বেদব্যাস বিরচিত
কালীপ্রসন্ন সিংহ অনূদিত
মহাভারত
অনুসরণ : তুলি-কলম। জ্যৈষ্ঠ, ১৩৯৪। জুন, ১৯৮৭।
মহাভারত অতি বৃহৎ গ্রন্থ।
সংস্কৃত ভাষায় এতাদৃশবিস্তীর্ণ গ্রন্থ আর দেখিতে পাওয়া যায় না। ইহা ইতিহাস বলিয়াই
প্রসিদ্ধ; কিন্তু কোন কোন স্থলে ইহা পুরাণ এবং পঞ্চম বেদ শব্দেও উক্ত হইয়াছে।
বস্তুতঃ মহাভারতে পুরাণের সমস্ত লক্ষণ বিদ্যমান আছে, এবং স্থানে স্থানে বেদের
আখ্যানও বর্ণিত হইয়াছে। ইহাতে দেবচরিত, ঋষিচরিত ও রাজচরিত কীর্ত্তিত হইয়াছে এবং
নানাপ্রকার উপাখ্যানাদিও লিখিত আছে। অতি বিস্তৃত মহাভারত গ্রন্থে অনেক প্রকার
রাজনীতি ও ধর্ম্মনীতি উক্ত হইয়াছে, এবং নানাবিধ লৌকিকাচার ও বিষয়-ব্যবহারও বর্ণিত
আছে। যাহাতে ভারতবর্ষের পূর্ব্ববৃত্তান্ত সমস্ত জ্ঞাত হইয়া সম্পূর্ণরূপে চরিতার্থ
হইতে পারা যায়, সংস্কৃত ভাষায় এতাদৃশ কোন প্রকৃত পুরাগ্রন্থ দৃষ্ট হয় না। কিন্তু
মহাভারত পাঠ করিলে সে ক্ষোভ অনেক অংশে দূর হইতে পারে। যেরূপ পদ্ধতি অনুসারে
অন্যান্য দেশের পুরাবৃত্ত লিখিত হইয়া থাকে, মহাভারত তদ্রূপ প্রথানুক্রমে রচিত নহে,
কিন্তু কোন বিচক্ষণ লোকে মনোযোগপুর্ব্বক ইহার আদ্যোপান্ত পাঠ করিয়া দেখিলে যে
ভারতবর্ষের পূর্ব্বকালীন আচার, ব্যবহার, ধর্ম্ম ও বিষয়-ব্যবহারের অনেক পরিচয়
প্রাপ্ত হইতে পারেন, তাহাতে আর সন্দেহ নাই।
কোন কোন বিষয় বিবেচনা করিলে মহাভারত যেমন পুরাবৃত্তমধ্যে
পরিগণিত হইতে পারে, সেইরূপ কোন কোন অংশে ইহাকে নীতি-শাস্ত্র বলিলেও বলা যায়। ইহার
অনেক স্থানে সুষ্পষ্টরূপে অনেক উপাখ্যানাদি বর্ণিত হইয়াছে। মহাভারতের রচনাকর্ত্তা
এবং ভারতবর্ষীয় অপরাপর পূর্ব্বতন ঋষিগণ উল্লিখিত অসামান্য গ্রন্থের অধ্যয়ন ও
শ্রবণের যে সমস্ত অসাধারণ অলৌকিক ফলশ্রুতি বর্ণন করিয়া গিয়াছেন, তাহাতে আস্থাশূন্য
হইলেও ইহার শ্রবণ ও অধ্যয়ন দ্বারা নীতি, জ্ঞান ও বিষয়-ব্যবহার জ্ঞানাদি অনেক প্রকার
উপকার লাভ করিয়া সুখী হওয়া যাইতে পারে, সন্দেহ নাই।
এই গ্রন্থ হইতে উৎকৃষ্ট উৎকৃষ্ট নীতি সকল সঙ্কলন করিয়া
এতদ্দেশীয় অনেক পণ্ডিত প্রশংসনীয় নীতিশাস্ত্র রচনা দ্বারা জনসমাজে প্রতিষ্ঠিা লাভ
করিবাছেন, এবং ভারতবর্ষের অনেক কবিও ইহার অনেক মনোহর আখ্যান অবলম্বনপূর্বক অনুপম
