্ঠং তদগ্নয়ে বৃহদর্চ বিভাবসো। মহিষীব ত্বদ্
রয়িস্ত্বদ্ বাজা উদীরতে।।৬।। (৮০) বিশোবিশো বো অতিথিং বাজয়ন্তঃ পুরুপ্রিয়ম্।
অগ্নিং বো দুর্যং বচঃ স্তুষে শুষস্য মন্মভিঃ।। ৭।। (৮৮) বৃহদ বয়ো হি ভাববেহর্চা
দেবায়াগ্নয়ে। যং মিত্রং ন প্রশস্তয়ে মর্তাসো দধিরে পুরঃ।।৮।। (৮৯) অগন্ম
বৃত্রহন্তনং জ্যেষ্ঠমগ্নিমানবম্ বৃহদনীক ইধ্যতে।।৯।। (৯০) জাতঃ পরেণ ধর্মণা যৎ
সবৃদ্ধিঃ সহাভুবঃ। পিতা যৎ কশ্যপস্যাগ্নিঃ শ্রদ্ধা মাতা মনুঃ কবিঃ।।১০।।
অনুবাদঃ (৮১) হে অগ্নি, হে সদাগমনশীল, শ্রেষ্ঠ ধন বল প্রদান কর; গূঢ় বাক্যের দ্বারা
বোধগম্য আশ্চর্যকর পরমধনের জন্য পথ নির্দেশ কর।। (৮২) মরণশীল মানুষ যদি বীর্যমান
হয়ে নিরন্তর অগ্নিদেবকে উপাসনা করে তবেই দিব্যসুখ ও আশ্রয় লাভ করতে পারে।। (৮৩) হে
পূত শুদ্ধ অগ্নি, তোমার মহান্ ধূম দ্যুলোকে গমন করে বারিরূপে ব্যাপ্ত হয়; তুমি নিজ
সামর্থ্যে সূর্যের মত দীপ্ত হয়ে প্রকাশিত হও।। (৮৪) হে অগ্নি, রাজপুত্রের মত কান্তি
তোমার, বন্ধুর মত আবিষ্ট কর; বিশ্বদ্রষ্টা তুমি হে বহুধন, যশ, আর পুষ্টি দিয়ে
আমাদের পোষণ কর।। (৮৫) বিশ্বে যে অবিনশ্বরকে নশ্বর মানুষেরা হব্যদান ক'রে পূজা করে,
তিনি জনগণের অতিথিবৎ পূজ্য, বহুপ্রিয়, প্রাতঃকালে পূজিত অগ্নিদেব।। (৮৬) উত্তম যে
স্তব তা' অগ্নের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত। হে বিভাবসু, তোমা হতে বিপুল ধন ও অন্ন উৎপন্ন
হয়।। (৮৭) সকল জনের অতিথি, বহুপ্রিয় অগ্নিকে অন্নকাম মানুষ তোমাদের জন্য আমি
যথাশক্তি মননের দ্বারা দূর্জ্ঞেয় বাক্যে তুষ্ট করি।। (৮৮) মর্তের মানুষেরা স্তব
ক'রে যে অগ্নিকে বন্ধুর মত পুরোভাগে স্থাপন করে, সেই দীপ্তশিখা অগ্নিদেবকে মহানন্দে
অর্চনা কর।। (৮৯) যিনি মহান দীপ্তিতে ঋক্ষপুত্র শ্রুতর্বার কাছে প্রকাশিত হয়েছিলেন
সেই প্রথমজাত, পাপনাশক, মানুষের হিতকর অগ্নিকে আমি জানি।। (৯০) যা উৎকৃষ্ট, পরম
ধর্মজাত যা সকলের সঙ্গে মিলিত হয়ে বর্ধিত হয়, যে বিশ্বলোকের (=কশ্যপ) পালয়িতা, সেই
অগ্নিই শ্রদ্ধা, মাতা, ক্রান্তদর্শী মনু। [ কশ্যপ=একপ্রকার আলোক যা সূর্যের
ভ্রমণপথকে নিয়ন্ত্রিত করে ]।।দশম খন্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ৬।। দেবতাঃ ১ বিশ্বদেবগণ, ২
অঙ্গিরা, ৩-৬ অগ্নি।। ছন্দ অনুষ্টুপ।। ঋষিঃ ১ অগ্নিস্তাপস, ২।৩ বামদেব কশ্যপ বা
