অগ্রন্থিত কবিতা


                আবাহন
কোন সে অচিন পরীর মুলুক ঘুরে
                  নেয়ে হুরীর নূরে,
চুরি করে কিন্নরীদের সুধা-ক্ষরা সুরে
                   
এলি, শিশু ওরে,
ধার মোদের বিজন কুটির জ্যোতিতে তোর ভরে!
                ওরে অমল, ওরে কচি
               
ওরে অমল, ওরে শুচি,
                        কি দিয়ে আজ বরণ করি তোরে
সাত সমুদ্দুর তের নদীর পারে,
রূপকথার সে কোন্‌ 'কোকাফের ধারে
                    ছিলি শিশু ওরে?

অশ্রুতে তোর মুক্তো ঝরে, হাসলে মানিক ক্ষরে।
                ওরে যাদু, ওরে খোকন,
                ওরে মোদের বুক-চেরা ধন,
                কি দিয়ে আজ বরণ করি তোরে!
                পাড়ার সকল ঘরে
সকাল-সাঁঝে ছেলেরা সব দাপাদাপি করে,
অকাজের সেই ঘরটি তাদের তাতেই থাকে ভরে।
                আমাদেরি কুঁড়েয়
                সারাটা দিন জুড়েই
মুষ্‌ড়ে-পড়া নিঝুম নিরানন্দ পড়ত ঝরে।
                ওগো দিগম্বর অবধৃত,
                ওগো ছোট্ট সর্গীয় দূত!
                কোন জননীর আসন কোথায়?-
                টলেছিল মোদের ব্যথায়?-
               
তাইতে সেদিন ভোরে
                তোর সে ছোট'র রাজ্যি হতে ধরে,
থুয়ে গেলেন মোদের বুকে তোরে এমন করে?
"
সকল ব্যথা রঙিন" হলো পেয়ে যাদু তোরে!
                আজ যে বুকে কোথাও ফাঁকা নাই,
তোর সে মুখরতায় ভরে' আছে সকল ঠাই!
                ওরে ছোট, ওরে কাঁচা,
                ওরে মানিক সাগর-সেঁচা
                       
কি দিয়ে আজ বরণ করি তোরে!
মোদের বুকের কামনায় কি সুপ্ত ছিলি ওরে,
শিশু হয়ে এলি সকল ইচ্ছা মূর্তি ধরে!
                কুটির হলো রাজসিংহাসন
                সোনা হলো সকল ভবন
তোর সে মায়ার কাঠির ছোঁয়ায় কি রে?
                ওরে স্নেহ ওরে মায়া,
                ওরে শুভ, ওরে পদ্মা!
আমার 'আমি' হারিয়ে ফেলে পেয়েছি আজ ফিরে
বহুদিনের হারিয়ে-যাওয়া কচি 'আমি'টিরে।

ওগাত পত্রিকার মাঘ ১৩২৮ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই কবিতাটি কবির জীবদ্দশায় কোনো গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয় নি। প্রকাশিত হয় নি।