আশ্চর্য্য কাব্য-নাটকাদি রচনা করিয়া কাব্য-রসরসিক জনগণের চিত্তবিনোদ সাধন করিয়াছেন।
শাস্ত্রব্যবসায়ী পণ্ডিতগণও উল্লিখিত গ্রন্থ হইতে সর্ব্বদা শ্লোক সকল উদ্ধৃত করিয়া
লোকদিগকে নীতিশিক্ষা প্রদান করেন। ফলতঃ ভারতান্তর্গত অনেক উপদেশ শ্রবণ করিয়া যে
ভারতবর্ষীয় লোকে অনেক প্রকার নীতিজ্ঞান লাভ করিয়াছে, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। অতি
বিস্তীর্ণ ভারত-গ্রন্থে প্রায় মনুষ্যের সকল প্রকার অবস্থাই বর্ণিত আছে, সুতরাং ইহা
হইতে সকল অবস্থার অনুরূপ উপদেশ প্রাপ্ত হইয়া লোকে সাবধানে সংসার-যাত্রা নির্ব্বাহ
করিতে পারে। এই গ্রন্থ এদেশের সবিশেষ গৌরবস্বরূপ। কোন ভিন্নদেশীয় পণ্ডিত নিরপেক্ষ
হইয়া ইহার আদ্যোপান্ত পাঠ করিয়া দেখিলে অবশ্যই গ্রন্থকর্তার আশ্চর্য্য অধ্যাবসায়,
অসামান্য রচনানৈপূণ্য, প্রগাঢ় ভাবমাধুরী ও উদার উদ্দেশ্যের যশঃকির্ত্তন করেন,
সন্দেহ নাই।
অসামান্য যত্ন-সম্পন্ন ভারতগ্রন্থ যে, কোন্ সময় ও ভারতবর্ষের কি
প্রকার অবস্থায় রচিত হইয়াছে, তাহা সংশয়শূন্য হইয়া অবধারিত করা নিতান্ত কঠিন। কিন্তু
বেদরচনার অনেক পরে যে ইহার রচনা হইয়াছে, তাহা ইহার রচনাতাৎপর্য্য ও উপাখ্যানাদি
দ্বারাই সহজে প্রতিপন্ন হইতেছে। বেদের ভাষার সহিত ইহার ভাষার তুলনা করিয়া দেখিলেই
ইহাকে বেদাপেক্ষা আধুনিক বোধ হয় এবং ইহার মধ্যে বেদের আখ্যানাদিও দেখিতে পাওয়া যায়।
ইহার মধ্যে রাজনীতি, ধর্ম্মনীতি, লোকযাত্রাবিধান, বাণিজ্য-কৃষিকার্য্য ও
শিল্পশাস্ত্রাদি সংক্রান্ত যে সকল কথা বর্ণিত আছে, কোন আদিম-কালবর্ত্তী অসভ্যাবস্থা
লোকের চিন্তাপথে তৎসমুদয় উদিত হওয়া কোনক্রমেই সম্ভব হইতে পারে না। অতএব যে সময়
ভারতবর্ষে বিলক্ষণ রূপে সভ্যতার প্রচার ও জ্ঞানের বিস্তার হইয়াছিল, মহাভারত যে
তৎকালে রচিত গ্রন্থ, সে বিষয়ে কোন সংশয় জন্মিতে পারে না।
অশেষ জ্ঞানাধার ও নীতিগর্ভ মহাভারত গ্রন্থ এদেশীয় সর্ব্বসধারণ
লোকের বোধসুলভ করিবার উদ্দেশে, কাশীরাম দাস তাঁহার অষ্টাদশ-পর্ব্ব বাঙ্গালা ভাষায়
পদ্যে অনুবাদ করিয়া গিয়েছেন এবং এপর্য্যন্ত পৌরাণিক পণ্ডিতেরাও স্থানে স্থানে