অসিত দেবল, ৪ সোমাহুতি ভার্গব বা ভর্গাহুতি সোম ৫ পায়ু ভারদ্বাজ, ৬ প্রস্কন্ব
কান্ব।।মন্ত্রঃ (৯১) সোমং রাজানং বরুণমগ্নিমন্বারভামহে। আদিত্যং বিষ্ণুং সূর্যং
ব্রহ্মাণং চ বৃহস্পতিম্।।১।। (৯২) ইত এত উদারুহন্দিবঃ পৃষ্ঠান্যারুহন্। প্র
ভুর্জয়ো যথা পথো দ্যামঙ্গিরসো যযুঃ।।২।। রায়ে আগ্নে মহে ত্বা দানায় সমিধিমহি।
ঈড়িষ্বা হি মহে বৃষন্ দ্যাবা হোত্রায় পৃথিবী।।৩।। (৯৪) দধন্বে বা যদীমনু বোচদ্
ব্রহ্মেতি বেরু তৎ। পরি বিশ্বানি কাব্যা নেমিশ্চক্রমিবাভুবৎ।।৪।। (৯৫) প্রত্যগ্নে
হরসা হরঃ শৃণাহি বিশ্বতস্পরি। যাতুধানস্য রক্ষস্যে বলং ব্যুব্জবীর্যম্।।৫।। (৯৬)
তমগ্নে বসুঁরিহ রুদ্রাঁ আদিত্যাঁ উত। যজা স্বধ্বরং জনং মনুজাতং ঘৃতপ্রুষম্।।৬।।
অনুবাদঃ (৯১) আমাদের রক্ষার জন্য আমরা সোমরাজাকে, বরুণ অগ্নিকে আহ্বান করি; আর
আহ্বান করি আদিত্য বিষ্ণু, সুর্য, ব্রহ্মা ও বৃহস্পতিকে।। (৯২) পৃথিবীবিজয়ী রাজা যে
পথে দিব্যধামে গমন করেন আঙ্গিরাগণও সেই পথে দ্যুলোকে গমন করেন।। (৯৩) হে অগ্নি,
শ্রেষ্ঠ ধনলাভের জন্য তোমাকে সন্দীপ্ত করি। হে বর্ষণকারী, মহান্ আহুতিকর্মের জন্য
দ্যুলোক ও ভূলোককে প্রশংসিত কর।। (৯৪) যজ্ঞে উপাসক যে হব্য দান করেন, যে মন্ত্র
উচ্চারণ করেন ব্রহ্মস্বরূপ অগ্নি তা সমস্তই জানেন। নেমি যেমন চক্রকে ব্যাপ্ত করে
বর্তমান থাকে অগ্নিও সেরূপ উপাসকের সমস্ত কর্মই ব্যাপ্ত করে আছেন।। (৯৬) হে অগ্নি,
তোমার তেজের দ্বারা হিংসকের বল নষ্ট কর, বিঘ্নকারীর বলবীর্য ভেঙে দাও।। (৯৬) হে
অগ্নি, এই যজ্ঞে বসু, রুদ্র ও আদিত্যদের অর্চনা কর; সোভন যজ্ঞযুক্ত ও
বৃষ্টিপ্রদানকারী মনুজাতদেরও ভজনা কর।।
নবম খন্ডঃ মন্ত্রসংখ্যা ১০; দেবতা অগ্নি ।। ছন্দ অনুষ্টুপ ।। ঋষিঃ ১ গয় আত্রেয়, ২
বামদেব, ৬।৪ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য, ৫ দ্বিত মৃক্তবাহ্য আত্রেয়, ৩ অত্রিপুত্র বসুগণ,
৭।৯ গোপবন আত্রেয়, ৮ পুরু আত্রেয়, ১০ বামদেব কশ্যপ বা মারীচ অথবা বৈবস্বত মনু অথবা
উভয়কৃত।।
মন্ত্রঃ (৮১) অগ্ন ওজিষ্ঠমা ভর দ্যুম্নমষ্মভ্যমধ্রিগো। প্র নো রায়ে পনীয়সে রৎসি
বাজায় পন্থাম্।।১।। (৮২) যদি বীরো অনুষ্যাদগ্নিমিন্ধীত মর্ত্ত্যঃ।
আজুহ্বধ্বব্যমানুষক্ শর্ম ভক্ষীত দৈব্যম্।।২।। (৮৩) ত্বেষস্তে ধূম ঋন্বতি দিবি
সঞ্ছুক্রু আততঃ। সূরো ন দি দ্যুতা ত্বং কৃপা পাবক রোচসে।।৩।। (৮৪) ত্বং হি
ক্ষৈতবদ্যশোহগ্নে মিত্র ন পত্যসে। ত্বং বিচর্ষণে শ্রবো পুষ্টিং ন পুষ্যতি।।৪।। (৮৫)
প্রাতরগ্নিঃ পুরুপ্রিয়ো বিশ স্তবেতাতিথিঃ। বিশ্বে যস্মিন্নমর্ত্যে হব্যং মর্তাস
ইন্ধতে।।৫।। (৮৬) যদ্ বাহিষ্ঠং তদগ্নয়ে বৃহদর্চ বিভাবসো। মহিষীব ত্বদ্
রয়িস্ত্বদ্ বাজা উদীরতে।।৬।। (৮০) বিশোবিশো বো অতিথিং বাজয়ন্তঃ পুরুপ্রিয়ম্।
অগ্নিং বো দুর্যং বচঃ স্তুষে শুষস্য মন্মভিঃ।। ৭।। (৮৮) বৃহদ বয়ো হি ভাববেহর্চা
দেবায়াগ্নয়ে। যং মিত্রং ন প্রশস্তয়ে মর্তাসো দধিরে পুরঃ।।৮।। (৮৯) অগন্ম
বৃত্রহন্তনং জ্যেষ্ঠমগ্নিমানবম্ বৃহদনীক ইধ্যতে।।৯।। (৯০) জাতঃ পরেণ ধর্মণা যৎ
সবৃদ্ধিঃ সহাভুবঃ। পিতা যৎ কশ্যপস্যাগ্নিঃ শ্রদ্ধা মাতা মনুঃ কবিঃ।।১০।।
অনুবাদঃ (৮১) হে অগ্নি, হে সদাগমনশীল, শ্রেষ্ঠ ধন বল প্রদান কর; গূঢ় বাক্যের দ্বারা
বোধগম্য আশ্চর্যকর পরমধনের জন্য পথ নির্দেশ কর।। (৮২) মরণশীল মানুষ যদি বীর্যমান
হয়ে নিরন্তর অগ্নিদেবকে উপাসনা করে তবেই দিব্যসুখ ও আশ্রয় লাভ করতে পারে।। (৮৩) হে
পূত শুদ্ধ অগ্নি, তোমার মহান্ ধূম দ্যুলোকে গমন করে বারিরূপে ব্যাপ্ত হয়; তুমি নিজ
সামর্থ্যে সূর্যের মত দীপ্ত হয়ে প্রকাশিত হও।। (৮৪) হে অগ্নি, রাজপুত্রের মত কান্তি
তোমার, বন্ধুর মত আবিষ্ট কর; বিশ্বদ্রষ্টা তুমি হে বহুধন, যশ, আর পুষ্টি দিয়ে
আমাদের পোষণ কর।। (৮৫) বিশ্বে যে অবিনশ্বরকে নশ্বর মানুষেরা হব্যদান ক'রে পূজা করে,
তিনি জনগণের অতিথিবৎ পূজ্য, বহুপ্রিয়, প্রাতঃকালে পূজিত অগ্নিদেব।। (৮৬) উত্তম যে
স্তব তা' অগ্নের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত। হে বিভাবসু, তোমা হতে বিপুল ধন ও অন্ন উৎপন্ন
হয়।। (৮৭) সকল জনের অতিথি, বহুপ্রিয় অগ্নিকে অন্নকাম মানুষ তোমাদের জন্য আমি
যথাশক্তি মননের দ্বারা দূর্জ্ঞেয় বাক্যে তুষ্ট করি।। (৮৮) মর্তের মানুষেরা স্তব
ক'রে যে অগ্নিকে বন্ধুর মত পুরোভাগে স্থাপন করে, সেই দীপ্তশিখা অগ্নিদেবকে মহানন্দে
অর্চনা কর।। (৮৯) যিনি মহান দীপ্তিতে ঋক্ষপুত্র শ্রুতর্বার কাছে প্রকাশিত হয়েছিলেন
সেই প্রথমজাত, পাপনাশক, মানুষের হিতকর অগ্নিকে আমি জানি।। (৯০) যা উৎকৃষ্ট, পরম
ধর্মজাত যা সকলের সঙ্গে মিলিত হয়ে বর্ধিত হয়, যে বিশ্বলোকের (=কশ্যপ) পালয়িতা, সেই
অগ্নিই শ্রদ্ধা, মাতা, ক্রান্তদর্শী মনু। [ কশ্যপ=একপ্রকার আলোক যা সূর্যের
