পবিত্র বাইবেল
পুরাতন নিয়ম।
আদিপুস্তক
অধ্যায় ১১
বাবিলে
ভাষা-ভেদ
১১
১. সমস্ত পৃথিবীতে এক ভাষা ও একরূপ কথা ছিল।
২. পরে লোকেরা পূর্ব্বদিকে ভ্রমণ করিতে করিতে শিনিয়র দেশে এক সমস্থলী পাইয়া সেই
স্থানে বসতি করিল;
৩. আর পরস্পর কহিল, আইস, আমরা ইষ্টক নির্ম্মাণ করিয়া অগ্নিতে দগ্ধ করি; তাহাতে
ইষ্টক তাহাদের প্রস্তর ও মেটিয়া তৈল তাহাদের চুণ হইল।
৪. পরে তাহারা বলিল, আইস, আমরা আপনাদের নিমিত্তে এক নগর ও গগনস্পর্শী এক উচ্চগৃহ
নির্ম্মাণ করিয়া আপনাদের নাম বিখ্যাত করি, পাছে সমস্ত ভূমণ্ডলে ছিন্নভিন্ন হই।
৫. পরে মনুষ্য-সন্তানেরা যে নগর ও উচ্চগৃহ নির্ম্মাণ করিতেছিল তাহা দেখিতে সদাপ্রভু
নামিয়া আসিলেন।
৬. আর সদাপ্রভু কহিলেন, দেখ, তাহারা সকলে এক জাতি ও এক ভাষাবাদী; এখন এই কর্ম্মে
প্রবৃত্ত হইল; ইহার পরে যে কিছু করিতে সঙ্কল্প করিবে তাহা হইতে নিবারিত হইবে না।
৭. আইস, আমরা নিচে গিয়া সেই স্থানে তাহাদের ভাষার ভেদ জন্মাই, যেন তাহারা একজন
অন্যের ভাষা বুঝিতে না পারে।
৮. আর সদাপ্রভু তথা হইতে সমস্ত ভূমণ্ডলে তাহাদিগকে ছিন্নভিন্ন করিলেন, এবং তাহারা
নগর পত্তন হইতে নিবৃত্ত হইল।
৯. এই জন্য সেই নগরের নাম বাবিল (ভেদ) থাকিল; কেননা সেই স্থানে সদাপ্রভু সমস্ত
পৃথিবীর ভাষার ভেদ জন্মাইয়াছিলেন, এবং তথা হইতে সদাপ্রভু তাহাদিগকে সমস্ত ভূমণ্ডলে
ছিন্নভিন্ন করিয়াছিলেন।
শেম-বংশের বিবরণ
১০
১. শেমের বংশ-বৃত্তান্ত এই। শেম একশত বৎসর বয়সে, জলপ্লাবনের দুই বৎসর পরে,
অর্ফক্ষদের জন্ম দিলেন।
১১. অর্ফক্ষদের জন্ম দিলে পর শেম পাঁচ শত বৎসর জীবিত থাকিয়া আরও পুৎত্রকন্যার জন্ম
দিলেন।
১২.অর্ফক্ষদ পঁয়ত্রিশ বৎসর বয়সে শেলহের জন্ম দিলেন।
১৩. শেলহের জন্ম দিলে পর অর্ফক্ষদ চারি শত তিন বৎসর জীবিত থাকিয়া আরও পুৎত্রকন্যার
জন্ম দিলেন।
১৪. শেলহ ত্রিশ বৎসর বয়সে এবরের জন্ম দিলেন।
১৫. এবরের জন্ম দিলে পর শেলহ চারি শত তিন বৎসর জীবিত থাকিয়া আরও পুৎত্রকন্যার জন্ম
দিলেন।
১৬. এবর চৌত্রিশ বৎসর বয়সে পেলগের জন্ম দিলেন।
১৭. পেলগের জন্ম দিলে পর এবর চারি শত ত্রিশ বৎসর জীবিত থাকিয়া আরও পুৎত্রকন্যার
জন্ম দিলেন।
১৮. পেলগ ত্রিশ বৎসর বয়সে রিয়ূর জন্ম দিলেন।
১৯. রিয়ূর জন্ম দিলে পর পেলগ দুই শত নয় বৎসর জীবিত থাকিয়া আরও পুৎত্রকন্যার জন্ম
দিলেন।
২০. রিয়ূ বত্রিশ বৎসর বয়সে সরূগের জন্ম দিলেন।
২১. সরূগের জন্ম দিলে পর রিয়ূ দুই শত সাত বৎসর জীবিত থাকিয়া আরও পুৎত্রকন্যার জন্ম
দিলেন।
২২. সরূগ ত্রিশ বৎসর বয়সে নাহোরের জন্ম দিলেন।
২৩. নাহোরের জন্ম দিলে পর সরূগ দুই শত বৎসর জীবিত থাকিয়া আরও পুৎত্রকন্যার জন্ম
দিলেন। ২৪. নাহোর ঊনত্রিশ বৎসর বয়সে তেরহের জন্ম দিলেন।
২৫. তেরহের জন্ম দিলে পর নাহোর একশত ঊনিশ বৎসর জীবিত থাকিয়া আরও পুৎত্রকন্যার জন্ম
দিলেন।
২৬. তেরহ সত্তর বৎসর বয়সে অব্রাম, নাহোর ও হারণের জন্ম দিলেন।
২৭. তেরহের বংশ-বৃত্তান্ত এই। তেরহ অব্রাম, নাহোর ও হারণের জন্ম দিলেন।
২৮. আর হারণ লোটের জন্ম দিলেন। কিন্তু হারণ তাঁহার নিজের পিতা তেরহের সাক্ষাতে আপন
জন্মস্থান কল্দীয় দেশের ঊরে প্রাণত্যাগ করিলেন।
২৯. অব্রাম ও নাহোর উভয়েই বিবাহ করিলেন; অব্রামের স্ত্রীর নাম সারী ও নাহোরের
স্ত্রীর নাম মিল্কা। এই স্ত্রী হারণের কন্যা;
৩০. হারণ মিল্কার ও যিষ্কার পিতা। সারী বন্ধ্যা ছিলেন, তাঁহার সন্তান হইল না।
৩১. আর তেরহ আপন পুত্র অব্রামকে ও হারণের পুত্র অর্থাৎ আপন পৌত্র লোটকে এবং
অব্রামের স্ত্রী সারী নাম্নী পুত্রবধূকে সঙ্গে লইলেন; তাঁহারা একসঙ্গে কনান দেশে
যাইবার নিমিত্তে কল্দীয় দেশের ঊর হইতে যাত্রা করিলেন; আর হারণ নগর পর্যন্ত গিয়া
তথায় বসতি করিলেন।
৩২. পরে তেরহের দুই শত পাঁচ বৎসর বয়স হইলে ঐ হারণে তাঁহার মৃত্যু হইল।