দেশীয় ভাষায় উক্ত গ্রন্থের ব্যাখ্যা করিয়া থাকেন। কিন্তু কাশীরাম দাসের গ্রন্থপাঠ,
অথবা বেদীস্থিত পৌরাণিকদিগের ব্যাখ্যা শ্রবণ করিয়া মহাভারত যে কি পদার্থ ইহা যথার্থ
রূপে জানিবার সম্ভাবনা নাই। কাশীরাম দাস স্বরচিত গ্রন্থের সৌন্দর্য্য-সম্পাদনমানসে
এবং সর্ব্বসাধারণ লোকের চিত্তরঞ্জন উদ্দেশে ব্যাসপ্রোক্ত মূল গ্রন্থের বহির্ভূত
অনেক কথা রচনা করিয়া আপনার কবিত্বশক্তি প্রকাশ করিয়াছেন, এবং মূলের লিখিত অনেক স্থল
পরিত্যাগ করিয়া আপনার শ্রম লাঘব করিতে চেষ্টা পাইয়াছেন। ইদানীন্তন পুরাণ-বক্তা
পণ্ডিত মহাশয়েরাও শ্রোতাদিগের শ্রবণ-সুখসম্পাদনাভিলাষে এবং আপনাদিগের
হাস্যকরুণাদি-রসসাধনীশক্তি প্রকাশ করিবার মানসে কাশীরাম দাসের অনুকরণ করিয়া মূল
গ্রন্থ পরিত্যাগপূর্ব্বকও অনেক প্রকার নূতন কথার ব্যাখ্যা করেন এবং শ্রোতাদিগের
শ্রবণের অনুপযুক্ত আশঙ্কা করিয়া মূল গ্রন্থের অনেক স্থল পরিত্যাগ করিয়া থাকেন। এই
দেশীয় সর্ব্বসাধারণ লোকের মহাভারতের প্রকৃত পরিচয় প্রাপ্ত হইবার উল্লিখিত উভয় পথে
যখন উক্ত প্রকার বিষম প্রতিবন্ধক বিদ্যমান রহিয়াছে, তখন গুরুতর পরিশ্রম
স্বীকারপূর্বক সংস্কৃত ভাষায় বিশেষ পারদর্শী হইয়া স্বয়ং মহাভারত পাঠ বা কোন যোগ্য
পণ্ডিতের মুখে প্রত্যেক শ্লোকের ব্যাখ্যা শ্রবণ না করিলে আর মহাভারত যে কি
ইহা জানিবার উপায় নাই। কিন্তু এক্ষণে এদেশে দিন দিন সংস্কৃত ভাষায় যে প্রকার
অননুশীলন এবং অনাদর হইয়া আসিতেছে তাহাতে বরং সংস্কৃত গ্রন্থসকল ক্রমে এদেশীয় লোকের
নিকট হইতে তিরোহিত হইবার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা বোধ হয়। অতএব যাহাতে এদেশিয় লোকে অতীব
আদরণীয় ভারত-গ্রন্থের সমস্ত মর্ম্ম প্রকৃত রূপে অবগত হইয়া সুখী হইতে পারেন
এবং যাহাতে ভারতবর্ষের গৌরবস্বরূপ মহাভারতের অবশ্যম্ভব মর্য্যাদা চিরদিন
বর্ত্তমান থাকে, তাহার উপযুক্ত উপায় নির্দ্ধারণ করিবার উদ্দেশে আমি এই দুঃসাধ্য ও
চিরসঙ্কল্পিত ব্রতে ব্রতী হইয়াছি।
এক্ষণে আমাদিগকে দেশের মধ্যে নানাস্থানে নানা বিদ্যোৎসাহী ও
স্বদেশহিতানুরাগী মহানুভবগণ ইংরেজী ভাষার বিবিধ জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থ বাঙ্গালা ভাষায়