ভ্রমণপথকে নিয়ন্ত্রিত করে ]।।
দশম খন্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ৬।। দেবতাঃ ১ বিশ্বদেবগণ, ২ অঙ্গিরা, ৩-৬ অগ্নি।। ছন্দ
অনুষ্টুপ।। ঋষিঃ ১ অগ্নিস্তাপস, ২।৩ বামদেব কশ্যপ বা অসিত দেবল, ৪ সোমাহুতি ভার্গব
বা ভর্গাহুতি সোম ৫ পায়ু ভারদ্বাজ, ৬ প্রস্কন্ব কান্ব।।
মন্ত্রঃ (৯১) সোমং রাজানং বরুণমগ্নিমন্বারভামহে। আদিত্যং বিষ্ণুং সূর্যং ব্রহ্মাণং
চ বৃহস্পতিম্।।১।। (৯২) ইত এত উদারুহন্দিবঃ পৃষ্ঠান্যারুহন্। প্র ভুর্জয়ো যথা পথো
দ্যামঙ্গিরসো যযুঃ।।২।। রায়ে আগ্নে মহে ত্বা দানায় সমিধিমহি। ঈড়িষ্বা হি মহে বৃষন্
দ্যাবা হোত্রায় পৃথিবী।।৩।। (৯৪) দধন্বে বা যদীমনু বোচদ্ ব্রহ্মেতি বেরু তৎ। পরি
বিশ্বানি কাব্যা নেমিশ্চক্রমিবাভুবৎ।।৪।। (৯৫) প্রত্যগ্নে হরসা হরঃ শৃণাহি
বিশ্বতস্পরি। যাতুধানস্য রক্ষস্যে বলং ব্যুব্জবীর্যম্।।৫।। (৯৬) তমগ্নে বসুঁরিহ
রুদ্রাঁ আদিত্যাঁ উত। যজা স্বধ্বরং জনং মনুজাতং ঘৃতপ্রুষম্।।৬।।অনুবাদঃ (৯১)
আমাদের রক্ষার জন্য আমরা সোমরাজাকে, বরুণ অগ্নিকে আহ্বান করি; আর আহ্বান করি আদিত্য
বিষ্ণু, সুর্য, ব্রহ্মা ও বৃহস্পতিকে।। (৯২) পৃথিবীবিজয়ী রাজা যে পথে দিব্যধামে গমন
করেন আঙ্গিরাগণও সেই পথে দ্যুলোকে গমন করেন।। (৯৩) হে অগ্নি, শ্রেষ্ঠ ধনলাভের জন্য
তোমাকে সন্দীপ্ত করি। হে বর্ষণকারী, মহান্ আহুতিকর্মের জন্য দ্যুলোক ও ভূলোককে
প্রশংসিত কর।। (৯৪) যজ্ঞে উপাসক যে হব্য দান করেন, যে মন্ত্র উচ্চারণ করেন
ব্রহ্মস্বরূপ অগ্নি তা সমস্তই জানেন। নেমি যেমন চক্রকে ব্যাপ্ত করে বর্তমান থাকে
অগ্নিও সেরূপ উপাসকের সমস্ত কর্মই ব্যাপ্ত করে আছেন।। (৯৬) হে অগ্নি, তোমার তেজের
দ্বারা হিংসকের বল নষ্ট কর, বিঘ্নকারীর বলবীর্য ভেঙে দাও।। (৯৬) হে অগ্নি, এই যজ্ঞে
বসু, রুদ্র ও আদিত্যদের অর্চনা কর; সোভন যজ্ঞযুক্ত ও বৃষ্টিপ্রদানকারী মনুজাতদেরও
ভজনা কর।।
নবম খন্ডঃ মন্ত্রসংখ্যা ১০; দেবতা অগ্নি ।। ছন্দ অনুষ্টুপ ।। ঋষিঃ ১ গয় আত্রেয়, ২
বামদেব, ৬।৪ ভরদ্বাজ বার্হস্পত্য, ৫ দ্বিত মৃক্তবাহ্য আত্রেয়, ৩ অত্রিপুত্র বসুগণ,
৭।৯ গোপবন আত্রেয়, ৮ পুরু আত্রেয়, ১০ বামদেব কশ্যপ বা মারীচ অথবা বৈবস্বত মনু অথবা
উভয়কৃত।।
মন্ত্রঃ (৮১) অগ্ন ওজিষ্ঠমা ভর দ্যুম্নমষ্মভ্যমধ্রিগো। প্র নো রায়ে পনীয়সে রৎসি
বাজায় পন্থাম্।।১।। (৮২) যদি বীরো অনুষ্যাদগ্নিমিন্ধীত মর্ত্ত্যঃ।
আজুহ্বধ্বব্যমানুষক্ শর্ম ভক্ষীত দৈব্যম্।।২।। (৮৩) ত্বেষস্তে ধূম ঋন্বতি দিবি
সঞ্ছুক্রু আততঃ। সূরো ন দি দ্যুতা ত্বং কৃপা পাবক রোচসে।।৩।। (৮৪) ত্বং হি
ক্ষৈতবদ্যশোহগ্নে মিত্র ন পত্যসে। ত্বং বিচর্ষণে শ্রবো পুষ্টিং ন পুষ্যতি।।৪।। (৮৫)
প্রাতরগ্নিঃ পুরুপ্রিয়ো বিশ স্তবেতাতিথিঃ। বিশ্বে যস্মিন্নমর্ত্যে হব্যং মর্তাস
ইন্ধতে।।৫।। (৮৬) যদ্ বাহিষ্ঠং তদগ্নয়ে বৃহদর্চ বিভাবসো। মহিষীব ত্বদ্
রয়িস্ত্বদ্ বাজা উদীরতে।।৬।। (৮০) বিশোবিশো বো অতিথিং বাজয়ন্তঃ পুরুপ্রিয়ম্।
অগ্নিং বো দুর্যং বচঃ স্তুষে শুষস্য মন্মভিঃ।। ৭।। (৮৮) বৃহদ বয়ো হি ভাববেহর্চা
দেবায়াগ্নয়ে। যং মিত্রং ন প্রশস্তয়ে মর্তাসো দধিরে পুরঃ।।৮।। (৮৯) অগন্ম
বৃত্রহন্তনং জ্যেষ্ঠমগ্নিমানবম্ বৃহদনীক ইধ্যতে।।৯।। (৯০) জাতঃ পরেণ ধর্মণা যৎ
সবৃদ্ধিঃ সহাভুবঃ। পিতা যৎ কশ্যপস্যাগ্নিঃ শ্রদ্ধা মাতা মনুঃ কবিঃ।।১০।।
অনুবাদঃ (৮১) হে অগ্নি, হে সদাগমনশীল, শ্রেষ্ঠ ধন বল প্রদান কর; গূঢ় বাক্যের দ্বারা
বোধগম্য আশ্চর্যকর পরমধনের জন্য পথ নির্দেশ কর।। (৮২) মরণশীল মানুষ যদি বীর্যমান
হয়ে নিরন্তর অগ্নিদেবকে উপাসনা করে তবেই দিব্যসুখ ও আশ্রয় লাভ করতে পারে।। (৮৩) হে
পূত শুদ্ধ অগ্নি, তোমার মহান্ ধূম দ্যুলোকে গমন করে বারিরূপে ব্যাপ্ত হয়; তুমি নিজ
সামর্থ্যে সূর্যের মত দীপ্ত হয়ে প্রকাশিত হও।। (৮৪) হে অগ্নি, রাজপুত্রের মত কান্তি
তোমার, বন্ধুর মত আবিষ্ট কর; বিশ্বদ্রষ্টা তুমি হে বহুধন, যশ, আর পুষ্টি দিয়ে
আমাদের পোষণ কর।। (৮৫) বিশ্বে যে অবিনশ্বরকে নশ্বর মানুষেরা হব্যদান ক'রে পূজা করে,
তিনি জনগণের অতিথিবৎ পূজ্য, বহুপ্রিয়, প্রাতঃকালে পূজিত অগ্নিদেব।। (৮৬) উত্তম যে
স্তব তা' অগ্নের উদ্দেশ্যে উচ্চারিত। হে বিভাবসু, তোমা হতে বিপুল ধন ও অন্ন উৎপন্ন
হয়।। (৮৭) সকল জনের অতিথি, বহুপ্রিয় অগ্নিকে অন্নকাম মানুষ তোমাদের জন্য আমি
যথাশক্তি মননের দ্বারা দূর্জ্ঞেয় বাক্যে তুষ্ট করি।। (৮৮) মর্তের মানুষেরা স্তব
ক'রে যে অগ্নিকে বন্ধুর মত পুরোভাগে স্থাপন করে, সেই দীপ্তশিখা অগ্নিদেবকে মহানন্দে
অর্চনা কর।। (৮৯) যিনি মহান দীপ্তিতে ঋক্ষপুত্র শ্রুতর্বার কাছে প্রকাশিত হয়েছিলেন
সেই প্রথমজাত, পাপনাশক, মানুষের হিতকর অগ্নিকে আমি জানি।। (৯০) যা উৎকৃষ্ট, পরম
ধর্মজাত যা সকলের সঙ্গে মিলিত হয়ে বর্ধিত হয়, যে বিশ্বলোকের (=কশ্যপ) পালয়িতা, সেই
অগ্নিই শ্রদ্ধা, মাতা, ক্রান্তদর্শী মনু। [ কশ্যপ=একপ্রকার আলোক যা সূর্যের
ভ্রমণপথকে নিয়ন্ত্রিত করে ]।।
দশম খন্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ৬।। দেবতাঃ ১ বিশ্বদেবগণ, ২ অঙ্গিরা, ৩-৬ অগ্নি।। ছন্দ
অনুষ্টুপ।। ঋষিঃ ১ অগ্নিস্তাপস, ২।৩ বামদেব কশ্যপ বা অসিত দেবল, ৪ সোমাহুতি ভার্গব
বা ভর্গাহুতি সোম ৫ পায়ু ভারদ্বাজ, ৬ প্রস্কন্ব কান্ব।।
মন্ত্রঃ (৯১) সোমং রাজানং বরুণমগ্নিমন্বারভামহে। আদিত্যং বিষ্ণুং সূর্যং ব্রহ্মাণং
চ বৃহস্পতিম্।।১।। (৯২) ইত এত উদারুহন্দিবঃ পৃষ্ঠান্যারুহন্। প্র ভুর্জয়ো যথা পথো
দ্যামঙ্গিরসো যযুঃ।।২।। রায়ে আগ্নে মহে ত্বা দানায় সমিধিমহি। ঈড়িষ্বা হি মহে বৃষন্
দ্যাবা হোত্রায় পৃথিবী।।৩।। (৯৪) দধন্বে বা যদীমনু বোচদ্ ব্রহ্মেতি বেরু তৎ। পরি
বিশ্বানি কাব্যা নেমিশ্চক্রমিবাভুবৎ।।৪।। (৯৫) প্রত্যগ্নে হরসা হরঃ শৃণাহি
বিশ্বতস্পরি। যাতুধানস্য রক্ষস্যে বলং ব্যুব্জবীর্যম্।।৫।। (৯৬) তমগ্নে বসুঁরিহ
রুদ্রাঁ আদিত্যাঁ উত। যজা স্বধ্বরং জনং মনুজাতং ঘৃতপ্রুষম্।।৬।।
অনুবাদঃ (৯১) আমাদের রক্ষার জন্য আমরা সোমরাজাকে, বরুণ অগ্নিকে আহ্বান করি; আর
আহ্বান করি আদিত্য বিষ্ণু, সুর্য, ব্রহ্মা ও বৃহস্পতিকে।। (৯২) পৃথিবীবিজয়ী রাজা যে
পথে দিব্যধামে গমন করেন আঙ্গিরাগণও সেই পথে দ্যুলোকে গমন করেন।। (৯৩) হে অগ্নি,
শ্রেষ্ঠ ধনলাভের জন্য তোমাকে সন্দীপ্ত করি। হে বর্ষণকারী, মহান্ আহুতিকর্মের জন্য
দ্যুলোক ও ভূলোককে প্রশংসিত কর।। (৯৪) যজ্ঞে উপাসক যে হব্য দান করেন, যে মন্ত্র
উচ্চারণ করেন ব্রহ্মস্বরূপ অগ্নি তা সমস্তই জানেন। নেমি যেমন চক্রকে ব্যাপ্ত করে
বর্তমান থাকে অগ্নিও সেরূপ উপাসকের সমস্ত কর্মই ব্যাপ্ত করে আছেন।। (৯৬) হে অগ্নি,
তোমার তেজের দ্বারা হিংসকের বল নষ্ট কর, বিঘ্নকারীর বলবীর্য ভেঙে দাও।। (৯৬) হে
অগ্নি, এই যজ্ঞে বসু, রুদ্র ও আদিত্যদের অর্চনা কর; সোভন যজ্ঞযুক্ত ও
বৃষ্টিপ্রদানকারী মনুজাতদেরও ভজনা কর।।
একাদশ খন্ড।। মন্ত্র সংখ্যা ১০।। দেবতা অগ্নি; ৫ পবমান সোম; ৬ অদিতি।। ছন্দ
ঊষ্ণিক্।। ঋষিঃ ১ দীর্ঘতমা ঔচথা, ২।৪ গাথি বিশ্বামিত্র, ৩ গোতম রাহুগণ, ৫ ত্রিত
আপ্ত্য, ৬ ইরিম্বিঠি কান্ব, ৭।৮।১০ বিশ্বমনা বৈয়শ্ব, ৮ ঋজিশ্বা ভারদ্বাজ।।
