কিশোরের স্বপ্ন

মা! আমারে সাজিয়ে দেগো বাইরে যাওয়ার বেশে,
রইব না আর আঁচল-ঢাকা গণ্ডি আঁকা দেশে॥

মা! এখানে নাই যে জীবন প্রাণের আবির-খেলা,
আপনাকে যে আপনি মোরা হানছি অবহেলা।

                স্কুলে যাও, চাকরি করো-
                আদর্শ নাই ইহার বড়,
সকালবেলা জেগে ওঠা, ঘুমিয়ে সন্ধ্যাবেলা,
দেশ কোথা, মা! এ ঘে শুধু শ্মশান-শবের মেলা॥

জানি না মা, ভালো কিংবা মন্দ ওরা করে,
মরার দেশে তাথৈ নেচে দেশ তাহাদের হরে।
                প্রাণের আগুন লাগিয়ে বেড়ায়
                প্রাণহীনদের পাড়ায় পাড়ায়
সেই আগুনের শিখা মা গো এসেছে মোর ঘরে,
আমি তাদের দলের হব, কাঁদি তাদের তরো॥

আমি যাব মৃতের দেশে আঘাত-দেওয়া হয়ে,
জয়ের আশা জাগবে তাদের হয়তো পরাজয়ে।
                যাব চেকোশ্লোভাকিয়ায়
                চীন জাপান ও দূর রাশিয়ায়;
যৌবনেরই অগ্নিমন্ত্রে আসব দীক্ষা লয়ে;
লাগিয়ে আগুন ভাগিয়ে দেবো ভাগিয়ে দেবো ভয়ে॥

মা গো, তুমি ভয় করো না, আমি মরিই যদি,
স্রোতের মুখে আপনি ভেসে আনব বয়ে নদী।
                মা গো আমি হারিয়ে গেলে
                জাগবে দেশে যে সব ছেলে,
তাদের মাঝে পুত্রে তোমার দেখবে নিরবধি
কোটি ছেলে পাবে মা গো আমি হারাই যদি

ম্যালেরিয়ায় ভূগব না ম- মরব না তোর কোলে।
ডাকতে তোরে দেবো না মা, চাকরের মা বলে।
                রাজরানি মা করব তোরে
                ত্রিভুবনের রত্ব হরে,
তারি তরে পাড়ি দেবো সাত সাগরের জলে,
লজ্ঘি মরু গিরি দরী যাব আমি চলো॥

আমার দেশের সকল মাতা কাদবে আমার তরে
ভাববে তাদের আপন ছেলে গেছে দেশান্তরে।
                আমার দেশের প্রসাদ পেয়ে
                দেশ-বিদেশের ছেলে-মেয়ে
ধন্য হতো আগে, তেমনি আজও হবে;
তোমার পুত্র না যদি রয় (তাহার) আশার স্বপ্ন রবে॥