অনুবাদ করিয়া দেশের হিতসাধনে তৎপর হইয়াছেন। কেহ বিজ্ঞানশাস্ত্রের অনুবাদ করিতেছেন,
কেহ সাহিত্যের অনুবাদ করিয়া প্রচার করিতেছেন, কেহ পুরাবৃত্তাদি গ্রন্থের
অনুবাদপ্রসঙ্গেও আমোদিত হইয়াছেন। ইহা দেখিয়াও আমার মনে হইল যে, যেমন অনুবাদ দ্বারা
ভিন্ন দেশের গ্রন্থান্তর্গত অমূল্য জ্ঞানরত্ন সকল সঞ্চয় করিয়া স্বদেশের গৌরববৃদ্ধি
করা উচিত, সেইরূপ স্বদেশীয় মহানুভব পুরুষদিগের মানসোদিত আশ্চর্য্য তত্ত্ব সকল
স্থায়ী হইবার উপায় বিধান করাও একান্ত কর্ত্তব্য। স্বদেশের জ্ঞানোন্নতি সংসাধন ও
জ্ঞানগৌরব রক্ষা করাই তাহার প্রকৃত হিত সাধন করা। সুদূরপ্রস্থিত প্রশস্ত পন্থাও
কালেতে বিলুপ্ত হয়, সুদীর্ঘ দীর্ঘিকাও সময়ে শুষ্ক হইয়া যায়, অত্যূচ্চ প্রাসাদও কালে
ভগ্ন ও চূর্ণ হইয়া গিয়া থাকে এবং পরিখাপরিবেষ্টিত দুর্গম দুর্গেরও ক্রমেই নাশ হইয়া
থাকে, কিন্তু প্রগাঢ় জ্ঞানচিহ্ন দেশ হইতে শীঘ্র অপনীত হইবার নহে। এই বিবেচনায় আমি
স্বীয় যৎ-সামান্য পরিমিত শক্তি দ্বারা বাঙ্গালা ভাষায় প্রবিস্তীর্ণ মহাভারতের
অনুবাদ করিত স্বদেশের হিত সাধন করিতে সাহসী হইয়াছি।
মহাভারত যেরূপ দুরূহ গ্রন্থ, যাদৃশ অল্পবুদ্ধি জনকর্ত্তৃক ইহা
সম্যক্রূপে অনুবাদিত হওয়া নিতান্ত দুষ্কর। এই নিমিত্ত ইহার অনুবাদসময়ে অনেক
কৃতবিদ্য মহোদয়গণের ভূয়িষ্ঠ সাহায্য গ্রহণ করিতে হইয়াছে, এমনকি তাঁহাদের পরামর্শ ও
সাহায্যের উপর নির্ভর করিয়া আমি এই গুরুতর ব্যাপারের অনুবষ্ঠানে প্রবৃত্ত হইয়াছি,
তন্নিমিত্ত ঐ সকল মহানুভবদিগের নিকট চিরজীবন কৃতজ্ঞতাপাশে বদ্ধ রহিলাম।
আমি যে দুঃসাধ্য ও চিরজীবনসেব্য কঠিন ব্রতে কৃতসংকল্প হইয়াছি
তাহা যে নিবিগ্নে শেষ করিতে পারিব, আমার এপ্রকার ভরসা নাই। যদি জগদীশ্বর-প্রসাদে
পৃথিবীমধ্যে কুত্রাপি বাঙ্গালা প্রচলিত থাকে, আর কোন কালে এক অনুবাদিত পুস্তক কোন
ব্যক্তির হস্তে পতিত হওয়ায় সে ইহার মর্ম্মানুধাবন করত হিন্দুকুলের
কীর্ত্তিস্তম্ভস্বরূপ ভারতের মহিমা অবগত হইতে সক্ষম হয়, তাহা হইলেই আমার সমস্ত
পরিশ্রম সফল হইবে।
অষ্টাদশপর্ব্ব সমগ্র মহাভারত অনুবাদ করত একত্রে মুদ্রিত করিয়া