মন্ত্রঃ (৯৭) পুরু ত্বা দাশিবাং বোচেহরিরগ্নে তব স্বিদা। তোদস্যেব শরণ আ মহস্য।।১।।
(৯৮) প্র হোত্রে পূর্ব্যং বচোহগ্নয়ে ভরতা বৃহৎ। বিপাং জ্যোতীংষি বিভ্রতে ব
বেধসে।।২।। (৯৯) অগ্নে বাজস্য গোমত ঈশানঃ সহসো যহো। অস্মে দেহি জাতবেদো মহি
শ্রবঃ।।৩।। (১০০) অগ্নে যজিষ্ঠো অধ্বরে দেবান্ দেবয়তে যজ। হোতা মন্দ্রো বি
রাজস্যতি স্রিধঃ।।৪।। (১০১) জজ্ঞানঃ সপ্ত মাতৃভির্মেধামাশাসত শ্রিয়ে। অয়ং ধ্রুবো
রয়ীণাং চিকেতদা।।৫।। (১০২) উত স্যা নো দিবা মাতরদিতিরূত্যাগমৎ। সা শন্তানা ময়স্করদপ
স্রিধঃ।।৬।। (১০৩) ঈদিষ্বা হি প্রতীব্যাংত যজস্ব জাতবেদসম্। চরিষ্ণু
ধূমমগৃভীতশোচিষম।।৭।। (১০৪) ন তস্য মায়য়া চ ন রিপুরীশীত মর্ত্যঃ। যো অগ্নয়ে দদাশ
হব্যদাতয়ে।।৮।। (১০৫) অপ ত্যং বৃজিনং রিপুং স্তেনমগ্নে দুরাধ্যম্। দবিশ্বমস্য
সয়পতে কৃধী সুগম্।।৯।। (১০৬) শ্রুষ্ট্যগ্নে নবস্য মে স্তোমস্য বীর বিশ্পতে। নি
মায়িনস্তপসা রক্ষস্যে দহ।।১০।।
অনুবাদঃ (৯৭) হে অগ্নি, আমি তোমার উদ্দেশে অনেক হব্য দান ক'রে তোমার কাছে অনেক
কামনা করি। হে অগ্নি, মহান্ প্রভুর গৃহে যেমন সেবক থাকে, আমিও তোমার তেমনি সেবক।।
(৯৮) হে নরগণ, মেধাসম্পন্নদের তেজ ধারণকারী জগৎনিয়ন্তা, দেবগণের আহ্বানকারী
অগ্নিদেবের উদ্দেশে মহান সনাতন বাণী উচ্চারণ কর। (৯৯) হে অগ্নি, তুমি বলজাত, তুমি
বাক্, বল ও অন্নের ঈশ্বর; হে জাতবেদা, আমাদের মহান প্রখ্যাত অন্ন বল দাও। (১০০) হে
অগ্নি, তুমি যজ্ঞকারিগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ যাজ্ঞিক, যারা দেবকাম তাদের জন্য তুমি
দেবতাদের মিলিত কর; তুমি হোতা আনন্দময়, তুমি অবিশ্বাসীকে পরাভূত ক'রে বিরাজ কর।
(১০১) সোম যখন জন্মালেন তখন সপ্তমাতারূপিণী সপ্তছন্দ সৌন্দর্যের জন্য সোমকে ঘিরে
স্তব করতে লাগলেন, কারণ তিনি সর্বজ্ঞ, আর তিনিই নিশ্চিত ধনের সন্ধান জানেন। (১০২)
সেই অখন্ড মননশক্তি আমাদের নিত্য রক্ষার জন্য আগমন করুন; তিনি আমাদের শান্তিকর সুখ
বিধান করুন, বিঘ্ন নাশ করুন।।১০৩।। যিনি বিঘ্ননাশকারী, জাতবেদা, যাঁর ধূম সর্বত্র
সঞ্চারিত, যাঁর তেজ কেহ গ্রহন করতে পারে না, সেই অগ্নিকে স্তব কর, পূজা কর।। (১০৪)
যিনি কর্মফলদাতা অগ্নির উদ্দেশে দান করেন তার শত্রু কোন প্রকার মায়াদ্বারা তার কোন
ক্ষতি করতে পারে না।। (১০৫) হে অগ্নি, সেই কুটিলপথগামীকে, শত্রুকে, চোরকে,
