অগ্রন্থিত কবিতা
বকুল
আকুল বকুল! মুকুল টুটে ফুটলি কেন তুই?
তার চেয়ে যে অনেক বড়- অনেক ভালো জুঁই!
খুলল কে তোর পাপড়ি রে,
কুঁড়ি 'নাজুক' খাপ চিরে?
কে গেল তোর বুকের বসন এমনি করে ছুঁই?
হায় ছড়িয়ে দিলি ছোট্ট বুকের সকল রঙটুকুই!
বাঁশের বাঁশি কোন্ জনার
করল তোরে উন্মানা?
মাঠের গানের সকল সুরে ঝর্লে পরাগ-লুই।
ও ফুল পল্লিমাঠের কোন্ বেদনের রেশ যাবি তুই থুই?
জল-ভরা এই বর্ষাতে
হায় কারে সে তর্সাতে
পল্লি হতে আনবি বয়ে অশ্রু গোটা দুই,
আর, চোখের জলে ভিজিয়ে দিবি রাজবাগানের ভুঁই।
পরীস্তানের খোশ্বাগে
খোশ্বু লাখো গুল জাগে,-
কোন্ সাহসে ফুটলি সেথা ছোট বকুল তুই?
ওরে স্থান পাবে কি জলসাতে তোর একজেরা খোশ্বুই?
নাই নিল তোর খোশবুরে
হুর-পরীরা বুক ভরে,
ভোরে ঝরে দিস্ রে ঝেঁপে রাজকেয়ারির ভুই,
আর, যাবে পথিক বুক বেয়ে তোর পরশ নিবি তুই।
ও ভাই ছোটর এতে সার্থকতা,- এই বেদন্টুকুই।'বকুল' পত্রিকা [আষাঢ় ১৩২৭ (জুন ১৯২০) সংখ্যা]। শিরোনাম: 'বকুল'। এই কবিতাটি নজরুলের জীবদ্দশায় কোনো কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয় নি। বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত নজরুল রচনাবলী'র (জন্মশতবর্ষ সংস্করণ) নবম খণ্ডে কবিতাটি 'অগ্রন্থিত কবিতা' অংশে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।