নির্ঝর
গজল ৪
হে মোর সুন্দর! চাঁদের চাঁদমুখ
তোমার রৌশন রূপ মেখেই,
রূপের জৌলুস তোমার টোলদার
চিবুক-গণ্ডের কূপ থেকেই।
ওষ্ঠে প্রাণ! হায়, দেখতে চাও তায়
গোল-বদন ঐ ঘোমটা-হীন,
জানাও ফরমান জ্বলবে আর না
নিববে জান্টার মোমটা ক্ষীণ!
তোমার কেশপাশ আমার দিল্ বাস,-
জমবে জোট সেই এক জাগায়,-
আরজ এই ক্ষীণ মিটবে কোন দিন?
আর না বিচ্ছেদ,- দেক লাগায়!
নার্গিস-অক্ষি! হরলে সব সুখ
তোমার নয়নার অত্যাচার
মস্ত্ চাউনির হস্তে তাই কই
যাক সতীত্বও হত্যা ছার!
খুলবে এইবার নয়ন-পাত তার
বদ-নসিব মোর নিঁদ-আতুর,
আজ যে প্যারির উজ্লি স্মিরতি-য়
আনলে নির্ঝর ক্ষীণ আঁসুর!
পাঠিয়ো ভোর বায় ফুল্ল ফুল তুল
তোমার গণ্ডের ফুল-তোড়া!
যদিই পাই তায় তোমার বোঁস্তার
খোশবুদা খাক ধুল থোড়া!
দে খবর দিল্- দার পিয়ায় সই
বক্ষে আজ মোর জোর ব্যথা,
মাথার দিব্যি রইল সই লো,
জরুর কস তায় মোর কথা!
জামশেদের দর্- বারের সাকি!
বাড়ুক পরমাই মদ্য-পিও!
তোমার হস্তে এ- মদের ভাঁড় মোর
পুরল নাই ভাই যদ্যপিও!
'য়্যাজদ্' মুল্কের বাসিন্দায় সব
বলবে, বন্ধু ভোর-সমীর!
(ভরুক ময়দান লুটাক পায়-পায়
অকৃতজ্ঞের খণ্ড শির!
'বহুত দূর পথ বহুত বিচ্ছেদ
স্মৃতির ভুল হায় হয়নি তায়,
তাদের বাদশার গোলাম আজকেও
তাদের খোশনাম কয় সদাই।'
চলতে মোর পথ সামলো প্যারি,
আঁচর, খাক আর খুন হতে;
তোমার এশ্কের নিরাশ খুন-দিল্
লোহুয় পথ এ পূর্ণ যে!
এয়্ শাহানশাহ! ওয়াস্তে আল্লার
শক্তি দাও এই, অহর্নিশ্-
আশমানের ন্যায় চুম্বি অমনি
তোমার খাস রং-মহল শীষ!
আশিস চায় এই 'হাফিজ' হরদম,
কও 'আমিন' সব খুব মনে-
'লাল শিরীন ঠোঁট পিয়ার রোজ পাই,
ভরাই লাখ লাখ চুম্বনে!'
মোসলেম ভারত পত্রিকার পৌষ ১৩২৭ (ডিসেম্বর ১৯২০-জানুয়ার ১৯২১) সংখ্যায় প্রকাশিত গজলটি প্রকাশিত হয়েছিল।
ছন্দসূত্র :
এয়্ ফরোগে মাহে হোসন আজ রূয়ে রোখ্শা নে শুমা
আবরূয়ে খূবি আজ চা- হো জনখদা নে শুমা।