দারিদ্র্যকে নাশ কর। হে সজ্জনপালক, এই সমস্ত দূর ক'রে আমাদের সুপথগামী কর।। (১০৬)
হে বীর, হে জনগণপালক, আমার এই নতুন স্ত্রোত্র শুনে মায়াসৃষ্টিকারী বিঘ্নকারক
শক্তিকে তোমার তপের তাপে দহন কর।।
দ্বাদশ খন্ডঃ মন্ত্র সংখ্যা ৮।। দেবতা অগ্নি।। ছন্দ ১-৭, ককূপ, ৮ ঊষ্ণিক।। ঋষিঃ ১।৪
প্রয়োগ ভার্গব অথবা সৌভরি কান্ব, ২।৩।৫।৬।৭ সৌভরি কান্ব, ৮ বিশ্বমনা বৈয়শ্ব।।
মন্ত্রঃ (১০৭) প্র মংহিষ্ঠায় গায়ত ঋতাব্নে বৃহতে শুক্রশোচিষে। উপস্তুতাসো
অগ্নয়ে।।১।। (১০৮) প্র সো অগ্নে তবোতিভিঃ সুবীরাভিস্তরতি বাজকর্মভিঃ। যস্য ত্বং
সখ্যমাবিথ।।২।। (১০৯) তং গূর্ধয়া স্বর্ণরং দেবাসো দেবমরতিং দধন্বিরে। দেবত্রা
হব্যমুহিষে।।৩।। (১১০) মা নো হৃণীথা অতিথিং বসুরগ্নিঃ পুরুপ্রশস্ত এষঃ। যঃ সুহোভা
স্বধ্বরঃ।।৪।। (১১১) ভদ্রো নো অগ্নিরাহুতে ভদ্রা রাতিঃ সুভগ ভদ্রো অধ্বরঃ। ভদ্রা উত
প্রশস্তয়ঃ।।৫।। (১১২) যজিষ্ঠং ত্বা ববৃমহে দেবং দেবত্রা হোতারমমর্ত্যম্। অস্য
যজ্ঞস্য সুক্রতুম্।।৬।। (১১৩) তদগ্নে দ্যুন্মমা ভর যৎসাসাহা সদনে কঞ্চিদত্রিণম্।
মন্যুং জনস্য দূঢ্যম্।।৭।। (১১৪) যদ্বা উ বিশ্পতিঃ শিতঃ সুপ্রীতো মনুষো বিশে।
বিশ্বেদগ্নিঃ প্রতি রক্ষাংসি সেধতি।।
অনুবাদঃ
(১০৭) হে স্তোতাগণ, তোমরা শ্রেষ্ঠদাতা, সত্যধর্মা, মহান, পবিত্র দীপ্তিময় অগ্নির
উদ্দেশে গান কর।। (১০৮) হে অগ্নি, তুমি যাকে সখা কর সে তোমার দেওয়া উত্তম বল ও
অন্নদ্বারা সকল বিঘ্ন অতিক্রম করে।। (১০৯) হে স্তোতা, যিনি দ্যুলোকে হব্য নিয়ে যান
সেই প্রসিদ্ধ অগ্নির স্তব কর; বিদ্বান্গণ তাঁরই কাছে গমন করেন এবং তাঁর মাধ্যমে
দেবগণকে হব্য প্রদান করেন।। (১১০) যিনি দেবগণের উত্তম আহ্বানকারী, যিনি সুযাজ্ঞিক
সেই অতিপ্রশস্ত ধনপ্রদ অতিথি অগ্নি যেন আমাদের অনাদর না করেন।। (১১১) সম্যক্ পূজিত
অগ্নি আমাদের জন্য কল্যাণকর হোন; হে শোভনধন অগ্নি, তোমার দান আমাদের কল্যাণ করুক;
এই অহিংসিত যজ্ঞ কল্যাণময় হোক; আমাদের স্তুতি কল্যাণকর হোক; (১১২) হে অগ্নি, তুমি
শ্রেষ্ঠ যাজ্ঞিক, দেবগণের দেব, তুমি হোতা, তুমি অমর; এই যজ্ঞের সুকর্মা তোমাকে আমরা
বরণ করি।। (১১৩) হে অগ্নি, আমাদের সেই ধন দাও যে ধন গৃহে প্রবিষ্ট দুষ্ট
বিধ্নকারীকে পরাভূত করে ও পাপবুদ্ধি ব্যক্তির ক্রোধ অভিভূত করে। (১১৪) জনগণের পালক
তীক্ষ্ণ অগ্নি প্রীত হয়ে যখন গৃহে অবস্থান করেন তখন তিনি সকল বিঘ্ন সমূলে বিনাশ
করেন।।