প্রকাশ করিতে হইলে, দীর্ঘ কালের মধ্যেও সম্পন্ন হওয়া কঠিন। অতএব ইহা ক্রমশ খণ্ড
খণ্ড করিয়া মুদ্রিত করাই উপযুক্ত বিবেচনা করিয়া, ইহার দোষ গুণ অবগত হইবার জন্য
আপাততঃ আদিপর্ব্বের প্রথমাবধি পৌষ্য, পৌলোম ও আস্তীক পর্ব্বাধ্যায়ের
শকুন্তলোপাখ্যান পর্যন্ত প্রথম খণ্ড সাধারণ সমীপে অর্পণ করিতেছি, করুণাশীল সুধীগণ
ইহার অবশ্যম্ভাবী অপেক্ষিত দোষরাশি মার্জ্জনা করিয়া উৎসাহ প্রদান করিলে অচিরে অপর
খণ্ড প্রকাশ করিতে উৎসাহান্বিত হইব।
কলিকাতা, ১৭৮১ শকাব্দ
শ্রীকালীপ্রসন্ন সিংহ
ভূমিকা
মহাভারতীয় সভাপর্ব অনুবাদিত
ও মুদ্রিত হইল। এ খণ্ডে লোকপালদিগের সভাবর্ণন, রাজসূয় যজ্ঞ, দ্যূতক্রীড়া, সভামধ্যে
দ্রৌপদীর কেশাকর্ষণ ও বস্ত্রহরণ প্রভৃতি নিগ্রহ, পাণ্ডবগণের নির্ব্বাসন ও কুন্তীর
বিলাপাদি সমুদায় বিষয় অবিকল অনুবাদিত হইয়াছে। যে কারণে অতি বিশাল কৌরবকুলে
ভ্রাতৃবিরোধের সূত্রপাত হয়, যে কারণে ধর্ম্মাত্মা যুধিষ্ঠির সাম্রাজ্যভ্রষ্ট হইয়া
ভার্য্যা ও ভ্রাতৃগণের সহিত প্রাকৃত জনের ন্যায় ত্রয়োদশ বৎসর বনবাসে জীবনযাত্রা
নির্ব্বাহিত করেন, যে কারণে অষ্টাদশ অক্ষৌহিনী সেনা সমরানলে পতঙ্গবৃত্তি অবলম্বন
করে, যে কারণে দুর্জ্জয় ধার্ত্তরাষ্ট্রগণ সমূলে নির্ম্মূলিত হয় এবং যে সকল
বৃ্ত্তান্ত লইয়া বেদব্যাস কবিত্বশক্তির পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন সেই সমুদয়ের
মূলস্বরূপ করুণরসপূর্ণ দ্যূতক্রীড়া এই পর্ব্বের অন্তর্গত। এই পর্ব্বে মহর্ষি
ব্যাসদেব রৌদ্র করুণ প্রভূতি নানাবিধ রসমাধুর্য্যের সহিত অপূর্ব্ব কবিত্বশক্তি
প্রদর্শন করিয়াছেন।
সভাপর্ব্ব অন্যান্য পর্ব্ব অপেক্ষা অনেক ক্ষুদ্র বটে, কিন্তু
ইহার অনুবাদে অত্যন্ত পরিশ্রম স্বীকার করিতে হইয়াছে, কারণ কূটার্থপূর্ণ শ্লোক অধিক
পরিমাণে এই পর্ব্বে সন্নিবেষ্টিত আছে। যাঁহারা বিশেষ মনোযোগ সহকারে সভাপর্ব্বের
আদ্যোপান্ত পাঠ করিবেন, তাঁহারা নীতিশাস্ত্র ও ধর্ম্মশাস্ত্র অধ্যায়নের ফলপ্রাপ্ত
হইবেন এবং মনুষ্যের অবস্থা যে কখনই অপরিবর্ত্তনীয় নহে, যুধিষ্ঠিরের অতুল সাম্রাজ্য
ও দ্যুতোপলক্ষে নির্ব্বাসনব্যাপার অবলোকন করিলে তাহা সম্পূর্ণরূপে বুঝিতে পারিবেন।
কলিকাতা, ১৭৮২ শকাব্দ
শ্রীকালীপ্রসন্ন সিংহ