অগ্রন্থিত কবিতা
কবির চাওয়া
সাধনা পত্রিকার ভাদ্র ১৩২৭ (আগষ্ট-সেপ্টেম্বর ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ) সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই কবিতাটি কবির জীবদ্দশায় কোনো গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয় নি।
এমন করে কবির চোখের গভীর চাওয়া দিয়া
তোমায় এমন সুর করি কেউ দেখেনি, প্রিয়া !
পুজারী সে অনেক তোমার, জানি,
তব চরণ-তলে অর্থ দানে আনি;
তোমায় ভালো তারা কেউ বাসেনি, রানি,
এমন আমার মতন হিয়ায় চাপি হিয়া।
বলতে পারো সখি
এমন করে কবির বাণীর গভীর সোহাগ দিয়া
তোমায় এমন মিষ্টি করে কেউ ডেকেছে প্রিয়া!
ওরা যতই কেন সুন্দর হোক সই,
তোমায় যতই কেন বাসুক তারা ভালো,-
ওদের আমার মতন প্রেম-পিয়াসী কবির আখি কই?
তোমার রূপ যে ওরা দেখবে ওদের কই সে প্রাণের আলো?
এমন. জেনেও তোমায় নেইকো পাবার আশা
ওদের বাসে কি কেউ সত্যি ভালোবাসা?
ওগো তারা যে চায় সুধা তোমার, আমি সর্বনাশা
চাইনে সুধা, মরণ মাগি গরলটুকুই পিয়া !
সেকি পড়বে সেদিন মনে
এমন করে কবির বুকের নিবিড় পরশ দিয়া
তোমায় এমন গভীর করে কেউ চুমেনি, প্রিয়া !
ওরা যতই বলুক 'ভালোবাসি', কেউ বাসে না ভালো;
ওদের শুধু চোখের নেশা, দেহের ক্ষুধা, জানি !
যদি একটুখানি প্রাণের তোমার দীপশিখাটি জ্বালো,
রানি দেখবে ওদের বুকের তলায় প্রেম সে কতখানি !
ওরা ভালো কি হায়, বাস্তে পারে কভু?
হে মোর প্রেমের গরবিনী, বাঁধন-হারার প্রভূ !
লো বালিকা বিজয়িনী! গর্ব তোমার শুধু
এই পলাতক পথিক কবির রথটি কাড়ি নিয়া
ঐ মিষ্টি তোমার চঞ্চলতা দুষ্টুমিটি দিয়া।
সত্য করে কও দেখি মোর প্রিয়তমা,
কোন চির-জয়ী এমন করে রিক্ত করি হিয়া
শুধু তোমার দ্বারেই দাড়িয়ে হাতে ভিক্ষা-পাত্র নিয়া?
এমন করে কবির চোখের গভীর চাওয়া দিয়া
তোমায় এমন সুন্দর করি কেউ দেখেনি প্রিয়া!