নির্ঝর
দীওয়ান-ই-হাফিজ
গজল-১
জাগো সাকি হামদরদি, জাম-বাটিতে দাও শরাব,
চুলোয় যাক এই দুঃখ-ব্যথা, ধুলোয় ঢাকুক সব অভাব! -১
ভর-পিয়ালা হস্তে দে দোস্ত, মস্ত হয়ে বুঁদ সেই নেশায়
দিই ফেলে এই শির হতে ওই সুনীল আকাশ-গাঁঠরিটায়!-২
ভয় কী সখি? করবে নিন্দা শাস্ত্র-শকুন বন্ধুরা?
বদনামে মোর পরোয়া থোড়াই! চালাও পানসি, দাও সুরা।-৩
নেশার দারু জরুরি ভাই, খোদ-দেমাকির নাশতে জাত,
ঢালো শরাব, আত্ম ভোলাও, চেতন আমার হোক নিপাত!-৫
দহন-দারুণ দিল্ ছেপে মোর উঠছে যে শ্বাস বহ্নি-শিস,
কতই কাঁচা শুষ্ক হৃদয় পুড়ছে তাতে অহর্নিশ!-৫
সব অজানা জানার মাঝে প্রেম-দেওয়ানা ফিরনু ভাই,
দুনিয়া জুড়ে দেখনু ঢুঁড়ে দিল্-দরদি বন্ধু নাই।-৬
তারই তরে জান কাঁদে মোর, সেই জানি মোর দিল্-আরাম,
করল যে মোর এই জীবনের সকল সোয়াদ-সুখ হারাম!-৭
গুলবাগে আর দেবদারুকে দেখতে কারুর রয় না সাধ,
দেখলে প্রিয়ার সরল ছাঁদ আর চাঁদনি-সফেদ বদন-চাঁদ!-৮
মাটির ভাঁটির রস ছিল যা, সব পিয়েছিস, কীসের দুখ?
খাও পিয়ো আর স্ফূর্তি চালাও, চালাও -মউজে দিন কাটুক। -৯
দিবানিশি পাস যে ব্যথা, ওরে হাফিজ, দু-দিন থাম!
আসবে প্রিয়া দিল্-জানিয়া, পূর্ণ হবে মনস্কাম!-১০
মোসলেম ভারত
পত্রিকা [অগ্রহায়ণ ১৩২৭ (নভেম্বর-ডিসেম্বর ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ)]
পরে
নির্ঝর
কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল।